দীপক ঘোষ, অরিত্রিক ভট্টাচার্য, শিবাশিস মৌলিক, কলকাতা : শিক্ষক দিবসের দিন, বিরোধীদের একের পর এক নরমে গরমে বার্তা দিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সিপিএমকে আক্রমণ করতে গিয়ে, বাম আমলেও নিয়োগ দুর্নীতির অভিযোগ করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। টেনে আনেন বুদ্ধবাবুর জমানার প্রসঙ্গ।
তিনি বলেন, ' সিপিএম আমলের কাগজ একটাও নেই। ফাইল পাইনি। কাগজ পাইনি। আলমারি পাইনি। কিছু খুঁজে পাইনি। কাগজ আছে বলেই ভুল ধরা পড়ে। "
' বুদ্ধদেববাবুর কথা মনে আছে? '
শিক্ষক নিয়োগে দুর্নীতির অভিযোগকে হাতিয়ার করে, তৃণমূল সরকারের বিরুদ্ধে পথে নেমেছে সিপিএম। আন্দোলনকারীদের পাশে দাঁড়িয়েছেন প্রবীণ নেতারা। আর রাস্তায় আন্দোলনের ঝড় তুলেছে সিপিএমের ছাত্র ও যুব সংগঠন। এই প্রেক্ষাপটে সিপিএমকে পাল্টা জবাব দিতে গিয়ে, প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যর প্রসঙ্গ টেনে আনলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, ' বুদ্ধদেববাবুর কথা মনে আছে? চোরেদের মন্ত্রিসভায় আর কাজ করব না। বিনয় চৌধুরী বলেছিলেন, গভর্মেন্ট অফ দ্য কন্ট্রাক্টর, ফর দ্য কন্ট্রাক্টর, বাই দ্য কন্ট্রাক্টর। আমার একটু একটু মনে পড়ে !'
সুজনের জবাব
এর জবাব দিতে দেরি করেননি বাম নেতা সুজন চক্রবর্তী । বলেন, ২০১১ সালের পর যে সিপিএম ক্ষমতায় আসবে না, তা তো জানা ছিল না। তাই কেন কাগজ সরাবে ? বুদ্ধবাবুই তো ফের মুখ্যমন্ত্রী হতে পারতেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এসে বসে পড়লেন ! বরং মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আমলেই স্বরাষ্ট্র দফতরে আগুন লেগেছে, তাঁর অস্বস্তির কারণ হতে পারে, এমন ফাইলগুলি পুড়ে ছাই হয়ে গিয়েছে।'
ভুল করাটাও একটা অধিকার : মমতা
রাজ্য সরকারি একাধিক চাকরির ক্ষেত্রে, অনিয়ম-দুর্নীতি ও স্বজনপোষণের অভিযোগে বিদ্ধ তৃণমূল সরকার। এই পরিস্থিতিতে ফের একবার কোনটা ‘দুর্নীতি’, আর কোনটা ‘ভুল’...সেই ফারাকের দিকে ইঙ্গিত করে, ব্যাখ্যা দেওয়ার চেষ্টা করতে দেখা যায় মুখ্যমন্ত্রীকে। ' নেতাজি সুভাষ চন্দ্র বসু বলেছিলেন, রাইট টু মেক ব্লান্ডার্স। ভুল করাটাও একটা অধিকার। আর অশোক গাঙ্গুলি, আমার ব্যক্তিগতভাবে তাঁর সাথে সুসম্পর্ক নেই, কিন্তু তিনি একটা রায় দিয়েছিলেন কোর্টে। যদি কোনও ক্ষেত্রে দেখ, কেউ একটা ভুল করেছে, একটা ভুল হয়ে গেছে, কেউ একটা ডিপ্রাইভড হয়েছে, তাহলে তোমরা এটাকে রেকটিফাই করে নাও। সিপিএমের আমলে বড় একটা স্বাস্থ্য কেলেঙ্কারি হয়েছিল, এবং উনি সেটাকে বাঁচিয়ে দিয়েছিলেন।'
সব মিলিয়ে নিয়োগ-দুর্নীতি নিয়ে, দোষারোপ-পাল্টা দোষারোপে ক্রমশ চড়ছে তরজার পারদ।