কলকাতা: বাংলা থেকেই বিজেপি (BJP) হটানোর কাজ শুরু করার ডাক দিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। বুধবার বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় দলের চেয়ারপার্সন হিসেবে পুনর্নির্বাচিত হয়েছেন তৃণমূলনেত্রী (TMC Chairperson)। আর তার পরেই কেন্দ্র এবং গোটা দেশ থেকে বিজেপি-কে উৎখাত করার ডাক দিলেন। এ দিন মমতা বলেন, ‘‘তৃণমূল তৈরি হয়েছিল ১ জানুয়ারি। আমাকে সমর্থন করার জন্য অনেক ধন্যবাদ। অনেক ঝড়-ঝঞ্ঝা, বাধা, গণ্ডি অতিক্রম করে আজ এই জায়গায় তৃণমূল। প্রথমে পশ্চিমবঙ্গ তৃণমূল-কংগ্রেস তৈরি হয়েছিল। কিন্তু গোটা দেশে শাখা খুলতে দেখে সর্বভারতীয় করে দিই দলকে। প্রতেযক দলেরই কোনও না কোনও রাজ্য থেকে উত্থান ঘটে। পণ্ডিত নেহরুর হাত ধরে উত্তরপ্রদেশ থেকে উত্থান ঘটে কংগ্রেসের। গুজরাত ছিল বিজেপি-র আসল জায়গা। আমাদের ভিত্তি বাংলা। আপনারা বাংলায় দলকে মজবুত করার প্রতিশ্রুতি দিন। আমাকে বলুন, দিদি আপনি সারা ভারত থেকে বিজেপি-কে তাড়ান।’’


২০২৪-এর লোকসভা নির্বাচনে বিজেপি-র বিরুদ্ধে বিরোধীদের একজোট করতে মমতাই এই মুহূর্তে সবথেকে বেশি এগিয়ে। কিন্তু পরিব্যাপ্তি নিয়ে বার বার প্রশ্নের মুখে পড়তে হয়েছে দলকে। সেই প্রসঙ্গে মমতা বলেন, ‘‘অনেক আগেই কমিশনের কাছ থেকে সর্বভারতীয় দলের স্বীকৃতি পেয়েছি আমরা। তৃণমূল শুধু বাংলার দল নয়। এখন জাতীয় দল হিসেবেও স্বীকৃতি পেয়ে গিয়েছি আমরা। মার্চের মধ্যে চেয়ারপার্সন নির্বাচনের সময় দিয়েছিল কমিশন। আমরা এমনিতেই এগিয়ে থাকি। তাই সময়ের ঢের আগেই নির্বাচন করে নিলাম।’’


এ দিন ফের কংগ্রেসকে নিশানা করেন মমতা। বলেন, ‘‘কংগ্রেস মেঘালয়, চণ্ডীগড়ে বিজেপি-র হয়ে ভোট করে দেয়। আমরা চেয়েছিলাম বিজেপি বিরোধীরা এক জায়গায় আসুক। কিন্তু অহঙ্কার করে যদি কেউ বসে থাকে, তাহলে একলা চলো। একটি একটি করে ফুল গাঁথতে গাঁথতে গোটা মালা তৈরি করে নেব আমি।’’


কেন্দ্রীয় বাজেটকে মঙ্গলবারই কার্যত নস্যাৎ করে দিয়েছিলেন মমতা। এ দিন বলেন, ‘‘গতকাল একটা বাজেট হল। বিজেপিকে দেখলে মনে হয়, চু কিতকিত দল। মানুষ চাল চায়, ডাল চায়, হিরে নয়। হিরের ঝোল, চচ্চরি, তরকারি বানাবে? আর নিজেরা হিরের ঘণ্ট খেয়ে বসে থাকবে!’


আরও পড়ুন: Post Poll Violence Case: ভোট পরবর্তী হিংসার দু’টি মামলায় হুলিয়া জারি, মাথাপিছু ৫০ হাজার পুরস্কারের ঘোষণা সিবিআই-এর


বিজেপি বাংলার নামে মিথ্যা প্রচার করে বলে অভিযোগ করেন মমতা। তিনি বলেন, বাংলাদেশের ছবিকে বাংলার বলে চালিয়ে অপপ্রচার করে। বাংলায় বিজেপি-র অন্তর্দ্বন্দ্বকেও কটাক্ষ করেন মমতা। তিনি বলেন, ‘‘এক দল ঘোড়ার পালকে রাজ্যশাসন করতে পাঠিয়েছে। এখন আবার ঘোড়ার পাল ঘোড়ার পালের সঙ্গেই লড়ছে।’’ রাজ্যপাল ধনখড়ের সঙ্গে সংঘাত নিয়েও মুখ খোলেন মমতা। ধনখড়কে টুইটারে ব্লক করে দিয়েছেন বলে সম্প্রতিই খোলসা করেছেন মমতা। এ দিন মমতা বলেন, ‘‘বাংলায় গণতন্ত্র নেই, আইন নেই বলে আক্রমণ করছেন, আবার আমাকেই ট্যাগ করছেন। মা ক্যান্টিনের হিসেব চাইছেন, বলছেন ওঁর নির্দেশ মেনে চলতে হবে। রাজভবন থেকে দূরবীণ দিয়ে বাংলায় খুন, হিংসা দেখছেন বোধহয়। জীবনে নির্বাচনী প্রতিনিধি হননি, বার বার দলবদল করেছেন।’’


ভোট এলেই কেন্দ্রী সরকার সিবিআই এবং ইডি-কে নামিয়ে দেয় বলেও অভিযোগ করেন মমতা। ভোট পরবর্তী হিংসা নিয়ে সম্প্রতি বীরভূমের তৃণমূল সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলকে তলব করেন কেন্দ্রীয় গোয়েন্দারা। শারীরিক অসুস্থতার জেরে হাজিরা দিতে যাননি অনুব্রত। বুধবার হাই কোর্টে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দাদের নোটিসকে চ্যালেঞ্জও জানিয়েছেন তিনি। সেই প্রসঙ্গে এ দিন মমতা বলেন, ‘‘ভোট এলেই সিবিআই, ইডি নামিয়ে দেয়। কেষ্ট বেচারা অসুস্থ। ওকে নোটিস ধরিয়েছে।’’