সুকান্ত মুখোপাধ্যায় ও সৌভিক মজুমদার, কলকাতা: টাকার বিনিময়ে ৩২৫ জনের নিয়োগ হয়েছিল প্রাথমিকে (Primary Recruitment)। তার নেপথ্যেও ছিলেন মানিক ভট্টাচার্য (Manik Bhattacharya)। আজ আদালতে চাঞ্চল্যকর এই দাবি করল ইডি (ED)। এই মামলায় মানিকের পরিবারের কয়েকজন সদস্যও ইডির স্ক্যানারে। অন্য দিকে, আজও ফের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের (Justice Abhijit Ganguly) ক্ষোভের মুখে পড়ে প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ।


মানিকের পরিবারের কয়েকজন সদস্যও ইডির স্ক্যানারে


এক দিকে যখন চাকরি চেয়ে চাকরিপ্রার্থীদের জুটেছে পুলিশের কামড়, ঘুষি জুটেছে, রাত কাটাতে হয়েছে লালবাজারে, সেই সময়ই নিয়োগ নিয়ে নিত্য নতুন কুকীর্তির অভিযোগ উঠে আসছে। কোনও ভাবেই শেষ হচ্ছে না দুর্নীতির তদন্ত এবং তাকে ঘিরে থাকা রহস্য।

বৃহস্পতিবার প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের অপসারিত সভাপতি ও তৃণমূল বিধায়ক মানিক ভট্টাচার্যকে আদালতে পেশ করে ইডি চাঞ্চল্যকর দাবি করেছে যে, টাকার বিনিময়ে ৩২৫ জনকে প্রাথমিক শিক্ষকের চাকরি পাইয়ে দেওয়ার তথ্য হাতে এসেছে তদন্তকারীদের, যার নেপথ্যে আছেন সেই মানিক।


ইডির আইনজীবী ফিরোজ এডুলজি এদিন আদালতে জানান, এই ৩২৫ জন ২০১৪ সালে টেট দেন। ইডির দাবি, তদন্তে উঠে এসেছে যে, টাকার বিনিময়ে বিভিন্ন মধ্যস্থতাকারীদের মাধ্যমে ওই চাকরি প্রার্থীদের পাস করাতে সাহায্য করেছিলেন মানিক ভট্টাচার্য।


সেই মধ্যস্থতাকারীদের বিরুদ্ধেও তদন্ত চলছে। মানিক ভট্টাচার্যের ভূমিকা খতিয়ে দেখতে গিয়ে, এখন ইডির আতসকাচের তলায়। তাঁর ভাই, জামাই ও জামাইয়ের বাবাও। 


আরও পড়ুন: Suvendu Adhikari: চাকরিপ্রার্থীকে কামড়ে দেওয়া পুলিশকর্মী তাঁর নবান্ন অভিযানেও ছিলেন, দাবি শুভেন্দুর


আদালতে ইডি দাবি করেছে, এই তিন জনের অ্যাকাউন্টেই বেআইনি লেনদেনের হদিশ পাওয়া গেছে। তাই তাঁদেরও জিজ্ঞাসাবাদ
করতে চায় তারা। এ দিন যে কোনও শর্তে জামিনের জন্য আবেদন জানান পর্ষদের অপসারিত সভাপতি ও তৃণমূল বিধায়ক মানিক ভট্টাচার্য। কিন্তু,আদালত সেই আবেদন গ্রাহ্য করেনি। ২৪ নভেম্বর অবধি জেল হেফাজতে পাঠানো হয়েছে মানিক ভট্টাচার্যকে।


অন্য দিকে, বুধবারের পর বৃহস্পতিবার ফের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের ক্ষোভের মুখে পড়ল প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ।  এ দিনও, স্কুলে নিয়োগ বন্ধ করে দেওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়। বুধবার, প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের আইনজীবীর উদ্দেশে বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় বলেছিলেন, "প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ বন্ধুত্বপূর্ণ আচরণ করছে না। আমি বলেছিলাম, নিয়োগ প্রক্রিয়ায় হস্তক্ষেপ করব না। সেই মন্তব্য আমি প্রত্যাহার করছি। এরকম চলতে থাকলে নিয়োগ বন্ধ করে দেব।"


তখন পর্ষদের আইনজীবী আশ্বাস দেন, শুক্রবারের মধ্যে কাজ হয়ে যাবে। কিন্তু, বৃহস্পতিবার পর্ষদকে চার দিন সময় বেঁধে দিলেন বিচারপতি। তিনি বলেছেন, সোমবার পর্যন্ত দেখা হবে।  নির্দেশ কার্যকর না হলে পরীক্ষা বন্ধ করে দেব।


অন্য একটি মামলায় আবার ২০১৪-র টেট চাকরিপ্রার্থীদের আন্দোলনের জন্য অনুমতি


 অন্য একটি মামলায় আবার ২০১৪-র টেটের চাকরিপ্রার্থীদের গান্ধী মূর্তির পাদদেশে আন্দোলনের জন্য অনুমতি দিয়েছে হাইকোর্ট। ৪০ দিনের জন্য তাঁদের এই অনুমতি দিয়েছেন বিচারপতি রাজশেখর মান্থা।