কলকাতা: আসন্ন লোকসভা নির্বাচনের আগে বিরোধী শিবিরের রাজনৈতিক সমীকরণ নিয়ে চলছে জল্পনা, কল্পনা (Lok Sabha Elections 20234)। সেই আবহেই বাংলার মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে (Mamata Banerjee) আমন্ত্রণ জানাল কংগ্রেস। কর্নাটকে সরকার গড়তে চলেছে কংগ্রেস। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেবেন সিদ্দারামাইয়া (Siddaramaiah)। তাঁর ডেপুটি হচ্ছেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি ডিকে শিবকুমার। সেই শপথগ্রহণ সভাতেই আমন্ত্রণ জানানো হল মমতাকে (Congress)। 


শনিবার কর্নাটকের মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেবেন সিদ্দারামাইয়া। তাঁর শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানে কংগ্রেসের তরফে আমন্ত্রণ জানানো হল মমতাকে।  মমতা ছাড়াও বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার, তেলঙ্গানার মুখ্যমন্ত্রী কেসি রাও, ওড়িশার মুখ্যমন্ত্রী নবীন পট্টনায়ক, ন্যাশনালিস্ট কংগ্রেস পার্টির নেতা শরদ পওয়ার, সমাজবাদী পার্টির নেতা অখিলেশ যাদব,  ন্যাশনাল কংগ্রেসের ফারুখ আবদুল্লা, শিবসেনা (সাবেক) প্রধান উদ্ধব ঠাকরে, সিপিআই-এর সীতারাম ইয়েচুরিকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।


কর্নাটকে বিপুল ভোটে জয়ী হয়ে, একার বলেই সরকার গড়ছে কংগ্রেস। সেখানে মুখ্যমন্ত্রীর শপথ গ্রহণে বিজেপি বিরোধী শিবিরের সকলকে আমন্ত্রণের নেপথ্যে রাজনৈতিক সমীকরণই দেখছেন সকলে। কারণ ২০২৪-এর লোকসভা নির্বাচনের প্রশ্নে এ যাবৎ লাগাতার প্রশ্নের মুখে পড়তে হয়েছে কংগ্রেসকে। বিজেপি বিরোধী জোটকে নেতৃত্ব দেওয়ার ক্ষেত্রে তাদের যোগ্যতা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। কিন্তু কর্নাটকের বিপুল জয় অক্সিজেন জুগিয়েছে তাদের। সেই কারণে বিজেপি বিরোধী শিবিরের সকলকে একমঞ্চে হাজির করে শক্তিপ্রদর্শনই লক্ষ্য বলে মনে করছেন রাজনৈতিক মহলের একাংশ। 


আরও পড়ুন: The Kerala Story: ‘ছত্রে ছত্রে মিথ্যে, তবু নিষেধাজ্ঞা কাম্য নয়’, 'দ্য কেরালা স্টোরি' নিয়ে সুপ্রিম রায়ে প্রতিক্রিয়া জানাল CPM


যদিও বিষয়টিকে নেহাতই সৌজন্য বলে উল্লেখ করেছেন বাংলার প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীররঞ্জন চৌধুরী। তাঁর বক্তব্য, "কংগ্রেস শিষ্টাচার দেখাতে জানে। তাই তৃণমূলের বিরোধিতা করে, তাদের ভোট দিতে না বলে।  যাঁরা মুখে বিজেপি-র বিরুদ্ধে লড়ার কথা বলেন, ভদ্রতা দেখিয়েই তাঁদের আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। শপথগ্রহণ দেখার জন্যই আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে, কংগ্রেস করার জন্য। বাংলায় তৃণমূল, বিজেপি, দুই শক্তির বিরুদ্ধেই লড়াই করছি আমরা, করে যাবও। "


তবে মমতাকে আমন্ত্রণ জানানোর বিষয়টি মোটেই হালকা ভাবে দেতে নারাজ রাজনৈতিক মহল। কারণ ২০২১ সালে বিপুল জনসমর্থন নিয়ে, তৃতীয় বার বাংলায় ক্ষমতা আসার পরই বিজেপি বিরোধী জোটের পক্ষে সওয়াল করেছিলেন মমতা। দিল্লিতে কংগ্রেস নেতৃত্বের কাছে সেই প্রস্তাব নিয়ে ছুটেও গিয়েছিলেন। বিরোধী শিবিরের অন্য নেতাদের সঙ্গেও দেখা করেন এক এক করে। কিন্তু  সেই সময় কংগ্রেসের তরফে বিশেষ সাড়া মেলেনি বলে জানা যায়। তাতে প্রকাশ্যেই 'একলা চলো' নীতির পক্ষে সওয়াল করেন। গোয়া, ত্রিপুরা, মেঘালয়ের নির্বাচনে তৃণমূলের নাম লেখানো ঘিরে দুই শিবিরের মধ্যে দূরত্ব আরও বাড়ে। কংগ্রেসের ভোট কেটে তৃণমূল আসলে বিজেপি-রই হাত শক্ত করেছে বলে অভিযোগ করেন কংগ্রেসের একাংশ। সম্প্রতি যদিও ফের বিরোধী ঐক্যের কথা শোনা গিয়েছে মমতার মুখে। তাই কর্নাটকে কংগ্রেসের সিদ্দারামাইয়ার শপথে তাঁর ডাক পাওয়াকে গুরুত্ব দিয়েই দেখছেন সকলে।