কলকাতা: পুরসভার মার্কশিট তৈরি মমতার (Mamata Banerjee)। পুরসভাগুলি কতটা কাজ করছে তা আতসকাচে আনা হচ্ছে বলে হুঁশিয়ারি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। সব পুরসভা কত কাজ করেছে, কীভাবে কাজ করেছে- সবটাই খতিয়ে দেখা হবে বলে জানানো হয়েছে। এদিন সভায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, 'পারফরম্যান্স রিভিউ হবে, অনেক ভদ্রতা দেখিয়েছি। কিন্তু ভদ্রতা দেখানো মানে জমি জবরদখল, কাজ হবে না, চলবে না।'
কোন পুরসভা কোন কাজ করছে, কোন ক্ষেত্রে কতটা কাজ করেছে-সবটাই দেখা হবে বলে স্পষ্ট জানিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পুরসভাকে টাকা দেওয়া হলেও কোনও কাজ হচ্ছে না বলে অভিযোগ মমতার। 'পুরসভা কোনও কাজ করছে না, দোষ সরকারের হচ্ছে', তোপ মমতা বন্দ্য়োপাধ্যায়ের।
বেআইনি নির্মান নিয়ে তোপ:
'বেআইনি নির্মাণ চলছেই, বাড়ি ভাঙলেও আমাদের দোষ, কেউ দেখছে না। সরু পিলার করে বাড়ি বানিয়ে পালিয়ে যাচ্ছে, ভাঙলে দায় আমাদের', হাওড়ায় চারিদিকে বেআইনি নির্মাণ, আগের মেয়রকে তীব্র আক্রমণে মুখ্যমন্ত্রী।
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্য়োপাধ্য়ায় বলেন, 'আমি তৃণমূলে টাকা তোলার মাস্টার চাইনা, তোলাবাজ নেতা চাই না, জনসেবক চাই। আমি মানুষকে ভালবাসি। যারা মানুষকে ভালবাসে না তাদের এক মিনিটে সরিয়ে দেব।'
কোন ক্ষেত্রে কোন পুরসভার ভাল কাজ, কোথায় খারাপ কাজ? মমতার মার্কশিটে কারা কোথায়?
পানীয় জল
---------
ভাল পারফরম্যান্স:
উলুবেড়িয়া
হালিশহর
কলকাতা
বৈদ্যবাটি
বাঁকুড়া
বাজে পারফরম্যান্স:
আলিপুরদুয়ার
বালি
বরাগনগর
শিলিগুড়ি
শান্তিপুর
আবাসন
-------
ভাল পারফরম্যান্স:
উলুবেড়িয়া
জঙ্গিপুর
হাবড়া
কৃষ্ণনগর
মধ্যমগ্রাম
বাজে পারফরম্যান্স:
বিধাননগর
আসানসোল
রায়গঞ্জ
কাঁথি
সাফাই ও বর্জ্র নিষ্কাশন
-----------------
ভাল পারফরম্যান্স:
কলকাতা
বসিরহাট
বৈদ্যবাটি
উত্তরপাড়া
উত্তর দমদম
নবদ্বীপ
বাজে পারফরম্যান্স:
কাঁথি
ডালখোলা
পানিহাটি
হাওড়া
কুপার্স ক্যাম্প
সিউড়ি
সতর্ক হতে হবে দায়িত্বে থাকা আধিকারিককেও, হুঁশিয়ারি মমতার। তিনি বলেন, 'অনেক আধিকারিক মনে করেন, আমি দুই বছর কাটিয়ে দিই কোনওভাবে। তারপর তো চলে যাব। আপনি ২ বছর থাকলেও মনে রাখবেন আপনার পারফরমেন্স রিফিউ করা হবে এবং আপনি যাওয়ার আগে আপনি স্বচ্ছতা বজায় রেখেছেন কিনা এখন থেকে একটা রিভিউ কমিটি তৈরি করা হবে। যেখানে ভিজিল্য়ান্সকে রাখা হবে, এসিবিকে রাখা হবে, সিআইডিকে রাখা হবে। এডিজি আইনশৃঙ্খলাকে রাখা হবে।'
পাল্টা তোপ দেগেছে বিজেপিও। রাজ্য বিজেপির মুখপাত্র ও রাজ্যসভার সাংসদ শমীক ভট্টাচার্য বলেন, 'লেকটাউন, শ্রীভূমিতে জলাভূমি বুজিয়ে নির্মাণ হচ্ছে। মাঝেরপাড়ায় ভবানী কমপ্লেক্স তৈরি হচ্ছে পুকুর বুজিয়ে, তুলে দেওয়া হয়েছে অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র। সরকার ব্যবস্থা নিয়েছে, কিন্তু কাউন্সিলরের তৎপরতায় ব্যবস্থা নিচ্ছে না বাগুইআটি থানার পুলিশ। মুখ্যমন্ত্রী যা বলছেন, তা হলে কলকাতার ১০ লক্ষ মানুষ ঘর হারাবে। বামেরা বুদ্ধিমান, কমিটি তৈরি করত, জমি দখল করত, তারপর ঘর তৈরি হত। মুখ্যমন্ত্রী ছোট প্লেয়ার নন, যা করেন ভাবনাচিন্তা করেই করেন। অন্য ইস্যুকে সামনে নিয়ে আসার জন্য মমতার মাস্টারস্ট্রোক, কিন্তু কাজ করবে না।'
আরও পড়ুন: 'টাকা খাওয়ার জন্য রাজ্যের বদনাম হচ্ছে', জমি-জবরদখল নিয়ে মমতার তোপে পুরসভাগুলি