আশাবুল হোসেন, কৃষ্ণেন্দু অধিকারী ও উজ্জ্বল মুখোপাধ্যায়, কলকাতা: বার বার তৃণমূল-বিজেপি সেটিং (TMC) তত্ত্ব উঠে এসেছে। কিন্তু মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee) জানিয়ে দিলেন, কোনওদিন সরাসরি বিজেপি (BJP) করেননি তাঁরা কেউ। সিপিএম-কংগ্রেসের তোলা (CPM) আঁতাঁতের অভিযোগ নিয়ে এ ভাবেই মুখ খুললেন তৃণমূল-নেত্রী। পাল্টা, সিপিএম-কংগ্রেস (Congress) যদিও আবারও তৃণমূল এবং বিজেপি সেটিং-এর অভিযোগে সরব হয়েছে।


তৃণমূল-বিজেপি আঁতাত নিয়ে সরব সিপিএম-কংগ্রেস


দুর্নীতির অভিযোগে লাগাতার সরব বিরোধীরা। দুর্নীতি মামলায় কেন্দ্রীয় সংস্থার হাতে গ্রেফতার হয়ে জেলে রয়েছেন পার্থ চট্টোপাধ্য়ায়, অনুব্রত মণ্ডলের মতো নেতারা। তাতে মমতার বার বার দিল্লি যাওয়া, আচমকা সঙ্ঘ এবং নরেন্দ্র মোদির প্রশংসাকে বিজেপি-র সঙ্গে তাঁর গোপন আঁতাতেরই অংশ হিসেবে তুলে ধরেছে সিপিএম এবং কংগ্রেস। পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগেও তৃণমূল-বিজেপি আঁতাত নিয়ে নিত্য নতুন তত্ত্ব উঠে আসছে। সেই আবহে নজরুল মঞ্চে তৃণমূলের কর্মসূচির দিকে নজর ছিল সকলের। মমতা বিজেপি-কে কী ভাবে আক্রমণ করবেন, কী কী কথা শোনাবেন, জল্পনা চলছিল। 


আরও পড়ুন: Mamata Banerjee: 'আমি বাড়ির বউদের খুব প্রশংসা করি', নজরুল মঞ্চে অকপট মমতা


কিন্তু গোটা অনুষ্ঠানে বিজেপি-কে তীব্র আক্রমণের পথে হাঁটলেন না  মমতা। উল্টে ১০০ দিনের কাজের বকেয়া টাকা নিয়ে প্রশ্নের মুখেও, প্রধানমন্ত্রীর মাতৃবিয়োগের কথা বলতে শোনা গেল তাঁকে। সোমবার নজরুল মঞ্চের সভায় ১০০ দিনের কাজের টাকার প্রসঙ্গ উঠে আসে। ২০২২ সাল শেষ হয়ে ২০২৩ পড়ে গেলেও, এখনও পর্যন্ত কেন্দ্রীয় সরকার ১০০ দিনের কাজের বকেয়া টাকা মেটায়নি বলে সরব তৃণমূল। তাহলে কি আবারও প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে বকেয়া টাকা নিয়ে চিঠি লিখবেন মমতা! প্রশ্নের উত্তরে মমতা বলেন, "ইতিমধ্যেই প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে তিন বার সাক্ষাৎ হয়েছে। এখন ওঁর মা মারা গিয়েছে, শোক সপ্তাহ চলছে। সুতরাং এই নিয়ে আমি এখনই কোনও মন্তব্যে যাব না। এর আগে, নমামি গঙ্গে অনুষ্ঠানেও সেখানেও আমি ওদের অনুরোধ করেছি এবং আমরা ৬ হাজার কোটি টাকা ১০০দিনের কাজে, যারা কাজ করেছে, ডিউ আছে।"


সম্প্রতি, পূর্বাঞ্চলীয় পরিষদের বৈঠকের পর, নবান্নে মুখ্য়মন্ত্রীর ঘরে গেছিলেন অমিত শাহ। এই প্রেক্ষাপটে ফের একবার আঁতাঁত-অস্ত্রে শান দিয়েছে বিরোধীরা। প্রদেশ কংগ্রেস ,সভাপতি অধীররঞ্জন চৌধুরী বলেন, "দিদি চান না বিরোধী জোট। দিদি হলেন মোদির ঘোড়া। তাই দিদি মোদির বিরুদ্ধে কিছু বলেন না, মোদিও কিছু বলেন না।" তৃণমূল-বিজেপি সেটিং রয়েছে বলে দাবি করেন সিপিএম-এর কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সুজন চক্রবর্তীও। 


মোদির প্রতিও সুর নরমই রাখলেন মমতা

কিন্তু সোমবার বিরোধীদের সেই তত্ত্ব খারিজ করে, তাদের মধ্যেই পারস্পরকি আঁতাতের অভিযোগ তোলেন মমতা। তিনি বলেন, "আমরা কেউ, কোনও দিন সরাসরি বিজেপি করিনি। কংগ্রেস এবং সিপিএম, আমরা বলতাম তরমুজ। ভিতরে লাল, বাইরে সবুজ। কংগ্রেস হচ্ছে সিপিএম-এর বি টিম, একথা বলতাম। এখন যেমন বিজেপি হয়ে গিয়েছে। এখানেও কংগ্রেসের বি টিম এবং সিপিএম-এরও সি টিম।" তবে মমতা খারিজ করলেও, পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগেও বাংলার রাজনীতিতে আঁতাত নিয়ে তরজা জারি।