করুণাময় সিংহ, মালদা: মালদায় ট্যাব-প্রতারণা কাণ্ডে পুলিশের জালে আরও একজন। কোচবিহারের দিনহাটা থেকে মনোজিৎ বর্মন নামে একজনকে গ্রেফতার করেছে মালদার সাইবার ক্রাইম থানার পুলিশ। ধৃতের বিরুদ্ধে হবিবপুরের কেন্দপুকুর হাইস্কুলের পড়ুয়াদের ট্যাবের টাকা। তছরুপের অভিযোগ রয়েছে। সরকারি পোর্টাল হ্যাক করে পড়ুয়াদের অ্যাকাউন্ট পরিবর্তনে হাত রয়েছে মনোজিতের, এমনটাই মনে করছে পুলিশ। মালদায় ট্যাব-প্রতারণাকাণ্ডে শুক্রবার বৈষ্ণবনগর থেকে সেরাজুল মিঞা নামে একজনকে গ্রেফতার করা হয়। পুলিশ সূত্রে খবর, ২ হাজার টাকায় অ্যাকাউন্ট ভাড়া দিয়েছিল পেশায় কৃষক সেরাজুল। এর পাশাপাশি, হবিবপুরের কেন্দপুকুর হাইস্কুলের ৯১ জন। পড়ুয়ার ট্যাবের টাকা প্রতারণার তদন্তভার নিয়েছে সিআইডি।
গত কয়েকদিন ধরে ট্যাবের টাকা নিয়ে জালিয়াতির জাল ছড়ানোর খবর রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসছিল। কেলেঙ্কারির নেপথ্যে কি সেই উত্তর দিনাজপুর-যোগ? তরুণের স্বপ্ন চুরি করে উত্তর দিনাজপুরই কি হয়ে উঠছে 'বাংলার মিনি জামতাড়া'? তেমনই অনুমান তদন্তকারীদের। কালিম্পং-এর গরুবাথান থানার পুলিশে সূত্রে খবর, জেলার কিছু পড়ুয়ার ট্য়াবের টাকা অ্য়াকাউন্টে ঢোকার অভিযোগে ইসলামপুর থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে এক যুবককে। ধৃত মহম্মদ আলম মুস্তাকিন ইসলামপুর থানার অলিগঞ্জের বাসিন্দা। কলকাতা পুলিশ সূত্রে দাবি, ট্যাব-জালিয়াতির তদন্তে দেখা যাচ্ছে, বেশিরভাগ টাকা ঢুকেছে উত্তর দিনাজপুরের চোপড়া, ইসলামপুর এবং বিহারের কিষাণগঞ্জের বিভিন্ন অ্যাকাউন্টে। দক্ষিণবঙ্গের এডিজি সুপ্রতিম সরকার বলেন, চোপড়া ও মালদা থেকে প্রচুর এই ধরনের কাজ হচ্ছে। সেটা আমরা দেখেছি। তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। অন্যদিকে, মালদায় ট্যাব জালিয়াতির অভিযোগে মালদা থেকেই গ্রেফতার করা হয়েছে একজনকে।
এদিকে, বাগডোগরা বিমানবন্দরে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছিলেন, ''ট্যাব কেলেঙ্কারির অপরাধীদের এ রাজ্যেই ধরপাকড় করা হয়েছে। এমন কেলেঙ্কারি তো অন্য রাজ্যেও হয়েছে। কিন্তু এ রাজ্যই শুধুমাত্র অভিযুক্তদের গ্রেফতার করতে পেরেছে।''
২ দিনের উত্তরবঙ্গ সফরে গিয়েছিলেন তিনি। সেখান থেকে ফেরার সময় বিমান ধরার আগে ট্যাব কেলেঙ্কারি নিয়ে মুখ খুললেন মুখ্যমন্ত্রী। সকলের প্রশ্ন, যাদের ট্যাবের টাকা গায়েব হয়েছে, যারা ট্যাবের টাকা পাননি, তারা কি আর টাকা পাবে ? মুখ্যমন্ত্রী সেই প্রশ্নেরও উত্তর দিলেন । তিনি বললেন, ''আমরাই একমাত্র এই গ্রুপের ৬ জনকে ধরতে পেরেছি। আমাদের প্রশাসন যথেষ্ট স্ট্রং। রাফ অ্যান্ড টাফ। ৬ জনকে গ্রেফতার করেছি। বাকি যা করার ওরা করবে।'' মুখ্যমন্ত্রী জানান, ''যারা ট্যাবের টাকা পায়নি, তাদের টাকা দিয়ে দেওয়া হয়েছে।''