অভিজিৎ চৌধুরী, মালদা: মালদায় বন্যাত্রাণ দুর্নীতি মামলায় বরুই গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান, পঞ্চায়েত সমিতির কর্মাধ্যক্ষ এবং এক তৃণমূল নেতাকে দু’সপ্তাহের মধ্যে আত্মসমর্পণের নির্দেশ দিল সুপ্রিম কোর্ট। কেন্দ্রীয় সরকারের ত্রাণের ৭৬ লক্ষ টাকা তছরুপের অভিযোগ রয়েছে তাঁদের বিরুদ্ধে। সর্বোচ্চ আদালতের নির্দেশ ঘিরে তরজায় জড়িয়েছে তৃণমূল ও বিরোধীরা।


সর্বোচ্চ আদালতে গিয়েও মিলল না স্বস্তি। মালদায় বন্যাত্রাণ দুর্নীতি মামলায় অভিযুক্ত ৩ জনের আগাম জামিনের আর্জি খারিজ করে তাঁদের ২ সপ্তাহের মধ্যে আত্মসমর্পণের নির্দেশ দিল সুপ্রিম কোর্ট। বুধবার দেশের সর্বোচ্চ আদালত নির্দেশ দিয়েছে, মালদার বরুই গ্রাম পঞ্চায়েতের তৃণমূলের প্রধান সোনামণি সাহা হরিশ্চন্দ্রপুর ১ নম্বর পঞ্চায়েত সমিতির কর্মাধ্যক্ষ রোশনারা খাতুন এবং তৃণমূল নেতা আফসার আলিকে ১৪ দিনের মধ্যে হরিশ্চন্দ্রপুর থানায় আত্মসমর্পণ করতে হবে। 


বরুই গ্রামপঞ্চায়েতের কংগ্রেস সদস্য ও বিরোধী দলনেতা আব্দুল মান্নান বলেন, "দুর্গতদের টাকা লুঠের সময় ওদের হুঁশ ছিল না। এখন পালিয়ে বেড়াচ্ছে। আশা করি আদালত সুবিচার করবে। আদালতের ওপরে আমাদের ভরসা রয়েছে।" ২০১৭ সালের বন্যায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয় মালদায়। প্রশাসন সূত্রে খবর, ঘরবাড়ি ভেঙে শুধু বরুই গ্রামঞ্চায়েতেই প্রায় সাড়ে ৭ হাজার মানুষ আশ্রয়হীন হন। 


গৃহহীনদের বাড়ি তৈরি করে দেওয়ার জন্য, কেন্দ্রের তরফে ত্রাণের জন্য অর্থ বরাদ্দ করা হয়। তৃণমূল পরিচালিত বরুই গ্রামপঞ্চায়েতের বিরুদ্ধে কেন্দ্রের পাঠানো বন্যাত্রাণের প্রায় ৭৬ লক্ষ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ ওঠে। দুর্গতদের নামের পাশে একই ব্যক্তির ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট দিয়ে বিপুল অর্থ তছরুপের অভিযোগ ওঠে। বিডিও-র কাছে টাকা নয়ছয়ের লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন গ্রামবাসীদের একাংশ। মামলা গড়ায় আদালত পর্যন্ত। 


কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশে শুরু হয় প্রশাসনিক তদন্ত। বিডিও প্রধানের বিরুদ্ধে FIR দায়েরের পর, আত্মসমর্পণের নির্দেশ দিয়ে হুলিয়া জারি করে পুলিশ। তারপরেও দীর্ঘদিন ধরে গা ঢাকা দিয়ে থাকার অভিযোগ উঠেছে পঞ্চায়েত প্রধান, কর্মাধ্যক্ষ ও তৃণমূল নেতার বিরুদ্ধে। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ সামনে আসতেই ফের শুরু হয়েছে তরজা।