কলকাতা: আর জি কর হাসপাতালে তরুণী চিকিৎসককে ধর্ষণ এবং খুনের ঘটনায় উত্তাল গোটা দেশ। শহরের বিভিন্ন প্রান্তে এখনও আন্দোলন, মিছিল চলছে। সেই আবহেই রাজ্য বিধানসভায় পেশ হল অপরাজিতা নারী ও শিশু পশ্চিমবঙ্গ অপরাধ সংশোধনী বিল ২০২৪ (Aparajita Woman and Child West Bengal Criminal Laws Amendment Bill 2024) । আর সেখানে সমাজ ও সংসারে পরিবর্তন আনার কথা বললেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্য়োপাধ্য়ায়। ধর্ষণ 'জাতীয় লজ্জা' বলে মন্তব্য করেন তিনি। (Mamata Banerjee)
বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর প্রশ্নের জবাবে এদিন বলতে ওঠেন মমতা। সেখানে তিনি বলেন, "ধর্ষণ জাতীয় লজ্জা। আসুন আমরা সবাই মিলে একজোট হয়ে ধর্ষণের বিরুদ্ধে লড়াই করি। ধর্ষণ রোখার ক্ষেত্রে সমাজ সংস্কারের প্রয়োজন রয়েছে, মানুষের জাগরণের প্রয়োজন রয়েছে। অনেক সংস্কার হয়েছে এই বাংলায়। রামমোহন রায় সতীদাহ প্রথার সংস্কার করেন, তাঁর মাথা ফাটিয়ে দেওয়া হয়। এই বাংলায় সেই আইন পাস হয়। বিদ্যাসাগর বাল্যবিবাহ এববং বিধবা বিবাহের সংস্কার করেন, আইন পাস হয় এই বাংলায়। পরে রাজীব গাঁধীর আমলে সর্বভারতীয় আইন পাস হয়।" (Aparajita Bill West Bengal)
মমতা আজ জানান, ধর্ষণ একটি ব্যাধি। এই ব্যাধি সারাতে হবে। কিন্তু গোটা দেশে ধর্ষণের ঘটনায় সাজার হার অত্যন্ত কম। এত সাহস পাচ্ছে কোথা থেকে ধর্ষকরা, প্রশ্ন তোলেন মমতা। এর কারণ উপলব্ধি করতে হবে বলে জানান তিনি। মমতা জানিয়েছেন, ২০২২ সালের পরিসংখ্যান বলছে, গোটা দেশে ধর্ষণের ঘটনায় ৭৬ শতাংশ ক্ষেত্রে পুলিশ চার্জশিট জমা দিয়েছে। কিন্তু মাত্র ২.৬ শতাংশ ক্ষেত্রেই অপরাধী দোষী সাব্যস্ত হয়েছে। অর্থাৎ সমস্যা রয়েছে, সেটা মানতে হবে বলে মত মমতার।
আর জি করের ঘটনায় বাংলাকে বদনাম করা হচ্ছে বলেও অভিযোগ করেন মমতা। তিনি বলেন, "বাংলাকে আজ যাঁরা বদনাম করছেন, বাংলার সম্মান নিয়ে ভাবুন। বাংলা মাকে বদনাম করলে, আপনার গায়েও লাগবে, আমার গায়েও লাগবে। আপনারা আমাকে যেভাবে অসম্মান করেছেন, আমরা কিন্তু প্রধানমন্ত্রীকে করিনি।" তাঁর সরকার কেন্দ্রীয় আইনের ফাঁকগুলি পূরণে উদ্যোগী হয়েছে বলে জানান মমতা। বিরোধীরা যেভাবে তাঁর পদত্যাগের দাবিতে সরব হয়েছেন, উত্তরপ্রদেশ, গুজরাত, হরিয়ানা, মহারাষ্ট্রে একের পর এক ঘটনায় প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগ ক'জন চেয়েছেন, প্রশ্ন তোলেন তিনি। বিধানসভায় দাঁড়িয়ে প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগও দাবি করেন তিনি।