অভিজিৎ চৌধুরী, মালদা: দিদির দূত কর্মসূচিতে (didir doot programme) গিয়ে ফের এলাকাবাসীর বিক্ষোভের মুখে বিধায়ক (MLA Faces Agitation)। আবাস যোজনায় ব্যাপক দুর্নীতি (PM Awas Yojana Corruption) এবং স্বজন-পোষণের অভিযোগে বিক্ষোভ। এলাকাবাসীর সঙ্গে ধাক্কাধাক্কি- হাতাহাতিতে জড়িয়ে পড়ার অভিযোগ তৃণমূল কর্মীদের বিরুদ্ধে। তেতে ওঠে পরিস্থিতি।
কী ঘটেছিল?
দিদির দূত কর্মসূচিতে গিয়ে এদিন এলাকাবাসীর বিক্ষোভের মুখে পড়েন চাঁচলের তৃণমূল বিধায়ক নীহাররঞ্জন ঘোষ। প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনায় ব্যাপক দুর্নীতি এবং স্বজন-পোষণের অভিযোগ তুলে বিধায়কের সামনেই ক্ষোভে ফেটে পড়েন এলাকাবাসীরা। ঘরের নাম করে টাকা তোলার অভিযোগ ওঠে। পরিস্থিতি এমনই তেতে ওঠে যে এলাকাবাসীর সঙ্গে ধাক্কাধাক্কি এবং হাতাহাতিতে জড়িয়ে যান তৃণমূল কর্মীরা। পরবর্তীতে নেতৃত্বের হস্তক্ষেপে কোনও রকমে নিয়ন্ত্রণে আসে পরিস্থিতি। কিন্তু তার পরও ব্যাপক উত্তেজনা ছিল এলাকায়। রবিবার চাঁচল বিধানসভার অন্তর্গত কুশিদা অঞ্চলে দিদির দূত কর্মসূচিতে যান চাঁচল বিধানসভার বিধায়ক নীহারঞ্জন ঘোষ। সঙ্গে ছিলেন হরিশ্চন্দ্রপুর ১(বি) ব্লক তৃণমূল সভাপতি মানিক দাস, যুব তৃণমূলের সভাপতি শেখর সাহা, কুশিদা অঞ্চল তৃণমূল সভাপতি মোঃ নুর আজম-সহ অন্যান্য নেতৃত্ব। গড়রা এলাকায় বিধায়ক যেতেই বিক্ষোভ শুরু করেন স্থানীয়রা। তাঁদের অভিযোগ, প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা প্রকল্পে ব্যাপক দুর্নীতি এবং স্বজন-পোষণ হয়েছে। কাটমানির বিনিময়ে দেওয়া হয়েছে ঘর। এমনকি অনেকে কাটমানি দিয়েও ঘর পাননি। কিন্তু যাঁদের পাকা বাড়ি রয়েছে, তাঁরা বাড়ি পেয়ে গিয়েছেন। এতেই শেষ নয়। তালিকায় অনেকের নাম আসার পরেও নাম বাদ যাওয়ার অভিযোগ রয়েছে। স্থানীয়দের একাংশের বক্তব্য, জুতো সেলাই করে কোনও রকমে তাঁদের সংসার চলে। ভগ্নপ্রায় বাড়ি। তার পরও কেউ তাঁদের দিকে দেখছেন না। বিশেষত হরিশ্চন্দ্রপুর ১ নম্বর ব্লক পঞ্চায়েত সমিতির বিদ্যুৎ কর্মাধক্ষ্যা শোভা দাসের স্বামী তথা তৃণমূল নেতা সুধীর দাসের বিরুদ্ধে ঘর দেওয়ার নাম করে প্রচুর টাকা তোলার চাঞ্চল্যকর অভিযোগ আনেন এলাকাবাসী। বিক্ষোভের ফলে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে পরিস্থিতি। বিক্ষুব্ধ এলাকাবাসীর সঙ্গে ধাক্কাধাক্কি এমনকি হাতাহাতিতে জড়িয়ে পড়েন তৃণমূল কর্মীরা। স্থানীয় নেতৃত্বরা কোনও রকমে পরিস্থিতির সামাল দেন।
কী বললেন বিধায়ক?
যদিও নীহাররঞ্জন ঘোষ বিক্ষোভের ঘটনাকে তেমন গুরুত্ব দিতে নারাজ। তাঁর পাল্টা অভিযোগ, কেন্দ্র সরকার টাকা দিচ্ছে না বলে মানুষের মধ্যে ভুল বোঝাবুঝির সৃষ্টি হচ্ছে। রাজ্য সরকারের প্রকল্প ঠিকঠাক ভাবে ৯০% এর বেশি মানুষ পাচ্ছে। কুশিদা অঞ্চল সভাপতি তথা গ্রাম পঞ্চায়েতের উপ-প্রধান মোহাম্মদ নুর আজম বলেন, 'টাকা নেওয়ার বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে।' এদিকে সমগ্র ঘটনায় তৃণমূলকে তীব্র কটাক্ষ বিজেপির। বিজেপির দাবি বিক্ষোভের সবে শুরু। এরপর তৃণমূল নেতারা গ্রামে ঢুকতে পারবে না। সমগ্র ঘটনা নিয়ে পঞ্চায়েত ভোটের প্রাক্কালে তুঙ্গে রাজনৈতিক তরজা।
আরও পড়ুন:বিধায়ক হলেও কোনও ক্ষমতা নেই, নানুরের তৃণমূল বিধায়কের মন্তব্যে কীসের ইঙ্গিত?