আশাবুল হোসেন, দার্জিলিং: লোকসভা ভোটের আগে পাহাড়ে (Darjeeling) গিয়ে একগুচ্ছ প্রকল্পের কথা ঘোষণা করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায় (Mamata Banerjee)। তার সঙ্গেই তাঁর মুখে পাহাড়ের সঙ্গে নতুন করে আত্মীয়তার সম্পর্কের কথা। বিষয়টি নিয়ে নিশানা করতে ছাড়েনি বিরোধীরা। 


লোকসভা ভোটের (Loksabha Election) আগে পাহাড়কে 'উপহার' মুখ্যমন্ত্রীর। কার্শিয়াংয়ে সরকারি পরিষেবা প্রদান অনুষ্ঠান থেকে পাহাড়বাসীর জন্য় একগুচ্ছ সুযোগ সুবিধার কথা ঘোষণা করলেন মুখ্য়মন্ত্রী। চাকরি থেকে বেতন সবকিছু নিয়েই একাধিক ঘোষণা করলেন মুখ্য়মন্ত্রী। মমতা বন্দ্য়োপাধ্যায় বলেন, 'আপনাদের এখানে অনেকদিন রিজিওনাল স্কুল সার্ভিস কমিশন ফর হিলস ছিল না। ২০০৩ থেকে বন্ধ পড়ে ছিল। ২০০৩ থেকে যখন বন্ধ পড়ে ছিল, আমি রিজিওনাল স্কুল সার্ভিস কমিশন ফর হিলস করতে চলেছি। পাহাড়ের ১৪৬ আপার প্রাইমারি সেকেন্ডারি সকুলে ৫৯০ শিক্ষকের শূন্যপদ আছে। রিজিওনাল স্কুল সার্ভিস কমিশন ফর হিলস তৈরি করে এই শূন্যপদ পূরণ করব।'


পাশাপাশি পাহাড়ের জন্য ডিস্ট্রিক্ট স্কুল বোর্ড তৈরির কথাও ঘোষণা করেছেন মুখ্য়মন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায় (CM Mamata Banerjee)। পাশাপাশি জিটিএ-কে অর্থসাহায্যের কথাও ঘোষণা করেছেন তিনি। এই প্রসঙ্গেই তিনি তুলে এনেছেন রক্তের আত্মীয়তার সম্পর্কের কথা। মমতা এদিন বলেন, 'আমি জিটিএকে ফের আরও ৭৫ কোটি টাকা দিচ্ছি। জিটিএ-র কর্মীদের জন্য ডেথ কাম রিটায়ারমেন্ট স্কিম করছি। আগে আপনাদের ছিল না। আমাদের ব্লাড রিলেশনের জন্য করে দিলাম। জিটিএ-তে যিনি রিটায়ার করবেন তিনি ২০ লাখ টাকা গ্র্যাচুয়িটি পাবেন।' জিটিএ-এর যাঁরা রেগুলার এমপ্লয়ি, ২০০৯ সালের পে রুল আর ২০১৯ সালের পে রুল অনুযায়ী বেতন সংশোধনের কথাও বলেছেন মুখ্যমন্ত্রী। এদিন মুখ্যমন্ত্রীকে বলতে শোনা যায়, 'কাল আমাদের ফ্যামিলির সঙ্গে পাহাড়ের বিয়েও হয়ে গেল। ব্লাড রিলেশনও তৈরি হয়ে গেল। আমি দেব না? আমি নিশ্চয়ই দেব।'


পাহাড়ে একগুচ্ছ প্রকল্পের উদ্বোধন নিয়ে রাজ্যকে নিশানা করেছেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। তিনি বলেন, 'আগেরবার সাড়ে চার লাখে হেরেছিল। এবার পাঁচ লাখে হারবে।' দার্জিলিং লোকসভা কেন্দ্রে কোনওদিনই জিততে পারেনি তৃণমূল। ২০০৯ থেকে একটানা এখনও পর্যন্ত এই কেন্দ্র রয়েছে বিজেপির দখলে। ২০০৯ সালে বিজেপির টিকিটে এই কেন্দ্রের সাংসদ হন যশবন্ত সিং। ২০১৪ সালেও দার্জিলিং লোকসভা যায় বিজেপির দখলে। সাংসদ হন এস এস আলুওয়ালিয়া। শেষবারের লোকসভা ভোটে এই কেন্দ্র থেকে বিজেপির টিকিটে সাংসদ হন রাজু বিস্তা। দিনকয়েক আগে, অধীর চৌধুরীর হাত ধরে কংগ্রেসে যোগ দিয়েছেন বিনয় তামাং। এই পরিস্থিতিতে একগুচ্ছ সুযোগ সুবিধার কথা ঘোষণা করে কি পাহাড়বাসীর মন জিততে পারবে তৃণমূল? সেটাই দেখার।


আরও পড়ুন: মুর্শিদাবাদ মেডিক্যালে ২৪ ঘণ্টায় ১০ শিশুর মৃত্যুর হাসপাতালে স্বাস্থ্য ভবনের ২ কর্তা, শুরু 'সাফাইয়ের রাজনীতির তরজা'