কলকাতা: তৃণমূল নেত্রীর ডাকা বৈঠকে গরহাজির দলের 'বিদ্রোহী' বিধায়ক। কালীঘাটের বৈঠকে এলেন না ইসলামপুরের তৃণমূল বিধায়ক আব্দুল করিম চৌধুরী। 'মমতা বন্দ্য়োপাধ্যায়কে দেখেই তৃণমূলে যোগ দিয়েছিলাম। তৃণমূল নেত্রী আমার সঙ্গে সম্পর্ক রাখেন না। নিজেকে বিদ্রোহী বলে ঘোষণা করেছি। ইসলামপুরের মানুষের হয়ে কথা বলব'। কালীঘাটের বৈঠক এড়িয়ে মন্তব্য রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী আব্দুল করিম চৌধুরী। 

দুর্নীতির অভিযোগ, তা নিয়ে বিরোধীদের টানা আন্দোলন এবং সাগরদিঘির হারের আবহে,  আজ কালীঘাটে বৈঠক ডেকেছেন মমতা বন্দ্য়োপাধ্য়ায়। সেখানে কী নিয়ে আলোচনা হতে পারে, তা নিয়ে নানা জল্পনা ঘুরপাক খাচ্ছে। সূত্রের খবর, দুর্নীতিতে অভিযুক্তদের পুরোপুরি ছেঁটে ফেলার সিদ্ধান্ত থেকে বিরোধীদের আক্রমণের মোকাবিলা করতে বিশেষ কোনও রণকৌশল নিয়ে বৈঠকে আলোচনা হতে পারে। সংখ্য়ালঘু ভোট ফেরাতে কি বিশেষ কোনও স্ট্র্য়াটেজি নেওয়া হবে?  বাম-কংগ্রেস জোটে চিড় ধরাতে নেওয়া হবে নতুন কোনও রণকৌশল? তৃণমূল সূত্রে দাবি,বৈঠকে ফের দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্সের বার্তা দিতে পারেন তৃণমূলনেত্রী। 

ফের বিদ্রোহী ইসলামপুরের তৃণমূল বিধায়ক আব্দুল করিম চৌধুরী। আবারও, দলের বিরুদ্ধে উগরে দিলেন ক্ষোভ। নিশানা করলেন দলীয় নেতৃত্বকে। দুয়ারে পঞ্চায়েত ভোট। তার আগে, স্কুলে নিয়োগ দুর্নীতি থেকে ১০০ দিনে কাজ, প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনায় দুর্নীতির অভিযোগে বিরোধীদের নিশানায় পড়তে হচ্ছে তৃণমূলকে। এই অবস্থায়, দলের রণকৌশল ঠিক করতে বিধায়ক-মন্ত্রী, সাংসদ-নেতাদের নিয়ে যখন কালীঘাটে হাইভোল্টেজ বৈঠক করছে তৃণমূল নেতৃত্ব, তখন এখান থেকে প্রায় ২২০ কিলোমিটার দূরে করিমপুরে দলের বিরুদ্ধে কার্যত কামান দাগলেন

রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী ও ইসলামপুরের তৃণমূল বিধায়ক আব্দুল করিম চৌধুরী। যিনি আবার, তৃণমূলের সহ-সভাপতি পদেও রয়েছেন।  এদিনের কালীঘাটের বৈঠকে উপস্থিত না থাকার, ব্যাখ্যাও দিয়েছেন তিনি।

আব্দুল করিম চৌধুরী আরও বলছেন, আমি তো কোনও চিঠি পাইনি, আর কোনও হোয়াট্যস অ্যাপের মেসেজও নাই, এসএমএসও নেই। সুব্রত বক্সী যে তৃণমূলের সভাপতি আছেন, বলেছিল আমাকে যে ওনাকে মেনে চলতে হবে, আমাদের রাজ্য কমিটির সিদ্ধান্ত, আমার শত্রুকে মেনে নেব আমার এলাকায় মশাই।পঞ্চায়েত নির্বাচনে MLA ভিত্তিক সংগঠন করে আমি লড়ব। এই সন্ত্রাসবাদীকে আমি মানব না।এই সেদিনের ঘটনায়, ও আমার একটা সমর্থককে গুলি করে মেরে দিল।

মিটিং হবে, আমাদের কথা তো শোনা হবে না। সেখানে সুব্রত বক্সি বলবে, যে দলের কথা, দল বড়, ব্যক্তি বড় নয়। আরে, আমি তো আজ ৫৪-৫৫ বছর ধরে MLA আছি, ৫৪-৫৫ বছর ধরে রাজনীতি করে আসছি, এখন ব্যক্তি বড় নয়, দল বড়, এই বলে আমাকে শাসাবেন আপনারা? আমি এটা মানব না। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আজ পর্যন্ত আমার ব্যাপারটায় কোনও প্রোটেকশন দিল না। আমার নেত্রী যাঁকে দেখে আমি পার্টিটা করলাম। যাঁকে দেখে আমি তৃণমূলে আসলাম। কোনও খোঁজ খবর নেন না আমার। জিজ্ঞেস করেন না করিমদা কেমন আছেন? কোনওদিন কোনও খবর নেয় না। ৪-৫ বছর ধরে আমার সঙ্গে ওনার কোনও সম্পর্ক নেই।

একদিকে যখন দলের বিরুদ্ধে খড়গহস্ত বিধায়ক, কিন্তু গুরুত্ব দিতে নারাজ তৃণমূল। শুক্রবার সাংবাদিক বৈঠকে সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যা বলেন, এত বড় দলে বিচ্ছিন্নভাবে কেউ মতামত দিল, বৃহৎ সভার পর প্রতিক্রিয়া দেওয়ার দরকার নেই। সূত্রের দাবি, ইসলামপুরের প্রাক্তন বিধায়ক ও বর্তমান জেলা তৃণমূল সভাপতি কানাইয়ালাল আগরওয়াল এবং আব্দুল করিম চৌধুরীর গোষ্ঠীর বিবাদ দীর্ঘদিনের।