কৃষ্ণেন্দু অধিকারী, কলকাতা : বন্য়া পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে জেলায় জেলায় ঘুরছেন মুখ্যমন্ত্রী। এই পরিস্থিতিতে, বৃহস্পতিবার পাঁশকুড়ায় গিয়ে DVC-র সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তিনি। করেছেন চক্রান্তের অভিযোগও। আর এবার প্রধানমন্ত্রীকে ৪ পাতার চিঠি লিখলেন। রাজ্যের বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে প্রধানমন্ত্রীকে (PM Narendra Modi) চিঠি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Mamata Banerjee)।


প্রধানমন্ত্রীকে লেখা চিঠিতে মুখ্যমন্ত্রী উল্লেখ করেছেন, 'অনিয়ন্ত্রিত, একতরফা এবং অভূতপূর্ব জল ছাড়ার ফলে রাজ্যে দুর্যোগ। অতীতে এই পরিমাণ জল ডিভিসি থেকে ছাড়া হয়নি। ২০০৯-এর পর দামোদর নিম্ন অববাহিকা ও সংলগ্ন অঞ্চল সবচেয়ে বড় বন্যার মুখোমুখি হয়েছে। এর ফলে রাজ্যের ৫০ লক্ষ মানুষ বন্যা দুর্গত।' এর পাশাপাশি তাঁর অভিযোগ, 'ডিভিসি-র চেয়ারম্যানকে ১৬ সেপ্টেম্বর ফোন করে অবস্থা সম্পর্কে জানানো হয়েছিল। তারপরেও ১৭ সেপ্টেম্বর ভোরে আড়াই লক্ষ কিউসেক জল ছাড়া হয়।' এই পরিমাণ জল তখনই না ছেড়ে ঠেকানো যেত বলে চিঠিতে উল্লেখ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী।


বুধবারই, ম্য়ান মেড বন্য়ার পাশপাশি DVC-র বিরুদ্ধে অভিযোগ শোনা গেছিল মুখ্যমন্ত্রীর মুখে। বৃহস্পতিবার, এক ধাপ এগিয়ে, DVC-র সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করার হুঁশিয়ারি দেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, "DVC-র সঙ্গে সব সম্পর্ক আমি তো ছিন্ন করবই। কারণ অনেক হয়েছে। অনেক হয়েছে। পুরো জল ছাড়া। বৃষ্টির জন্য এই বন্যা হয়নি। এটা বৃষ্টির জন্য নয়। হ্য়াঁ ৪-৫ দিন বৃষ্টি হয়েছে। কিন্তু, আমরা সেটা সহ্য করতে পারি। আমাদের অনেক পরিকাঠামো এবং পদ্ধতি আছে। কিন্তু, আমি বরদাস্ত করব না, মানুষ বরদাস্ত করবে না, ৫ লক্ষ কিউসেকের বেশি জল। যা DVC এবং অন্য়ান্য জায়গা থেকে ছাড়া হয়েছে। DVC-র ক্ষমতা ১০০ % থেকে ৩৬%-এ নেমে এসেছে, আমি যতদূর জানি।"


বুধবার হুগলির আরামবাগ, গোঘাট, পুরশুড়ার পর বৃহস্পতিবার, মেদিনীপুর সার্কিট হাউস থেকে সড়কপথে পূর্ব মেদিনীপুরের পাঁশকুড়া পৌঁছন মুখ্যমন্ত্রী। বন্য়া পরিস্থিতি দেখে ক্ষোভ উগরে দেন কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে। এই পরিস্থিতিতে আজ প্রধানমন্ত্রীকে চার পাতার চিঠি লিখেছেন মুখ্যমন্ত্রী। তাতে 'ম্য়ান মেড' বন্যার অভিযোগ তোলার পাশাপাশি DVC-র সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করার কথাও উল্লেখ করা হয়েছে। চিঠিতে তিনি লিখেছেন, মাইথন ও পাঞ্চেৎ থেকে ৫ লক্ষ কিউসেক জল ছাড়া হয়েছে। ৮টি জেলা তাতে বন্যা কবলিত হয়েছে। পূর্ব বর্ধমান, পশ্চিম বর্ধমান, বাঁকুড়া, বীরভূম, হাওড়া, পশ্চিম মেদিনীপুর, পূর্ব মেদিনীপুর এবং হুগলি। তাতে ৫০ লক্ষ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন বলে উল্লেখ করেছেন মমতা। এর পাশাপাশি কোন পরিস্থিতি তাঁকে ডিভিসির সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করার কথা বলা হয়েছে তার ব্যাখ্যা দিয়েছেন তিনি। এর পাশাপাশি ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য কেন্দ্রীয় অনুদানের দাবি জানিয়েছেন তিনি।