দীপক ঘোষ, মুন্না আগরওয়াল , অনির্বাণ বাগচী, কলকাতা : মুর্শিদাবাদের রেজিনগরের শক্তিপুরে রামনবমীর মিছিল উপলক্ষ্য়ে অশান্তি। বোমাবাজি, দোকানে আগুন, রক্তপাত, আর সেই অশান্তির ঘটনায় একটি নির্দিষ্ট পক্ষকেই দায়ী করলেন মমতা বন্দ্য়োপাধ্য়ায় । NIA-কে আক্রমণ করতে গিয়ে সরাসরি সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের পাশে দাঁড়ালেন তিনি। মঞ্চ থেকে গলা চড়ালেন , 'কে অধিকার দিয়েছে সংখ্যালঘু দেখলেই তাঁদের বাড়িতে NIA ঢুকে পড়বার? কে অধিকার দিয়েছে?' রামনবমীর মিছিলে অংশগ্রহণকারীদের প্রতিই এদিন একভাবে আক্রমণ শানান তৃণমূলনেত্রী। 'কেন অস্ত্র নিয়ে মিছিল করবেন আপনারা? কে আপনাদের অধিকার দিয়েছে অস্ত্র নিয়ে মিছিল করার?'
রাম নবমীর অশান্তি নিয়ে, শুক্রবার যে জেলা থেকে এভাবে সংখ্য়ালঘুদের পাশে দাঁড়িয়ে, অপর গোষ্ঠীকে সরাসরি দুষলেন মমতা বন্দ্য়োপাধ্য়ায়। ২০১১ সালের জনগণনা অনুযায়ী সেই মুর্শিদাবাদ জেলার প্রায় ৬৬ শতাংশ মুসলিম। মমতা বন্দ্য়োপাধ্য়ায় এদিন দুটি লোকসভা কেন্দ্রে জনসভা করেন একটি মুর্শিদাবাদ, যেখানকার প্রায় ৭৮ শতাংশ ভোটারই সংখ্যালঘু। অপরটি জঙ্গিপুর লোকসভা কেন্দ্রে, যেখানে সংখ্য়ালঘু ভোটার প্রায় ৬৩ শতাংশ। তাই কি সংখ্য়ালঘু ভোটব্য়াঙ্কের মন জয় করতেই, রামনবমীর অশান্তি নিয়ে সরাসরি একটি পক্ষের দিকে আঙুল তুললেন মমতা বন্দ্য়োপাধ্য়ায়? প্রশ্ন উঠছে রাজনৈতিক মহলে।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বক্তব্য শুনেই তার কড়া জবাব দিয়েছে বিজেপি। ' রামনবমীর মিছিল থেকে কোনও আক্রমণ করা হয়নি। এমনকী মুসলিম পক্ষও সেই অভিযোগ করেনি। কিন্তু মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অভিযোগ সাজিয়ে দিচ্ছেন। ঠিক যেমন NIA-এর বিরুদ্ধে শ্লীলতাহানির অভিযোগ সাজিয়েছিলেন, ঠিক সেইভাবে এই একই বোমা মারার অভিযোগ সাজালেন। মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে, মুখ্যমন্ত্রীর উস্কানিতে, মুখ্যমন্ত্রীর প্ল্যানিংয়ে এই আক্রমণ করা হয়েছে।'
রাজ্যের ২৯৪টি আসনের মধ্যে ৭৪টিতে সংখ্যালঘু ভোটার ৪০ শতাংশ বা তার বেশি। ২০২১ সালের বিধানসভা ভোটে তার মধ্য়ে ৭১টিতে জয়ী হয় তৃণমূল। লোকসভা ভোটেও সংখ্য়ালঘু ভোট ধরে রাখতে মরিয়া বলেই কি রামনবমীর অশান্তি নিয়ে এই কৌশলী ও সুর্নির্দিষ্ট অবস্থান নিচ্ছেন মমতা বন্দ্য়োপাধ্য়ায়? প্রশ্ন রাজনৈতিক মহলে।
মুখ্য়মন্ত্রী যখন এই অবস্থান নিচ্ছেন, তখন কড়া পদক্ষেপ করল নির্বাচন কমিশন। মুর্শিদাবাদের শক্তিপুর থানার OC এবং বেলডাঙার IC-কে সাসপেন্ড করা হল। কমিশনের চিঠিতে বলা হয়েছে, ১৭ তারিখ এই দুই থানার অন্তর্গত এলাকায় যে ঘটনা ঘটেছে, তা নিয়ে রিপোর্টে দেখা গেছে, দুই থানার OC-ই সাম্প্রদায়িক সংঘর্ষ রুখতে ব্য়র্থ হয়েছেন।
আপনার পছন্দের খবর আর আপডেট পাবেন আপনার পছন্দের চ্যাটিং প্ল্যাটফর্ম হোয়াটস অ্যাপেও। যুক্ত হোন ABP Ananda হোয়াটস অ্যাপ চ্যানেলে।