হাওড়া: জ্বালানির দাম নিয়ে সাধারণ মানুষের হয়রানির কথা বলতে গিয়ে রাজ্যের ঘাড়ে দোষ ঠেলেছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। তা নিয়ে এ বার তাঁকে তীব্র আক্রমণ করলেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর দাবি, একতরফা কথা বলে দেশবাসীকে বিভ্রান্ত করছেন মোদি। পেট্রোল-ডিজেল এবং রান্নার গ্যাসের দাম বাড়িয়ে কয়েক লক্ষ কোটি টাকা ঘরে তুলেছে তাঁর সরকার। আর যখন দেশবাসীকে রেহাই দেওয়ার কথা উঠছে, তখন বিরোধী-শাসিত রাজ্যগুলির ঘাড়ে দোষ ঠেলছেন। রাজ্য সরকারের বকেয়া টাকাও আজ পর্যন্ত কেন্দ্র মেটায়নি বলেও অভিযোগ করেন মমতা।
জ্বালানির দাম নিয়ে মোদিকে পাল্টা তোপ মমতার
বুধবার মুখ্যমন্ত্রীদের সঙ্গে বৈঠকে জ্বালানির দামে মূল্যযুক্ত কর কমানোর কথা বলতে গিয়ে কর্নাটক, গুজরাত এবং বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলির সঙ্গে বাকিদের তুলনা টানেন প্রধানমন্ত্রী। অভিযোগ করেন যে, কিছু রাজ্য নিজেদের নাগরিকের সুবিধা দিতে কর ছাঁটায়ের ইতিবাচক পদক্ষেপ নিলেও, বাংলা, মহারাষ্ট্রের মতো রাজ্য সেই পথে হাঁটেনি। সেই কারণেই রাজ্যের মানুষকে ভুগতে হচ্ছে বলে দাবি করেন তিনি।
নবান্ন থেকে সাংবাদিক বৈঠক করে এর পরেই মোদিকে একহাত নেন মমতা। তাঁর অভিযোগ, ২০১৪ সালে ক্ষমতায় আসার পর থেকে ২০২১-এর সেপ্টেম্বর পর্যন্ত পেট্রোল-ডিজেল থেকে প্রাপ্ত করবাবদ ১৭ লক্ষ কোটি টাকার বেশি আয় করেছে মোদি সরকার। রাজ্যের সঙ্গে করের টাকা ৫০:৫০ অনুপাতে ভাগ করে নেওয়ার বদলে, ৭৫ শতাংশ কেন্দ্র একা নেয়। তার পরেও রাজ্যের ঘাড়ে দোষ ঠেলা আসলে প্রধানমন্ত্রীর অ্যাজেন্ডার অংশ বলে দাবি করেন মমতা। এ নিয়ে মোদির বিরুদ্ধে পক্ষপাতিত্বের অভিযোগও তোলেন মমতা। মমতার কথায়, "প্রধানমন্ত্রী যাঁদের প্রশংসা করলেন, তাঁদের অনেক বেশি টাকাও দেন। আমাদের যা দেন, তার চেয়ে ৫০ শতাংশ বেশি। তাই ওদের পক্ষে ৪-৫ হাজার কোটি দেওয়া বড় কথা নয়। কারণ আপনি ৪০ হাজার কোটি দিয়ে পুষিয়ে দেন।"
কেন্দ্র ৯৭ হাজার কোটি বকেয়া রেখেছে, অভিযোগ মমতার
মমতা জানিয়েছেন, গত তিন বছরে তাঁর সরকার প্রতি লিটারে ১ টাকা করে ভর্তুকি দিচ্ছে। তাতেই রাজ্য সরকারের দেড় হাজার কোটি টাকা চলে যাচ্ছে। অথচ প্রধানমন্ত্রী সে কথা একটি বারের জন্যও উল্লেখ করলেন না কেন, প্রশ্ন তুলেছেন মমতা। একই সঙ্গে কেন্দ্রীয় সরকার রাজ্যের প্রাপ্য ৯৭ হাজার কোটি টাকার বকেয়া মেটায়নি বলেও ফের সুর চড়িয়েছেন মমতা। তাঁর যুক্তি, ৯৭ হাজার টাকার অর্ধেকও যদি শোধ করে দিত কেন্দ্র, তিনিও অমন ৩-৪ হাজার কোটি টাকা ছেড়ে দিলেন।