সিঙ্গুর : যে মাটিতে দাঁড়িয়ে আন্দোলনের রাস্তা তাঁকে পৌঁছে দিয়েছিল ক্ষমতার অলিন্দে, সেই সিঙ্গুরে দাঁড়িয়ে গ্রামের রাস্তা বাঁচানোর 'পন্থা' জানালেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায় (Chief Minister Mamata Banerjee)। পাশাপাশি পথশ্রী-রাস্তাশ্রী প্রকল্পের উদ্বোধনের মাঝে আগের বাম সরকারের সময়ে গ্রামের রাস্তার বেহাল দশায় ছিল বলে দাবি করে, বর্তমান রাজ্য সরকারের সুবাদে রাস্তা উন্নয়নের খতিয়ান সামনে মেলে ধরলেন তিনি।


রাজ্যের দুয়ারে কড়া নাড়ছে পঞ্চায়েত ভোট (Panchayat Election)। তার প্রাক্কালে রাজ্য বাজেটে রাস্তাশ্রী প্রকল্পের কথা ঘোষণা করেছেন রাজ্য সরকার। যে প্রকল্পের অধীনে ১১ হাজার ৫০০ কিলোমিটার রাস্তার জন্য ৩ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। সেই কথা ফের মনে করিয়ে দিয়ে মুখ্যমন্ত্রী ১২ হাজার কিলোমিটার গ্রামীণ রাস্তা প্রকল্পের উদ্বোধন করেন। পাশাপাশি রাস্তা বাঁচানোর পন্থা জানিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, 'বড় মালবাহী গাড়ি গ্রামের রাস্তায় ঢুকতে দেবেন না। ওই গাড়ির ভারে রাস্তা দ্রুত খারাপ হয়ে যায়।' বড় মালবাহী গাড়ি বড় রাস্তায় চলবে বলেই জানিয়ে বর্তমান রাজ্য সরকার এই সমস্ত গাড়ি চলাচলের জন্য নির্দিষ্ট সময় বেঁধে দিয়েছে বলেও উল্লেখ করেন তিনি। 


পাশাপাশি আগের বাম সরকারকে খোঁচা দিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, 'ছোটবেলায় ছুটিতে গ্রামে থাকতে যেতাম। মনে আছে গ্রামের রাস্তা ছিল বড় বড় গর্তে ভর্তি। সে যেন ঢেউ খেলানো সব রাস্তা। এখন সেই চেহারা বদলে গিয়েছে। রাজ্যের সর্বত্র। সরকারে এসে ১ লক্ষ কিলোমিটার রাস্তা তৈরি করে দিয়েছি।' রাস্তার হাল-হকিকত বদলানোর পাশাপাশি রাস্তা তৈরির কাজে ১০০ দিনের জব কার্ড হোল্ডাররা কাজ পাবেন বলেও ঘোষণা করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। 


কেন্দ্র সরকারকে আক্রমণ শানিয়ে মুখ্যমন্ত্রী জোড়েন, কেন্দ্র টাকা না দেওয়ার জেরেই বন্ধ ১০০ দিনের কাজ। কিন্তু জব কার্ড হোল্ডাররা যাতে কাজ পান, সেই ব্যবস্থা করার চেষ্টা রাজ্য সরকার করছে। যারপরই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আক্ষেপ, 'জিএসটি নিয়ে কেন্দ্রকে সমর্থন করা ভুল হয়েছে। জিএসটি-র সব টাকা নিয়ে কেন্দ্র চলে যাচ্ছে।' ১০০ দিনের জব কার্ড হোল্ডারদের নতুন কাজের খোঁজ দেওয়ার পাশাপাশি সিঙ্গুরের মাটি থেকে আগামী ১ থেকে ১০ এপ্রিল রাজ্যের বুথে বুথে দুয়ারে সরকার শিবিরের কথা মনে করিয়ে দেন মুখ্যমন্ত্রী। পাশাপাশি ২৫ বছরের ঊর্ধ্বে সকল মহিলাকে লক্ষ্মীর ভাণ্ডার প্রকল্পভুক্ত হওয়ার আহ্বানও জানান তিনি। রাজ্য সরকারের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, ৬০ বছরের বছর লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের অন্তর্ভুক্ত কারোর অ্যাকাউন্টে বার্ধক্য ভাতার টাকাও পৌঁছে যাবে বলে রাজ্যের সিদ্ধান্তের কথাও অনুষ্ঠানমঞ্চ থেকে ফের জানান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়


আরও পড়ুন- এবার বুথে বুথে দুয়ারে সরকার, ঘোষণা মুখ্যমন্ত্রীর