করুণাময় সিংহ, মালদা: প্রায় কয়েক কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠল পঞ্চায়েত প্রধানের (Panchayet) বিরুদ্ধে। ঘটনাটি ঘটেছে মালদার (Malda) চাঁচল (Chanchol) ২ ব্লকের চন্দ্রপাড়ায়। অভিযোগ, ১০০ দিনের প্রকল্পে কাজ না করেই প্রায় কোটি টাকা তছরূপ করেছেন তিনি। আত্মসাতের অভিযোগে সরব হয়েছেন পঞ্চায়েতের উপপ্রধানসহ অন্যান্য সদস্যরা। বিডিওর কাছে ইতিমধ্যেই লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন তাঁরা। যদিও নিজের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন বলে দাবি করেছেন পঞ্চায়েত প্রধান চম্পা সরকার। ঘটনার তদন্ত শুরু করেছেন বিডিও।


বিডিওর কাছে দায়ের করা অভিযোগপত্রে পঞ্চায়েতের সদস্যরা জানিয়েছেন, পঞ্চায়েতের তৃণমূল (TMC) কংগ্রেসের প্রধান চম্পা সরকার দীর্ঘদিন ধরে এলাকা উন্নয়নের কোনও কাজ করেন না। এর পর ১০০ দিনের কাজ প্রকল্পের বেশ কিছু রাস্তা ও কলাচাষের কোনও কাজ না করেই প্রায় এক কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছেন তিনি। অভিযোগকারীরা আরও জানিয়েছেন, পঞ্চায়েতের অন্যান্য সদস্যদের কিছু না জানিয়েই সমস্ত কাজ করে ফেলেন প্রধান। অবিলম্বে তদন্ত করে ওই প্রধানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার আর্জি জানানো হয়েছে অভিযোগপত্রে।


ঘটনায় অন্যতম অভিযোগকারী পঞ্চায়েতের তৃণমূল (TMC) কংগ্রেসের উপপ্রধান কমলিকা থোকদার বলেন, 'চম্পা সরকার একাধিক দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত। কলা বাগানের স্কিমে তিনি প্রায় ৮৭ লক্ষ টাকা তছরুপ করেছেন। কোথাও একটিও কলাগাছ লাগানো হয়নি। উপভোক্তাদের অনেকে জানেনই না, এই প্রকল্পে তাঁদের নাম রয়েছে। 


শুধু তাই নয়, চারটি রাস্তার কাজ না করেই বিল তুলে নিয়েছেন প্রধান। এসব নিয়ে তাঁরা জেলা শাসক, জেলা পঞ্চায়েত আধিকারিক, মহকুমা শাসক ও বিডিওকে লিখিত অভিযোগ জানিয়েছিলেন। তবে তাতেও কোনও কাজ হয়নি বলে অভিযোগ।


অভিযোগ অস্বীকার করে পঞ্চায়েত প্রধান চম্পা সরকার জানিয়েছেন, আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ নিয়ে আনা হয়েছে। আমি কোনও টাকা আত্মসাৎ করিনি। প্রশাসনিক তদন্তে সত্য ঘটনা বেরিয়ে আসবে।


এ প্রসঙ্গে চাঁচল ২ নম্বর ব্লকের বিডিও দিব্যজ্যোতি দাস জানিয়েছেন, তাঁরা এই অভিযোগ পেয়েছেন। অভিযোগ খতিয়ে দেখার জন্য একটি তদন্ত কমিটিও তৈরি করা হয়েছে। যেহেতু অভিযোগপত্রে একাধিক প্রকল্পের কথা বলা হয়েছে, ফলে তদন্তে খানিকটা সময় লাগবে।


তবে এই নিয়ে শাসক দলকে কটাক্ষ করেছে বিজেপি। বিজেপি যুব মোর্চার সহ সভাপতি সুমিত সরকারের কথায়, এতদিন বিরোধীরা যে অভিযোগ করছিল এখন শাসক দলের নেতারাই তাঁদের নেতাদের বিরুদ্ধে সেই অভিযোগ করছেন। দলটা আপাদমস্তক দুর্নীতিতে জড়িয়ে পড়েছে। পঞ্চায়েত নির্বাচনে মানুষ জবাব দেবে।


এ বিষয়ে জেলা তৃণমূলের মুখপাত্র শুভময় বসু বলেন, দল কোনও রকম দুর্নীতিকে প্রশ্রয় দেয় না। কারও বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হলে প্রশাসন যথাযথ ব্যবস্থা নেবে। দল পাশে দাঁড়াবে না।