কলকাতা: উপাচার্য নিয়োগের ইস্যুতে রাজ্যপালের সঙ্গে রাজ্যের সংঘাত তুঙ্গে। মূলত সংঘাতের আবহেই সদ্য বাকি ১৬টি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য (VC) নিয়োগ করেছেন রাজ্যপাল (Governor)। আর এরপরেই গতকাল তোপ দেগেছেন ব্রাত্য বসু। (Bratya Basu) আর এবার ২৪ ঘণ্টা পার হতেই শিক্ষক দিবসে তীব্র আক্রমণ শানিয়ে বক্তব্য রাখলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। (Mamata Banerjee)
মমতা এদিন বলেন, 'হঠাৎ মধ্যরাতে যাদবপুরের উপাচার্য বদল হয়ে গেল। একজন প্রাক্তন বিচারপতিকে করে দেওয়া হল রবীন্দ্রভারতীর উপাচার্য। পুরো ব্যবস্থাকে অচল করে দেওয়ার চেষ্টা চলছে। কোনও বিশ্ববিদ্যালয় যদি রাজ্যপালের কথা শুনে চলে আমি অর্থনৈতিক বাধা তৈরি করব। দেখব রাজ্যপাল কীভাবে কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের বেতন দেন। আমরা চ্যালেঞ্জ করছি। আমরা বিল পাঠাচ্ছি উনি ফেরত পাঠাচ্ছেন না। সংবিধান অনুসারে এটা উনি করতে পারেন না। আর্থিক বিল ছাড়া আর কিছু রাজ্যপাল ফেরত পাঠাতে পারেন না।'
এরপরেই হুঁশিয়ারি দিয়েই মমতা বলেন,'দরকার হলে আমি রাজভবনের সামনে ধর্না দেব। শিক্ষাব্যবস্থাকে আমি ধ্বংস হতে দেব না। আমরা আইনের পথেও যাব, আশা করি আইন সুবিচার দেবে। জোর করে আমাদের আটকানো যাবে না। বাংলাকে নিয়ে অকারণ খেলা চলবে না। শিক্ষকদের বেতন বন্ধ হলে উনি দেবেন ?' প্রশ্ন তোলেন মমতা।
মুখ্যমন্ত্রী এদিন আরও বলেন, 'বিধানসভা পর্যন্ত রাজ্যপাল ডাকতে দেন না। ওনার মনে রাখা দরকার রাজভবনের টাকাও আমার রাজ্যের মানুষ দেয়। ভয় কেউ পাবেন না। উনি অ্যাপয়েন্টমেন্ট লেটার দেবেন কিন্তু মাইনে তো দিতে পারবেন না। প্রাক্তন উপাচার্যদের বলছি আপনারাই থাকবেন, কার কী করার আছে আমরা দেখছি। অন্যায়ের বিরুদ্ধে আন্দোলনে সবাই আমাদের পাশে থাকবেন।' ব্রাত্য বসু গতকাল স্পষ্ট বলেছেন, ' আচার্য অর্থাৎ রাজ্যপাল সংবিধান মানছেন না। বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনও বিধি আচার্য লঙ্ঘন করতে পারেন না। বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন লঙ্ঘন করছেন রাজ্যপাল। ইন্ডিয়া জোটকে এরা ভয় পাচ্ছে। এদের মনে হচ্ছে ইন্ডিয়া জোট বিপদে ফেলতে পারে।'
আরও পড়ুন, ধূপগুড়িতে BJP প্রার্থীকে হুমকির অভিযোগ, অতিরিক্ত পুলিশ সুপারের বিরুদ্ধে কমিশনে বিজেপি
উল্লেখ্য, রাজ্যের বাকি ১৬টি বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তর্বর্তী উপাচার্য নিয়োগ করেছেন রাজ্যপাল। এর মধ্যে রয়েছে, প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়, ওয়েস্টবেঙ্গল স্টেট ইউনিভার্সিটি, উত্তরবঙ্গ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়, পশ্চিমবঙ্গ প্রাণি ও মৎস্যবিজ্ঞান বিশ্ববিদ্যালয়, রানি রাসমণি গ্রিন বিশ্ববিদ্যালয়, দার্জিলিং বিশ্ববিদ্যালয়, বিশ্ববাংলা বিশ্ববিদ্যালয়, পশ্চিমবঙ্গ মহাত্মা গান্ধী বিশ্ববিদ্যালয়, সাধু রামচাঁদ মুর্মু বিশ্ববিদ্যালয়, হরিচাঁদ গুরুচাঁদ বিশ্ববিদ্যালয়, কন্যাশ্রী বিশ্ববিদ্যালয়, কোচবিহার পঞ্চানন বর্মা বিশ্ববিদ্যালয়, মৌলানা আবুল কালাম আজাদ ইউনিভার্সিটি অফ টেকনোলজি, নেতাজি সুভাষ মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় ও আলিপুরদুয়ার বিশ্ববিদ্যালয়।