বসিরহাট: রাজ্যের প্রশাসক হিসেবে আসীন হলেও, মাটির কাছাকাছি থাকাই যে পছন্দ, তা বার বার ব্যক্ত করেছেন। নিজেকে 'স্ট্রিট ফাইটার' বলে উল্লেখ করেছেন নিজেই। তার সঙ্গে সাযুজ্য রেখেই কখনও রাস্তায় চায়ের দোকানে ঢুকে রান্নায় লেগে পড়েন। কখনও আবার নিজেই ভাজতে শুরু করেন চপ। অচেনা লোকের বাড়িতে ঢুকে মোমো বানাতেও বসে পড়েন। বসিরহাট সফরেও সেই ভূমিকাতেই দেখা গেল বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে (Mamata Banerjee)। বুধবার সেখানে উঠোনে বসে ভাত খাওয়া থেকে, চাটাই, ঝাঁটা পর্যন্ত বাঁধতে দেখা গেল তাঁকে। 


নদীমাতৃক সুন্দরবনে পর্যটনের সম্ভাবনা খতিয়ে দেখতে লঞ্চ ভ্রমণ করলেম মুখ্যমন্ত্রী। টাকি থেকে জলপথে ঘুরে দেখলেন মিনি সুন্দরবন। শীতবস্ত্র বিলি থেকে, স্কুলে গিয়ে কচিকাঁচাদের সঙ্গে কথাও বলেন। তার ফাঁকেই গৃহস্থের বাড়িতে ঢুকে দুপুরের খাওয়া সারলেন উঠোনে বসে (North 24 Parganas News)। 


এ দিন মমতার সঙ্গে বসিরহাটে ছিলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Abhishek Banerjee) মা লতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও (Lata Banerjee)। হাসনাবাদের চক খাঁপুকুর প্রাথমিক বিদ্যালয় পরিদর্শন করে সেখানে শীতবস্ত্র বিলি করেন মুখ্যমন্ত্রী। এর পর  নমিতা মণ্ডল নামের এক বাসিন্দার বাড়িতে ঢোকেন। সেখানে সকলের সঙ্গে চাটাই এবং ঝাঁটা বাঁধায় হাত লাগান মুখ্যমন্ত্রী (Basirhat News)। 


কিন্তু ভর দুপুরে গৃহস্থের বাড়ি থেকে কেউ অভুক্ত চলে যান কী করে! তাই মুখ্যমন্ত্রীকে দু'মুঠো খেয়ে যেতে হবে বলে আবদার জুড়ে দেন নমিতা। তা ফেলতে পারেননি মমতা। তাই উঠোনেই বসে পড়েন তিনি। স্টিলের থালায় ভাত-ট্যাংরা মাছের ঝাল তাঁকে খেতে দেন নমিতা। হাতে থালা ধরে তাই তৃপ্তিভরে খেতে শুরু করেন মুখ্যমন্ত্রী। তাতে আবার শশোব্যস্ত হয়ে পড়েন নমিতার পড়শি এক বৃদ্ধা। তড়িঘড়ি নিজের বাড়ি থেকে আলু-পটলের তরকারি বাটিতে নিয়ে হাজির হন তিনি। তাও ভাতে মেখে খান মমতা।


এর আগেও, একাধিক বার এ ভাবেই গৃহস্থের বাড়িতে হাজির হয়েছেন মমতা। তবে পঞ্চায়েত নির্বাচনের (Panchayat Elections 2023) আগে, দুর্নীতি, গাফিলতির অভিযোগে যখন লাগাতার সরকারকে কোণঠাসা করার চেষ্টা চালাচ্ছেন বিরোধীরা, সেই সময় এ ভাবে মানুষের মধ্যে মমতার মিশে যাওয়াকে জনসংযোগের অংশ হিসেবেই দেখছে রাজনৈতিক মহল। তবে নির্বাচন বলে নয় শুধু, বরাবরই এ ভাবে সকলকে চমকে দিয়েছেন মমতা। এমনকি জেলা সফরে গিয়ে যেচে বাসিন্দাদের সঙ্গে আলাপ, তাঁদের বাড়িতে যাওয়ার নজিরও রয়েছে তাঁর।