সৌভিক মজুমদার, কলকাতা : সুপ্রিম কোর্টে মিলল না স্বস্তি। আপাতত ইডি হেফাজতেই থাকতে হচ্ছে প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের অপসারিত সভাপতি ও তৃণমূল বিধায়ক মানিক ভট্টাচার্যকে। এখনই এ নিয়ে হস্তক্ষেপ করল না সুপ্রিম কোর্ট। ইডি-র গ্রেফতারির বিরুদ্ধে সর্বোচ্চ আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিলেন মানিক। বুধবার বিচারপতি অনিরুদ্ধ বসুর ডিভিশন বেঞ্চ ইডি-কে নোটিস দিতে বলেছে।


মক্কেলের মুক্তি চান আইনজীবী
মানিক ভট্টাচার্যের আইনজীবী সুপ্রিম কোর্টে আবেদন করেন। মানিক-পক্ষের দাবি ছিল, তাঁকে ইডি যেভাবে গ্রেফতার করেছে তা ঠিক নয় ৷ সেই সঙ্গে তিনি মানিক ভট্টাচার্যের শারীরিক অসুস্থতার কথা তুলে ধরেন। তিনি বলেন তৃণমূল বিধায়কের মধুমেহ রোগ আছে। তাঁকে অনেক ওষুধপত্র খেতে হয়। মানিক ভট্টাচার্যকে করোনারি বাইপাস করাতে হয়েছে সম্প্রতি। শীর্ষ আদালতে এই যুক্তি দেখিয়ে নিজ মক্কেলের মুক্তি চান আইনজীবী। আগামী শুক্রবার এই মামলার শুনানির সম্ভাবনা। 


২০১১ সালে রাজ্যে তৃণমূল ক্ষমতায় আসার পর থেকেই প্রায় ১০ বছরের বেশি সময় প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের সভাপতি পদে ছিলেন মানিক ভট্টাচার্য। গত বিধানসভা নির্বাচনে নদিয়ার পলাশিপাড়া বিধানসভা কেন্দ্র থেকে তৃণমূলের তরফে জিতে বিধায়ক হন মানিক ভট্টাচার্য। টেট-দুর্নীতি মামলায় চলতি বছরের ২০ জুন মানিককে প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের সভাপতির পদ থেকে সরিয়ে দেন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। ২২ জুলাই মানিকের ফ্ল্যাটে হানা দেন ইডি-র অফিসাররা। ২৭ জুলাই, মানিক ভট্টাচার্যকে প্রথমবার তলব করে ইডি। অগাস্ট মাসে প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের অপসারিত সভাপতিকে ফের তলব ইডির। 


এরই মধ্যে ২৫ অগাস্ট মানিকের বিরুদ্ধে লুক আউট নোটিস জারি করে সিবিআই। ২ সেপ্টেম্বর ডিভিশন বেঞ্চে ধাক্কা খান মানিক। ২৭ সেপ্টেম্বর সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হন পলাশিপাড়ার তৃণমূল বিধায়ক। ১০ অক্টোবর পর্যন্ত  রক্ষাকবচের মেয়াদ বাড়ায় সর্বোচ্চ আদালত। ফলে রক্ষাকবচের দরুণ সিবিআই তাঁকে গ্রেফতার করতে পারে না। কিন্তু ১১ অক্টোবর গ্রেফতার করে ইডি। তারপরই মানিকের আইনজীবী দৌড়ান সুপ্রিম কোর্টে। 


অন্যদিকে, নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় মানিক ভট্টাচার্য সম্পর্কে চাঞ্চল্যকর দাবি ইডি-র। আদালতে ইডি-র দাবি, টাকার বিনিময়ে চাকরি-বিক্রির অন্যতম মূল মাথা প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের প্রাক্তন সভাপতি। ২০১১-র পর মানিকের আমলে ৫৮ হাজারেরও বেশি নিয়োগ হয়েছে। এই পরিসংখ্যান পেশ করে কী পরিমাণ দুর্নীতি হয়েছে, সেটাই আদালতে তুলে ধরার চেষ্টা করেন ইডি-র আইনজীবী। আদালতে ইডি-র দাবি, মানিকের বাড়ি থেকে যে সমস্ত নথি ও ডিজিটাল তথ্যপ্রমাণ বাজেয়াপ্ত হয়েছে, তাতে মিলেছে নিয়োগ দুর্নীতিকাণ্ডে বিপুল পরিমাণ টাকা নয়ছয় হয়েছে।