কলকাতা: লেখালেখি করেন বহুদিন ধরেই। বিশেষ করে কবিতা লেখা যে পছন্দের, তা নিয়ে রাখঢাক নেই তাঁর। বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের লেখা বইয়ের বিক্রিও বেশ ভাল। তাই বই লেখায় উৎসাহ হারান না কখনও। কিন্তু সোশ্যাল মিডিয়ার যুগে তাঁর কবিতা নিয়ে ব্যঙ্গ-বিদ্রূপ কম হয় না। শব্দচয়ন থেকে ছন্দ,তাল, মিমে ছয়লাপ সোশ্যাল মিডিয়া। কখনও তা নিয়ে সাফাই দিতে দেখা যায়নি তাঁকে। কিন্তু কিছুই যে তাঁর নজর এড়ায় না, এ বার তা বুঝিয়ে দিলেন তিনি। সব সমালোচনা, বিদ্রূপের জবাব দিতে গিয়ে বললেন, "ছোটদের জন্য কবিতা লিখতে হলে, ছোট হয়ে যেতে হয়।"
বৃহস্পতিবার নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে দূর নিয়ন্ত্রণ ব্য়বস্থার মাধ্যমে NSATI-এর সত্যেন্দ্রনাথ ঠাকুর সিভিল সার্ভিসেস স্টাডি সেন্টারের অধীনে রাজ্যের ২২টি জেলায়,২৬টি সিভিল সার্ভিসেস কোচিং স্টাডি সেন্টারের শুভ উদ্বোধন করেন। 'স্টুডেন্ট ক্রেডিট কার্ড' প্রকল্পের আওতায় উচ্চশিক্ষা ক্ষেত্রে ছাত্রছাত্রীদের সহজ শর্তে সর্বাধিক ১০ লক্ষ টাকা পর্যন্ত ঋণ দিতে মমতা ছাত্রছাত্রীদের 'স্টুডেন্ট ক্রেডিট কার্ড' বিতরণ করবেন।
সেখানেই পড়াশোনা, কবিতার কথা উঠে আসে তাঁর কথায়। মমতা বলেন, "বিদ্যা, বই আর ঘরের বউ কাউকে ধার দিতে নেই সবাই বলে। কারণ নিজের বিদ্যা, বুদ্ধি দিয়ে যে কাজ করতে আপনি করতে পারেন, তার ভালটা সবাই নিক, কারও খারাপ না হোক।"
এ দিন মমতা আরও বলেন, "ভাল চিন্তা মানুষকে বিকশিত করে। আমি যখন ছোট ছিলাম, ছোট ছোট কবিতা পড়তাম। 'আয় বৃষ্টি ঝেঁপে, ধান দেব মেপে', "কাঠবেড়ালি কাঠবেড়ালি,' এ সব নিয়ে কেউ কখনও প্রশ্ন করেনি। এখন দেখি, এরা কোন গ্রুপ জানি না। হয়ত সমাজের বড় অংশ হবেন। তাঁদের সম্মান করি । তবে ভাবতে বলব। আপনি যখন বাচ্চার জন্য কিছু তৈরি করবেন, তখন আপনাকেও প্রথমে বাচ্চা সাজতে হবে। মনটা হতে হবে বাচ্চার মতো। তবেই বাচ্চাকে তার মতো করে শিক্ষা দিতে পারবেন।"
সমালোচকদের উদ্দেশে মমতার বার্তা, "কেউ কেউ পুরোটা না দেখে চিৎকার শুরু করে দেয়, একেবারে হরে করে কমবার মতো। আমি বলেল আবার বলবে, দেখেছেন! হরে করে কমবার আবার কোনও মানে হয় নাকি! নিশ্চয়ই হয়। পুরনো কবিতার বইগুলি দেখে নিন। আগেকার দিনের বইগুলিতে চোখ রাখুন, অনেক কিছু দেখতে পাবেন।"
উল্লেখ্য, সাহিত্যচর্চার জন্য, এ বছরই রবীন্দ্রজয়ন্তীতে বাংলা অকাদেমি পুরস্কার পান মমতা। অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকলেও নিজে পুরস্কার নিতে যাননি তিনি। তাঁর হয়ে পুরস্কার গ্রহণ করেন ইন্দ্রনীল সেন। মমতাকে ওই পুরস্কার নিয়ে জোর তরজা শুরু হয়। সেই সময় তাঁকে বিদ্রূপ করতে 'আজব ছড়া' নামাঙ্কিত বই থেকে 'হরে করে কমবা' লাইনটি নিয়ে তুমুল বিদ্রূপ শুরু হয়। সেই সময় দলের নেতা দেবাংশু ভট্টাচার্য। অন্নদাশঙ্কর রায়ের 'পিং পিং, কালিম্পং' ছড়াটি সোশ্যাল মিডিয়ায় তুলে ধরেন তিনি। যুক্তি দেন, মমতার লেখা বলেই এত বিদ্রূপ করা হচ্ছে। এ বার মমতা মুখ খুললেন।