নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় পার্থ চট্টোপাধ্যায়, অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ের পর, এবার প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের প্রাক্তন সভাপতি মানিক ভট্টাচার্যকে গ্রেফতার করল ইডি। প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের অপসারিত সভাপতি মানিক ভট্টাচার্যর হোয়াটসঅ্যাপ চ্যাটে সন্দেহজনক নাম মিলেছে। দাবি ইডি সূত্রে।

কী সেই নাম 
প্রাথমিক টেট দুর্নীতি মামলায় গতকাল সিজিও কমপ্লেক্সে ১০ ঘণ্টা জিজ্ঞাসাবাদ করা হয় মানিক ভট্টাচার্যকে। ইডি সূত্রে খবর, বয়ানে অসঙ্গতি ও তদন্তে সহযোগিতা না করায় গভীর রাতে গ্রেফতার করা হয় প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের অপসারিত সভাপতিকে। ইডির দাবি, উদ্ধার করা হয়েছে মানিকের হোয়াটস অ্যাপ হিস্ট্রি। তাতে দেখা গিয়েছে আরকে (RK ) বলে সেভ করা এক ব্যক্তির সঙ্গে বার্তা প্রেরণ ও গ্রহণ হয়েছে। তাতে নিয়োগের ফাইনাল লিস্ট সংক্রান্ত কিছু কথোপকথন হয়েছে বলেও দাবি। সেখানে নিয়োগের ফাইনাল অ্যাপ্রুভড তালিকার উল্লেখ রয়েছে, যাতে নাকি চূড়ান্ত মান্যতা দিয়েছেন DD। কে এই ডিডি ? না , ও এ নিয়ে মানিক ভট্টাচার্য মুখ খোলেননি। এছাড়াও মানিক ভট্টাচার্যেক গুগল ড্রাইভ সার্চ করে এরকম কারচুপি করা ফাইনাল লিস্ট ডকুমেন্টও মিলেছে বলে ইডির দাবি। 


১৪ ঘণ্টা জিজ্ঞাসাবাদ
গত ২৭ জুলাই প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের অপসারিত সভাপতিকে ১৪ ঘণ্টা জিজ্ঞাসাবাদ করে ইডি। যাদবপুরে তাঁর দু’টি ফ্ল্যাটে তল্লাশিও চলে। ইডি সূত্রের খবর, মানিকের বাড়িতে উদ্ধার হওয়া সিডি-তে পাওয়া যায় ২৬৯ জন চাকরিপ্রার্থীর নাম ও তথ্য। যাঁদের বেআইনিভাবে বাড়তি ১ নম্বর করে দেওয়া হয়েছিল। 


নিয়োগ দুর্নীতিতে পার্থ-অর্পিতা-সহ ৮ জনের বিরুদ্ধে দেওয়া ED’র চার্জশিটে প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রীর জড়িত থাকার প্রসঙ্গ ব্যাখ্যা করতে গিয়েও মানিক ভট্টাচার্যের যোগসূত্রের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। নিয়োগকাণ্ডে প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রীর জড়িত থাকার প্রসঙ্গ ব্যাখ্যা করতে গিয়ে চার্জশিটের ছত্রে ছত্রে মানিক ভট্টাচার্যের যোগসূত্রের কথা উল্লেখ করেছে ইডি।


তৃণমূল জমানায় প্রায় একদশক ধরে প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের সভাপতি ছিলেন মানিক ভট্টাচার্য। প্রাথমিক টেট-দুর্নীতি মামলায় তাঁকে সভাপতির পদ থেকে অপসারণের নির্দেশ দেন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। ডিভিশন বেঞ্চে ধাক্কা খাওয়ার পর, হাইকোর্টের নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে সুপ্রিম কোর্টে যান মানিক। সর্বোচ্চ আদালতে প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের অপসারিত সভাপতিকে নিয়োগ দুর্নীতিকাণ্ডের কিংপিন বলে দাবি করে CBI। এরপরই ১০ অক্টোবর পর্যন্ত মানিক ভট্টাচার্যর রক্ষাকবচের মেয়াদ বাড়ায় সুপ্রিম কোর্ট।