অভিজিৎ চৌধুরী, মালদা: রাস্তাঘাট, নিকাশী ব্যবস্থা-সহ বিভিন্ন দিকে কাজ না হওয়ার অভিযোগে বিজেপির (BJP) পঞ্চায়েত সদস্যের (Panchayat Member) দিকে আঙুল তুলল তৃণমূল (TMC)। বিজেপি সাংসদকে অপদার্থ বলে কটাক্ষ করেন তৃণমূল অঞ্চল সভাপতি।  উল্টো দিকে, বিজেপির দাবি, তৃণমূল পরিচালিত গ্রাম পঞ্চায়েত বিজেপির সদস্যদের কাজ করতে দিচ্ছে না। মালদা (Malda) জেলার হরিশ্চন্দ্রপুর (Harishchandrapur) ১ নম্বর ব্লকের অন্তর্গত হরিশ্চন্দ্রপুর সদর এলাকায় শিবমন্দির পাড়া এলাকার ঘটনা। 


কী হয়েছে?
মালদা জেলার হরিশ্চন্দ্রপুর ১ নম্বর ব্লকের অন্তর্গত হরিশ্চন্দ্রপুর সদর এলাকায় শিবমন্দির পাড়াjর বুথে বুথ কমিটি গঠনের জন্য এলাকায় যায় তৃণমূল নেতৃত্ব। সাধারণ মানুষের সঙ্গে বৈঠক করে গঠন হয় বুথ কমিটি। হরিশ্চন্দ্রপুর গ্রাম পঞ্চায়েত শাসকদলের দখলে থাকলেও শিব মন্দির পাড়া বুথে বিজেপির পঞ্চায়েত সদস্য রয়েছে। সেখানে গিয়ে এলাকাবাসীর বিক্ষোভের মুখে পড়তে হয় তৃণমূল নেতাদের। স্থানীয়রা জানান, তাঁদের বুথে কোনও রাস্তার কাজ হয়নি। নিকাশী ব্যবস্থা নিয়েও সমস্যা রয়েছে। হরিশ্চন্দ্রপুর তৃণমূলের অঞ্চল সভাপতি সঞ্জীব গুপ্তা বলেন, 'বিজেপির পঞ্চায়েত সদস্য এই বুথে কাজ করেননি।' তিনি তৃণমূলকে জেতানোর আবেদন করেন। তিনি দাবি করেন তৃণমূল জিতলে এই বুথে সব সমস্যার সমাধান হবে। সঙ্গে বার্তা দেন, এই তৃণমূল অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে তৈরি নতুন তৃণমূল। এখানে কোনও রকম দুর্নীতি বা গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব বরদাস্ত হবে না। অভিযোগ, উত্তর মালদার বিজেপি সাংসদ খগেন মুর্মুকে অপদার্থ বলে কটাক্ষ করেন তিনি। অভিযোগ, খগেন মুর্মু এলাকার জন্য কোনও কাজ করেননি। যদিও সমগ্র ঘটনা নিয়ে পাল্টা তৃণমূলকে দায়ী করেছে বিজেপি। বিজেপির দাবি পঞ্চায়েত তৃণমূলের দখলে রয়েছে। বিজেপির সদস্যদের সেখানে ইচ্ছাকৃত ভাবে কাজ করতে দেওয়া হচ্ছে না। তাই মানুষ বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন। আর একজন জন-প্রতিনিধিকে অপদার্থ বলা তৃণমূলের সংস্কৃতি। সমগ্র ঘটনা নিয়ে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক চাপানোতোর।


কী বলছেন স্থানীয়রা?
এলাকার এক বাসিন্দা,নয়নি সাহা বলেন, 'আমাদের এখানে রাস্তার অবস্থা বেহাল। নর্দমার কাজ পুরোপুরি হয়নি। বৃষ্টি হলে জল জমে যাচ্ছে। আমরা তাই বিক্ষোভ দেখালাম।' শ্যামচাঁদ সাউ নামে আর এক বাসিন্দারও বক্তব্য,'রাস্তার অবস্থা খুব খারাপ। কোনও কাজ হয়নি। এলাকাবাসীকে সমস্যার মুখে পড়তে হচ্ছে।' হরিশ্চন্দ্রপুর তৃণমূল কংগ্রেসের অঞ্চল সভাপতি সঞ্জীব গুপ্তা বলেন, 'এই বুথে আমরা একবারে জয়লাভ করিনি। বিজেপির পঞ্চায়েত সদস্য কোন কাজ করে না। একদিনও পঞ্চায়েতে যাই না। তাই এত সমস্যা। এখানে বিজেপির সাংসদ রয়েছেন। তিনি বিভাজনের রাজনীতি করে ভোট নিয়ে গেছেন। কিন্তু এলাকার জন্য কোন কাজ করেননি।' পাল্টা বিজেপির জেলা কমিটির সদস্য কিষান কেডিয়া বলেন, 'হরিশ্চন্দ্রপুর গ্রাম পঞ্চায়েত তৃণমূল কংগ্রেসের দখলে। এরা বিজেপির সদস্যদের কাজ করতে দেয় না। মানুষ সেই জন্যই বিক্ষোভ দেখিয়েছে। সাংসদ অনেক কাজ করেছেন। যে দলের সুপ্রিমো প্রধানমন্ত্রীকে কু কথা বলে, তাদের এই ধরনের সংস্কৃতিই হবে।' প্রসঙ্গত ২০১৮ সালের পঞ্চায়েত ভোট থেকে হরিশ্চন্দ্রপুর এলাকায় তৃণমূলের উত্থান হয়। গত বিধানসভা ভোটে বিপুল ভোটে জয়লাভ করে তৃণমূল। কিন্তু তারপরেও হরিশ্চন্দ্রপুর সদর এলাকায় তারা খুব একটা ভালো ফল করতে পারেনি। তাই আসন্ন পঞ্চায়েত ভোটে হরিশ্চন্দ্রপুর সদর এলাকা দখল করতে মরিয়া শাসকদল। বারবার মানুষের কাছে গিয়ে আবেদন জানাচ্ছে তারা। পঞ্চায়েত ভোট যত এগিয়ে আসছে সদর এলাকায় রাজনৈতিক উত্তাপ তত বাড়ছে।


আরও পড়ুন:ওষুধ কিনতে আসছিলেন, তৃণমূল কর্মী ও তাঁর বাবাকে লক্ষ্য করে একের পর এক গুলি !