করুণাময় সিংহ, মালদা: চোর সন্দেহে মানসিক ভারসাম্যহীন যুবককে বিদ্যুতের খুঁটিতে বেঁধে, বাঁশ-লাঠি দিয়ে মারধরের ঘটনা ঘটল। মারধরের ভিডিও ভাইরাল হতেই শুরু হয়েছে বিতর্ক।শুক্রবার এই ঘটনা ঘটেছে পুরাতন মালদার মঙ্গলবাড়ি এলাকায়। পুলিশ সূত্রে খবর, মোটরবাইক চুরির চেষ্টার অভিযোগে ওই যুবককে বেধড়ক মারধর করা হয়। খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে তাঁকে উদ্ধার করে স্থানীয় স্বাস্থ্য কেন্দ্রে নিয়ে যায়। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন মালদার পুলিশ সুপার। যদিও ভাইরাল ভিডিও-র সত্যতা যাচাই করেনি এবিপি আনন্দ।
কিছুদিন আগে পশ্চিম মেদিনীপুরে এমন একটি ঘটনা প্রকাশ্যে আসে। এক-দু'বছর নয় টানা ১০ বছর ধরে লোহার শিকল দিয়ে বাড়ির উঠোনের খুঁটিতে বাঁধা মানসিক ভারসাম্যহীন ছেলে। কিন্তু পেটের টান বড় বালাই। অগত্যা লোকের দোরে দোরে গিয়ে ভিক্ষে করে ছেলের চিকিৎসার চেষ্টা করছেন মা।
এমনই করুণ ছবি ধরা পড়েছিল পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার চন্দ্রকোনা ২ ব্লকের কুঁয়াপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের কুঁয়াপুর গ্রামে। ওই গ্রামের বাসিন্দা বছর পয়তাল্লিশের ছবি পূজারীর জীবন যেমন দুঃখের ছবি বহন করছে। একচিলতে ভাঙাচোরা মাটির বাড়িতে বসবাস। একমাত্র ছেলে বছর সাতাশের প্রশান্ত পূজারীকে নিয়ে জীবন কাটে ছবি দেবীর।
জমি-জায়গা, চাষাবাদ কিছুই নেই। একমাত্র উপার্জনের পথ বাড়ি বাড়ি গিয়ে ভিক্ষে করে দিনযাপন। ছবি দেবীর স্বামী মারা গিয়েছেন অনেক আগেই। বর্তমানে মা ও ছেলে মাটির বাড়িতে কোনওক্রমে দিন কাটান। ছেলে প্রশান্ত ছোট থেকেই মানসিক সমস্যায় জর্জরিত। বিগত ১০ বছর ধরে সঠিক চিকিৎসার অভাবে এখন তিনি সম্পূর্ণ মানসিক ভারসাম্যহীন। একদিকে ছেলের এমন অবস্থা তার উপর পেট চালানোর কোনও পোক্ত সংস্থান নেই। তাই ১০ বছর ধরে বাড়ির উঠানে ছেলে প্রশান্তকে লোহার শিকলে দিয়ে বেঁধে তালাচাবি দিয়ে ভিক্ষে করতে চলে যান মা ছবি পূজারী।
সকালে ছেলের খাওয়াদাওয়া সেরে ছেলেকে এভাবে শিকল দিয়ে বেঁধে বাড়ি বাড়ি ভিক্ষে করতে বেরিয়ে পড়ে মা। আর বাড়ির উঠানে দিনভর শিকল বাঁধা অবস্থায় থাকে ছেলে প্রশান্ত। শৌচকর্ম থেকে যাবতীয় উঠানেই বাঁধা অবস্থায়। সেখানেই পড়ে থাকে ছেলে প্রশান্ত। ভিক্ষে সেরে বাড়ি ফিরে তারপর ছেলের দিকে নজর দেওয়ার সময় পান অসহায় মা ছবি পূজারী। ছবি দেবী থেকে তাঁর প্রতিবেশীদের কথায়,মানসিক ভারসাম্যহীন হওয়ায় প্রশান্তর ধারেকাছে কেউ যায়না। আর তাঁদের সরকারি সাহায্য বলতে রেশনটুকু। ভগ্নপ্রায় বাড়িতে এভাবেই দিন কাটছে মা ছেলের।