পুজোর মুখে দুর্যোগ। রাতভর নিম্নচাপের বৃষ্টিতে জলমগ্ন কলকাতা। অধিকাংশ রাস্তায় জল জমে দুর্ভোগ। উত্তর থেকে দক্ষিণ জলযন্ত্রণায় নাজেহাল শহরবাসী। এমন ভয়ঙ্কর দুর্যোগের অভিজ্ঞতা বহুদিন হয়নি এই শহরবাসীর। এই বিপদের শেষ কোথায় বুঝে উঠতে পারছে না মানুষ। সকলেই তাকিয়ে সরকারের দিকে। এই পরিস্থিতিতে এবিপি আনন্দের সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট সুমন দে-কে এক্সক্লুসিভ সাক্ষাৎকার দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। 

Continues below advertisement

মুখ্যমন্ত্রী জানালেন, 'এ ধরনের বৃষ্টি প্রায় কোনওদিনই হয়নি। এটা একেবারে অস্বাভাবিক বৃষ্টি হয়েছে। উত্তরাখণ্ড, দেহরাদুন, দিল্লি , মুম্বই, সব জায়গাই ভয়ঙ্কর চিত্র দেখা গিয়েছে, যখন বৃষ্টিটা হচ্ছে তখন আটকানো যাচ্ছে না। প্রকৃতির বাঁধ ভেঙে যাচ্ছে। ক্লাউড বার্স্ট হয়েছে। কলকাতা হাওড়া হুগলিতে এফেক্ট হয়েছে। কলকাতায় সবথেকে বেশি এফেক্ট হয়েছে।'

শহরের এই ভয়ঙ্কর জলমগ্ন পরিস্থিতিতে মুখ্যমন্ত্রী ফের একবার দুষলেন কেন্দ্রকে। বললেন, 'ডিভিসি ভর্তি করে জল ছেড়ে দিয়েছে, মাইথনের জল , পাঞ্চেতের জল...উত্তরপ্রদেশ, বিহারের যে জল আসছে....বাংলা একটা নৌকার মতো...সব জলটা ফরাক্কায়...ডিভিসি তো ড্রেজিং করে না। ১৫ বছর ড্রেজিং করে না। এটা তো আমাদের হাতে নেই। আমাদের হাতে থাকলে আমরা করে দিতাম। ' জানালেন মুখ্যমন্ত্রী।  

Continues below advertisement

বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মৃতদের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ ও চাকরি             

এবিপি আনন্দের সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট সুমন দে-কে এক্সক্লুসিভ সাক্ষাৎকারে মুখ্যমন্ত্রী জানালেন, এই দুর্যোগে যাঁরা বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মারা গেলেন, তাঁদের পরিবারের মানুষের চাকরির ব্যবস্থা করা হবে। তিনি সিইএসসি-কর্তার সঙ্গে নিজে কথা বলেছেন। যদি সিইএসসি চাকরি দেয় তো ভাল, নইলে চাকরি ও ক্ষতিপূরণের আশ্বাস দিলেন মুখ্যমন্ত্রী। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, 'রাজ্য সরকারও মৃতদের পরিবারের পাশে আছে । জীবনের বিকল্প অর্থ হয় না । পুজোর আগে এতগুলো জীবন চলে গেল। সকলকে অনুরোধ করব জল থাকাকালীন কেউ রাস্তায় বেরোবেন না'। তিনি বলেন, 'এর আগেও একাধিক দুর্ঘটনা হয়েছে, কিন্তু CESC সতর্কভাবে কাজ করছে না, এভাবে যেন মানুষের প্রাণ না যায় । CESC-কে ক্ষতিপূরণ দিতে হবে, চাকরিও দিতে হবে'। 

পুজোর ছুটি ঘোষণা

পাশাপাশি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানালেন, এই দুর্যোগপূর্ণ পরিস্থিতিতে সরকারি স্কুলগুলিতে পুজোর ছুটি দিয়ে দেওয়া হয়েছে আজ, মঙ্গলবার থেকেই। সেই সঙ্গে ICSE ও CBSE বোর্ডের স্কুলগুলিকে আজ থেকে অন্তত ২ দিন ছুটি দেওয়ার অনুরোধ করেছেন তিনি। সেই সঙ্গে  বেসরকারি অফিসগুলিকে আগামী ২ দিন ওয়ার্ক ফ্রম হোম করার অনুরোধ করেছেন তিনি। প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে সম্ভব হলে বিশ্ববিদ্যালয়গুলিকে আগামী ২ দিন ছুটি দেওয়া বা অনলাইন ক্লাস করানোর অনুরোধ করেছেন তিনি।