কলকাতা: শিক্ষক নিয়োগ মামলার পর গরুপাচার (Cattle Smuggling Case) নিয়েও রাজ্যে সক্রিয়তা বাড়িয়েছে কেন্দ্রীয় সংস্থা। তা নিয়ে রাজনৈতিক টানাপোড়েন চলছে বিগত কয়েক দিন ধরেই। শাসকদলের নেতাদের প্রতিক্রিয়া নিয়ে শুরু হয়েছে সমালোচনা। সেই আবহে এ বার মুখ খুললেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। ভিন্ রাজ্য থেকে বাংলায় গরু পাঠানো অনেক আগেই বন্ধ করতে বলেছিলেন বলে জানিয়েছেন মমতা। একই সঙ্গে সীমান্ত দিয়ে গরুপাচারের জন্য সীমান্তরক্ষী বাহিনীর দায়িত্বে থাকা কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহকেও (Amit Shah) একহাত নেন তিনি।


গরুপাচার নিয়ে সরাসরি শাহকে নিশানা মমতার


রাজনৈতিক উদ্দেশ্য চরিতার্থ করতে রাজ্যে কেন্দ্রীয় সংস্থাগুলিকে কেন্দ্রের বিজেপি সরকার ব্যবহার করছে বলে আগে থেকেই অভিযোগ তুলে আসছে তৃণমূল। সেই নিয়ে রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ করতেও দেখা গিয়েছে তাদের। সেই আবহে রবিবার মুখ খুললেন মমতাও। এ দিন প্রকাশ্য সভা থেকে তিনি বলেন, ‘‘কাল যদি আমার বাড়িতে যায় কী করবেন? রাস্তায় নামবেন তো? গণতান্ত্রিক ভাবে আন্দোলন করবেন তো? আমারটা আমি একাই লড়ব। কিন্তু আপনাদেরটা আপনাদেরকেই লড়ে নিতে হবে তো!’’


গরুপাচার মামলায় সম্প্রতি বীরভূমের তৃণমূল সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলকে (Anubrata Mandal) গ্রেফতার করেছে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা সিবিআই। সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশে গরুপাচার চক্রের সঙ্গে অনুব্রতর যোগসাজশ ছিল এবং তার বিনিময়ে তিনি টাকার ভাগ পেতেন বলে সন্দেহ কেন্দ্রীয় গোয়েন্দাদের। এ দিন তা নিয়ে সরব হন মমতা। তিনি বলেন, ‘‘আমার সহকর্মীকে যদি ইচ্ছে করে জেলে ধরে রেখে দেয়...কী বলছে না গরুরু টাকা নিয়েছে! গরুটা আসে কোথা থেকে? উত্তরপ্রদেশ, বিহার থেকে বাংলা দিয়ে কেন গরু পাঠাও? আমি অনেকবার বলেছিল, আমাদের বর্ডারে গরু ঢুকতে দেব না।’’



আরও পড়ুন: Mamata Banerjee: ‘আমি বোকা লোক, আর তুমি হবে ভাল, বিএসএফ কার হাতে’! গরুপাচার নিয়ে শামমতার নিশানায় শাহ


গরুপাচার মামলায় আগেই বিএসএফ অফিসারকে গ্রেফতার করা হয়েছে। সিবিআই সূত্রে খবর, পাচার কার গরুপিছু ২ হাজার টাকা নিতেন বিএসএফ অফিসাররা। কাস্টমসের কাছে যেত ৫০০ টাকা করে। এ দিন তাই বিএসএফ-এর ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন মমতা। তিনি বলেন, ‘‘গরু দেখার দায়িত্ব কার? বিএসএফ-এর মন্ত্রী অমিত শাহ, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। কয়লা কার অধীনে? কোল ইন্ডিয়ার অধীনে। কোল ইন্ডিয়া কার সংস্থা, ভারত সরকারের সংস্থা। দেখে কে, সিআইএসএফ, সেটিও কেন্দ্রীয় সংস্থা। আমি বোকা লোক, আর তুমি হেব ভাল! নিজে দায়িত্ব পালন করতে পারোনি। আর বড় বড় কথা বলছ। লজ্জা করে না! তোমাদের তো প্রথম জেলে যাওয়া উচিত, যারা দায়িত্বে থেকেও পালন করতে পারোনি। আমাদের বড় বড় কথা শেখাতে আসবে না।’’


সিবিআই-এর হাতে ধৃত অনুব্রতর পাশে মমতা


কেন্দ্রীয় সংস্থাকে দিয়ে তাঁদের ভয় দেখানো যাবে না বলে লাগাতার বলে আসছেন তৃণমূল নেতৃত্ব। এ দিন মমতার মুখেও সেই কথাই শোনা যায়। তিনি বলেন, ‘‘আমরা একবার জন্মাই, আর একবারই মরি। মনে রেখো, রোজ রোজ মৃত্যুর ভয় পাই না আমরা। আর রোজ রোজ তোমাদের মুখও দেখতে চাই না।’’ রাত পোহালেই স্বাধীনতা দিবস। তার উল্লেখ করে মমতা জানান, এই মুহূর্তে দেশ কয়েক জনের হাতে চলে গিয়েছে। তারা সব লুঠ করে নিতে চায়। কেড়ে নিতে চায় মানুষের সব অধিকার। মানুষকে বাঁচার মতো করে বাঁচতে দেওয়ার জন্য দেশমাতৃকার কাছে শক্তিপ্রার্থনাও করেন তিনি।