কলকাতা: সরকারি জায়গা জবরদখল মুক্ত করতে কড়া বার্তা দিয়েছিলেন। কিন্তু তাতে ব্যাপক উচ্ছেদ শুরু হয়েছে শহর জুড়ে। রাতারাতি হকার, ফুটপাতের দোকানপাট উঠিয়ে দিচ্ছে পুলিশ। বুলডোজার দিয়ে ভেঙে ফেলা হচ্ছে রুটিরুজির মাধ্যম। সেই নিয়ে ফের পুলিশ ও প্রশাসনকে কড়া বার্তা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। নিজেরাই বসাবেন, নিজেরাই তুলবেন, তা হওয়ার জো নেই বলে বার্তা দিলেন। নেতা-পুলিশকে লোভ সংবরণ করতে বললেন। (Mamata Banerjee)


বৃহস্পতিবার নবান্নে ফের প্রশাসনিক বৈঠক করেন মমতা। সেখানে হকার উচ্ছেদ অভিযান নিয়ে পুলিশ এবং প্রশাসনকে তীব্র ভর্ৎসনা করলেন তিনি। পুলিশ ও নেতাদের উদ্দেশে মমতা বলেন, "হাতিবাগানে রাস্তা দখল হয়ে গিয়েছে। এতে আমাদের কাউন্সিলরদেরও অনেক দোষ আছে। তাঁরা ভাবছেন, দিয়ে দিলাম, মাসে চাঁদা পেলাম, হয়ে গেল। ডাল-ভাত-মাছ-তরকারি খেয়ে কি সন্তুষ্ট হওয়া যাচ্ছে না? খেতে কী লাগে? এখন তো কারও বাড়িতে গেলে মিষ্টিও নিয়ে যাওয়া হয় না, ডায়বিটিস না হয়ে যায়। বাঁচার জন্য কতটুকু লাগে? বাঁচার জন্য যতটুকু প্রয়োজন, ঠিক ততটুকু কাজে লাগান। তার বেশি নয়। বেশি লোভ ভাল নয়। লোভ সংবরণ করুন। এর জন্য স্থানীয় নেতা-পুলিশ সবচেয়ে বেশি দায়ী। প্রথমে বসাবেন, তার পর বুলডোজার দিয়ে তুলবেন, এই নীতি মানি না। প্রথম থেকেই কড়া হতে হবে। যে কাউন্সিলের এলাকায় এটা হবে, যে নেতার এলাকায় হবে, তিনি গ্রেফতার হবেন। ডাবগ্রামে কিন্তু জেলা সভাপতিকে গ্রেফতার করিয়েছি। সরকারের জমি নিয়ে ২-৩ লক্ষ টাকায় বিক্রি করে দেওয়া চলবে না।" (Mamata Nabanna Meeting)


আরও পড়ুন: Mamata Banerjee: 'বহিরাগতদের জায়গা দেওয়া যাবে না', হকার ইস্যু নিয়ে কেন একথা বললেন মমতা?


মমতা আরও বলেন, "বলছি না হকারদের সরিয়ে দেওয়া হোক। একটা নির্দিষ্ট জোন করা হোক। বেআইনি কিছু হলে পুলিশ, ডিএম, যেই হোন, ছাড়া হবে না। পুলিশ, হকার নেতারা গরিব হকারদের কাছে থেকে চাঁদা তুলবেন না। গড়িয়াহাটে তো হাঁটারই জায়গা নেই! হকার জোনের পাশে কোনও বিল্ডিংয়ে অগ্নি নির্বাপণের ব্যবস্থা রাখা হোক।" নির্দিষ্ট পরিকল্পনা হাতে পেলে সরকারের তরফে ফান্ডের ব্যবস্থা করা যেতে পারেও জানান তিনি। 


গতকাল দিনভর শহর জুড়ে পুলিশের বুলডোজার অভিযান দেখা যায়। নির্বিচারে এই উচ্ছেদ অভিযান ঘিরে প্রশ্ন ওঠে। সেই প্রসঙ্গে এদিন মমতা জানান, কারও চাকরি খাওয়ার, কাউকে বেকার করে দেওয়ার অধিকার নেই সরকারের। লক্ষ লক্ষ মানুষের জীবিকার প্রশ্ন জড়িয়ে রয়েছে এক্ষেত্রে। তাই প্রত্যেক পুরসভা, মহকুমা একই নীতিতে চলবে। হকারদের জন্য সার্ভে করে আলাদা জায়গা দেখা হোক। হকারদের না সরিয়ে দেওয়া  একটা নির্দিষ্ট জোন করতে হবে বলে জানিয়েছেন মমতা। প্রচুর বেকার ছেলেমেয়ে রয়েছে, তাঁদের ইন্টার্ন রাখলেও কাজ সহজ হবে বলে জানান তিনি।