হাওড়া : ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের মতো এবার মেডিক্যালেও ডিগ্রির সঙ্গে ডিপ্লোমা কোর্স ! ৫ বছরের ডিগ্রি কোর্সের বদলে ৩ বছরের ডিপ্লোমা কোর্সের মাধ্যমে চিকিৎসক তৈরি করা যায় কি না, দেখতে স্বাস্থ্য সচিবকে নির্দেশ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Mamata Banerjee)। প্রয়োজনে কমিটি তৈরির নির্দেশ মুখ্যমন্ত্রীর। আর যে ভাবনা মুখ্যমন্ত্রী সামনে রাখার পরই তীব্র প্রতিক্রিয়া চিকিৎসক (Doctors) মহলে। তাঁদের দাবি, চিকিৎসাশাস্ত্রেও 'সিভিক' ব্যবহারে কাজ চালানোর চেষ্টা করতে গেলে সমাজে পড়তে পারে প্রবল নেতিবাচক প্রভাব।


মুখ্যমন্ত্রীর 'ডিপ্লোমা চিকিৎসক' প্রস্তাব


নবান্নে এদিন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় স্বাস্থ্যসচিবকে বলেন, 'ডিপ্লোমা কোর্সের মাধ্যমে চিকিৎসক তৈরি করা যায় কি না বিষয়টা দেখ, তাহলে অনেক ছেলে-মেয়ে সুযোগ পাবে। যাঁরা অরিজিনাল ডাক্তার তাঁদের অনেক পড়াশোনা করতে হয়, পরীক্ষা দিতে হয়, অনেকটা সময় পড়াশোনা করতে হয়। যার সঙ্গে তারা কাজও করে। কিন্তু দিনে দিনে হাসপাতাল বাড়ছে, লোকসংখ্যা বাড়ছে, বাড়ছে হাসপাতালে বেড সংখ্যাও, তাই যদি ডিপ্লোমার মাধ্যমে কয়েকজন চিকিৎসক নিয়ে তাঁদের দিয়ে প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলোতে চিকিৎসার কাজে লাগানো যায়, তাহলেও সবারই অনেকটা সুবিধা হবে বলেই মনে হয়।'


তীব্র প্রতিক্রিয়া চিকিৎসকদের


মুখ্যমন্ত্রীর যে ভাবনা সামনে আসার পরেই তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে চিকিৎসক মহল। তাঁদের মতে, চিকিৎসা শাস্ত্র এমন একটা পেশা যেখানে 'সিভিক' কাউকে দিয়ে কাজ সম্ভব নয়। তেমনটা হলে সমাজে পড়তে পারে নেতিবাচক প্রভাব। প্রসঙ্গত, ২০০৯ সালে বামফ্রন্ট সরকারের তরফেও এমন প্রস্তাব সামনে আনা হয়েছিল। যদিও তা শেষ পর্যন্ত বাস্তবায়িত হয়নি। 


চিকিৎসক অরিন্দম বিশ্বাস বলেছেন, 'সব বিষয়ে শর্ট কার্ট সম্ভব নয়। চিকিৎসা শাস্ত্রে প্রয়োজন হয় অনেকটা পড়াশোনা। তার সঙ্গে ক্রমাগত কাজের অভিজ্ঞতার মাধ্যমে তৈরি হয় রোগীকে দেখা দক্ষতা। তাই তাড়াহুড়ো করে এভাবে চিকিৎসক তৈরির ভাবনা একেবারেই ভুল। এমনটা যদি হয়, তাহলে সমাজে তৈরি হতে পারে প্রবল নৈতিবাচক প্রভাব।' 


আরও পড়ুন- উপেন বিশ্বাস, পঙ্কজ দত্ত, দয়মন্তী সেনকে দায়িত্ব, কালিয়াগঞ্জে নাবালিকার মৃত্যুর ঘটনায় সিট গঠন হাইকোর্টের


শুধু চিকিৎসকদের মধ্যেই নয়, বিরোধীদের তরফেও মুখ্যমন্ত্রীর যে ভাবনা নিয়ে তীব্র সমালোচনা করা হয়েছে। তাঁদের অভিযোগ, রাজ্যের স্বাস্থ্য ব্যবস্থা কার্যত ভেঙে পড়েছে। সেটাই যেন ঘুরিয়ে স্বীকার করে নিয়ে বাঁচানোর লক্ষ্যে মরিয়া চেষ্টা চালাচ্ছেন মুখ্যমন্ত্রী। পাল্টা রাজ্যের শাসকদল রাজ্যের স্বাস্থ্য ব্যবস্থা আরও উন্নত করতেই এই ভাবনা বলেই দাবি করেছেন। সব মিলিয়ে গোটা বিষয়ে তৈরি হয়েছে তীব্র তরজা। 


আরও পড়ুন: ফলাহারের সাতকাহন, কখন ফল খাবেন? কীভাবে ফল খাবেন?