বেলপাহাড়ি: পথ চলতে চলতে কখনও ঢুকে পড়েন চায়ের দোকানে। কখনও আবার বসে যান মোমো বানাতে। ঝাড়গ্রাম (Mamata Banerjee Jhargram Visit) সফরেও তার অন্যথা হল না। বেলপাহাড়ি থেকে ফেরার পথে রাস্তার ধারের চায়ের দোকানে ঢুকে পড়লেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। সেখানে গরম তেলে মুচমুচে চপ ভাজলেন নিজেই। দোকানদারের সঙ্গে কথা বলার পাশাপাশি, চপ, তেলেভাজা-সহযোগে জনসংযোগও সারতে দেখা গেল তাঁকে (Mamata Distributes Fritters)। 


ঝাড়গ্রাম সফরে গিয়ে চায়ের দোকানে ঢুকে পড়লেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়


মঙ্গলবার প্রশাসনিক সভার পর বেলপাহাড়ির (Belpahari News) আদিবাসী গ্রামে হাজির হন মমতা। সেখানে ক্ষোভ-বিক্ষোভ শোনার পর রওনা দেন। সেই সময়ই রাস্তার ধারের একটি চায়ের দোকান চোখে পড়ে মমতার। সটান দোকানের ভিতর ঢুকে যান তিনি। দোকানে তখন চপ ভাজছেন এক ব্যক্তি। এক দিকে ডেকচিতে ফুটছে চা। সটান চপ ভাজতে নেমে পড়েন মমতা। সকলের সঙ্গে  কুশল বিনিময় করেন। জানতে চান, কোনও সমস্যা আছে কিনা। 


আরও পড়ুন: Mamata Banerjee: ঘর-কল, কিচ্ছু পাইনি, কবে পাব! আদিবাসীদের প্রশ্নে মমতা বললেন, ‘রোজ ঝগড়া করছি’


এর পর, দোকানের ভিতর কোথায়, কী হচ্ছে, চোখ বুলিয়ে দেখে নেন তিনি। তার পর টেবিলের উপর সাজানো কৌটোকাটি পেরিয়ে দোকানের সামনের অংশে পৌঁছন। সেখানে একদিকে রাখা ছিল চপ। তরকারি এবং অন্য রান্না ঢাকা দিয়ে রাখা ছিল ডেকচিতে। দোকানে তখন উপচে পড়ছে ভিড়। কোনও কিছু না ভেবেই খবরের কাগজের কেটে রাখা টুকরো হাতে তুলে নেন মমতা। তার পর, চপ সেই কাগজে মুড়িয়ে তুলে দেন হাতে হাতে। 


কাগজে মুড়ে হাতে হাতে চপ তেলেভাজা তুলে দিলেন মমতা


আচমকা মমতার আগমনে হতচকিত হয়ে পড়েন ওই চায়ের দোকানের লোকজন। কখনও বকোনও মুখ্যমন্ত্রীকে এমন ভূমিকায় দেখেছেন কিনা জানতে চাইলে, তাঁরা বলেন, "না না, কখনও দেখিনি। দারুণ সৌভাগ্য আমাদের। এত মিটিং মিছিলে গিয়েছি, কখনও কাছ থেকে দেখতে পাইনি ওঁকে। তাই এত কাছ থেকে দেখতে পাব, ভাবিইনি।"


এর আগে, এ দিনই প্রশাসনিক সভার পর মালাবতী গ্রামে আদিবাসী পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে যান। কিন্তু সেখানে পৌঁছে স্থানীয়দের ক্ষোভের কথাই জানতে পারেন তিনি। মমতাকে দেখে ঘিরে ধরেন সকলে। তাঁদের বলতে শোনা যায়, "ঘর, কল, কিচ্ছু পাইনি। ১০০ দিনের কাজেও মেলেনি টাকা।  কবে পাব এ সব?" কেউ কেউ জানান, দুই কিলোমিটার দূর থেকে খাবার জল আনতে হয় তাঁদের। বাংলা আবাস যোজনার আওতায় বাড়িও পাননি। আর কত দিন এ ভাবে চলবে, জানতে চান।


প্রশ্নের উত্তরে মমতাকে বলতে শোনা যায়, "দিল্লি বন্ধ করে রেখেছে। আমাদের টাকা নিয়ে নিয়েছে। যখন পাব, তখন দিয়ে দেব। রোজ ঝগড়া করছি, ২০২৪-র মধ্যে হয়ে যাবে।" জলের পাইপ টানতে সময় লাগছে বলেও জানানব মমতা। যত দ্রুত সম্ভব সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে বলে আশ্বাস দেন তিনি। এ ক্ষেত্রেও কেন্দ্রের বিরুদ্ধে বঞ্চনার অভিযোগ তোলেন তিনি।