হাওড়া :  লোকসভা ( Loksabha Election ) ভোটে বিপুল জয়ের মধ্য়েও, তৃণমূলের কাঁটা হয়েছে পুরসভাগুলি! লোকসভা ভোটের ফল অনুযায়ী, শহুরে মানুষের একটা বড় অংশই মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে রাজ্য়ের শাসক দলের থেকে। এই আবহেই নবান্নে পুর প্রধান ও মন্ত্রীদের বৈঠকের পর সাংবাদিক বৈঠকে নজিরবিহীন ভাবে তৃণমূলের নেতা থেকে মন্ত্রী, পুরসভা থেকে পুলিশ, দক্ষিণবঙ্গ থেকে উত্তরবঙ্গ, বিধায়ক থেকে SDO, পুর প্রশাসক থেকে BLRO, নাম ধরে ধরে ভর্ৎসনা করলেন মমতা বন্দ্য়োপাধ্য়ায় ( Mamata Banerjee ) । হুঁশিয়ারি দিলেন সরিয়ে দেওয়ার।


সুজিত বসুর নাম করে, তুললেন প্রশ্ন। রাগে অগ্নিশর্মা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বললেন, 'রাজারহাট, সল্টলেকে দখলদারি হচ্ছে। সল্টলেকে সুজিত বসু ইচ্ছেমতো বাইরে লোক বসাচ্ছে। কেন বাইরের লোক বসবে ? ARD অফিসের সামনে একটা করে ত্রিপল লাগাচ্ছে একটা করে বসে পড়ছে। ছবি দেখালে লজ্জা পেয়ে যাবেন। কেন ? হোয়াই হোয়াই হোয়াই। কাকে টাকা দিতে হয়েছে ?  কারা কত টাকা নিয়েছে আমি জানতে চাই। কেন পুরসভার কাউন্সিলররা কাজ করে না। এবার কি আমাকে রাস্তা ঝাঁট দিতে হবে? আমি কত ঝগড়া করব।' 



নবান্ন সভাঘরে সোমবার সুজিত বসু


এখানেই থামেননি মুখ্যমন্ত্রী। সল্টলেকের কাউন্সিলররা কাজ করছে না বলে সরাসরি অভিযোগ করেন মুখ্যমন্ত্রী। বলেন, 'এলাকার লাইট দেখে না, রো়ড দেখে না। জল দেখে না। মানুষের প্রবলেম দেখে না।' তিনি আরো বলেন, অনেকে আছেন এর মধ্যে। নাম বলে কাউকে অস্বস্তিতে ফেলতে চাই না। তবে একটা গ্রুপ তৈরি হয়েছে। খালি জায়গা দেখলেই তাঁরা লোক বসাচ্ছেন। বাংলার আইডেন্টিটি নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। এ সবে রাজ্যের ভাবমূর্তি নষ্ট হচ্ছে। ' 


কলকাতা পুরসভা থেকে শুরু করে, বিধাননগর, হাওড়া থেকে বালি, উত্তরের শিলিগুড়ি-জলপাইগুড়ি উন্নয়ন কর্তপৃক্ষ বা SJDA থেকে হলদিয়া-দিঘা উন্নয়ন পর্ষদ, পুর প্রধান থেকে পুর প্রশাসক, মুখ্যমন্ত্রীর ক্ষোভ থেকে রেহাই পেলেন না কেউ। রিভিউয়ের হুঁশিয়ারি দিলেন তিনি। 


জেলার পুর-এলাকাগুলির অধিকাংশেই বিজেপি তৃণমূলের থেকে এগিয়ে রয়েছে। লোকসভা ভোটের পুরসভা ভিত্তিক ফল অনুযায়ী, রাজ্যের ১২১টি পুরসভার মধ্য়ে ৭৪টিতেই  ওয়ার্ড ভিত্তিক ফলাফলের নিরিখে ১ নম্বরে রয়েছে বিজেপি। তৃণমূল ৪১টিতে, কংগ্রেস ৩টিতে প্রথম স্থানে এবং ৩টি পুরসভা টাই হয়ে রয়েছে। বিরোধীদের দাবি, লোকসভা ভোটে সার্বিকভাবে তৃণমূল ভাল ফল করলেও, রাজ্য়ের পুর-এলাকাগুলির ফল  মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মনে ভয় ধরিয়েছে।