কলকাতা: বাম জমানায় বিরোধী নেত্রী থাকাকালীন মাঠ-ময়দানের রাজনীতিই ছিল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের USP। সিঙ্গুর আন্দোলনের সময়ে জাতীয় সড়কের ধারে টানা আন্দোলন করেছিলেন তিনি। ২৬ দিন ধরে মেট্রো চ্যানেলে করেছিলেন অনশন। ১০ দফা দাবি নিয়ে ১৭ দিন ধরে অনশন করা জুনিয়র চিকিৎসকদের সঙ্গে বৈঠকে এদিন নিজের সেই অনশনের কথা জানালেন মমতা। সেই প্রসঙ্গ উত্থাপন করেই নিজেদের অস্ত্রেও শান দেন বৈঠকে যোগ দেওয়া জুনিয়র চিকিৎসকরা। 


জুনিয়র ডাক্তারদের অনশন তোলার আহ্বান জানিয়ে, ফের একবার নিজের অনশন-আন্দোলনের প্রসঙ্গ তুললেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, 'আন্দোলন, অনশন করতেই পারো। এটা তোমাদের গণতান্ত্রিক অধিকার। আমি কিন্তু ২৬ দিন অনশন করেছিলাম। আমার কাছে কিছু একজনও সরকারি অফিসার আসেনি। অথচ আমি কিন্তু নিজে তোমাদের ধর্নায় ছুটে গিয়েছি। মুখ্যসচিব এবং স্বরাষ্ট্রসচিবকে কিন্তু আমি তোমাদের ধর্নামঞ্চে পাঠিয়েছিলাম। আমি প্রতিদিন খোঁজ নিয়েছি কে কেমন আছে? তাঁরা যখন অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছে আমি দেখেছি চিকিৎসা যেন ঠিকমতো হয়। আমি ঘণ্টায় ঘণ্টায় রিপোর্ট নেই। তোমরা বাইরে আছ, আর আমি ঘরে ঘুমাবো এটা আমার ভাল লাগে না। আমার কাছে ১ বারের জায়গায় ১০ বার বলো, সে জায়গা তোমাদের আছে। দয়া করে অনশন ও ধর্না তুলে মানুষের পরিষেবায় ফিরে যাও। তোমাদের একটা ভবিষ্যত আছে। আগামী দিন পরীক্ষা আছে। আমি চাই তোমরা তাড়াতাড়ি পাস করে বেরও।'  


মুখ্যমন্ত্রী এও বলেন, 'যেমন আন্দোলন করার শুরু আছে, আন্দোলন শেষটাও করতে হয়। তখন প্রধানমন্ত্রী নারসিংহ রাওজি, ১৯৯৩-তে। উনি আমাকে একটা ২১ দিনরে মাথায় একটা নোট পাঠালেন যে, তুমি এটাকে তুলে নাও, আমরা এটা নিয়ে আলোচনা করব এবং আলোচনা করে একটা সিদ্ধান্ত নেব। আমি কিন্তু, সঙ্গে সঙ্গে ওঁকে সম্মান দিয়ে আমি ওটা তুলে নিয়েছিলাম।' 


আরও পড়ুন, স্বাস্থ্য সচিবকে 'অভিযুক্ত' বলতেই 'মুখ খুললেন' মমতা! সঙ্গে সঙ্গেই জবাব জুনিয়র ডাক্তারদের


এই প্রেক্ষাপটে, পাল্টা, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অস্ত্রেই তাঁকে মাত করার চেষ্টা করলেন জুনিয়র ডাক্তাররা। বাঁকুড়া মেডিক্যাল কলেজের জুনিয়র ডাক্তার মনীষা ঘোষ বলেন, 'ম্যাডাম আমাদের কারও সঙ্গে যদি খারাপ কিছু হয়, তাহলে আমরা আমাদের সর্বসম্মতিক্রমে চেষ্টা করি যাতে, আগামী প্রজন্মের সঙ্গে সেটা না হয়। আমাদেরও অনশন করা, আন্দোলন করা, অনশন থেকে দাবি ছিনিয়ে আনা আপনার থেকেই শেখা।' 


তবে এদিন আন্দোলনকারী জুনিয়র ডাক্তারদের চা খাওয়ার অনুরোধ করেন মুখ্যমন্ত্রী। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, তোমরা কি চা খাবে? চায়েও না?' পাল্টা জুনিয়র ডাক্তাররা বলেন, 'না ম্যাডাম, ঠিক আছে। আমাদের ১৭ জন অনশনে আছে'। এরপর মুখ্যমন্ত্রী বলেন, 'যারা অনশন করছে, তাদের তো খেতে বলছি না। যারা করছ না, তাদের বলছি। যারা যারা চা খাবে, তাদের দিও।' 



আপনার পছন্দের খবর আর আপডেট এখন পাবেন আপনার পছন্দের চ্যাটিং প্ল্যাটফর্ম হোয়াটস অ্যাপেও। যুক্ত হোন ABP Ananda হোয়াটস অ্যাপ চ্যানেলে