কলকাতা: বিধানসভায় মণিপুরের হিংসা বনাম বাংলার সন্ত্রাস (Manipur Violence)। মণিপুর নিয়ে বিধানসভায় নিন্দা প্রস্তাব আনতে চলেছে তৃণমূল (TMC)। বিরোধীহীন 'সর্বদল' বৈঠকে নেওয়া হয় এই সিদ্ধান্ত।পাল্টা পঞ্চায়েত ভোটে হিংসা (Panchayat Poll Violence) নিয়ে সুর চড়াচ্ছে বিজেপি (BJP)। পঞ্চায়েত নির্বাচনের হিংসা নিয়ে আনা হবে মুলতুবি প্রস্তাব। আলোচনা চেয়ে কালই মুলতুবি প্রস্তাব আনছে বিজেপি।
মণিপুরের পরিস্থিতি নিয়ে রাজ্য বিধানসভায় আলোচনা হবে। সর্বদল বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হয়েছে। তবে বয়ান কী হবে তা নিয়ে এখনও কোনও সিদ্ধান্ত হয়নি। খবর সূত্রের। এদিন অধিবেশন শুরুর আগে বিধানসভায় সর্বদল বৈঠক ডাকা হয়। তৃণমূল ছাড়া বৈঠকে অংশ নেয়নি কোনও দল। বৈঠক বয়কট করেন বিজেপি বিধায়করা। বিধানসভার সর্বদল বৈঠকে ছিলেন না একমাত্র আইএসএফ বিধায়ক নৌশাদ সিদ্দিকিও। পাবলিক অ্যাকাউন্টস কমিটির চেয়ারম্যান পদ নিয়ে বিতর্ক শুরু হওয়ার পর থেকেই টানা বিধানসভা বয়কটের পথে বিজেপি।
মূলত গত ৩ মাস ধরে হিংসার আগুনে জ্বলছে মণিপুর। এখনও পর্যন্ত শতাধিক মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন। ঘর ছাড়া প্রায় ৪০ হাজারেরও বেশি মানুষ। এ নিয়ে বিজেপি সরকারের বিরুদ্ধে নিষ্কৃয়তার অভিযোগ উঠেছে। এর মধ্যেই সম্প্রতি প্রকাশ্যে এসেছে দুই মহিলাকে বিবস্ত্র করে হাঁটানোর ভিডিয়ো। তাঁদের গণধর্ষণ করা হয়েছে বলেও অভিযোগ। এই সমস্ত ইস্যুকে সামনে রেখেই আজ ফের উত্তাল সংসদ। সংসদে প্রধানমন্ত্রীর বিবৃতির দাবি INDIA জোটের। বিরোধীদের বিক্ষোভে দফায় দফায় মুলতুবি সংসদের দুই কক্ষই। প্রধানমন্ত্রী বিবৃতি না দেওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে, হুঁশিয়ারি কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়গের।
অপরদিকে, গত ২১ জুলাই এর জনসভা থেকে এই মণিপুর ইস্যুতেই মমতা ও অভিষেককে তোপ দাগতে দেখা গিয়েছিল। এদিকে মালদার ঘটনাটি ঠিক তার পরপরই প্রকাশ্য়ে আসে।মালদায় দুই মহিলাকে 'বিবস্ত্র করে মারধর'-র ঘটনায় এই মুহূর্তে উত্তাল রাজ্য-রাজনীতি। ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়ে সাংসদ খগেন মুর্মুর নেতৃত্বে রাতভর এসপি অফিস ঘেরাও চালায় বিজেপি। ইতিমধ্যেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন অমিত মালব্য, অনুরাগ ঠাকুর, কেন্দ্রীয় মন্ত্রী স্মৃতি ইরানি, রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। আর এবার মণিপুর ইস্যুতে নারী নির্যাতনের প্রতিবাদ জানিয়ে রাজপথে নামল শাসকদল।
এই প্রসঙ্গে অনুরাগ ঠাকুর বলেন,'অপরাধের ক্ষেত্রে পিছিয়ে নেই বাংলা, ভোটের সময় বোমার খবর বেশি পাওয়া যায়। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মমতা কোথায় আছে, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে।কেউ কোনও কথা বলছে না, সবাই মূক হয়ে গিয়েছেন।' মমতার রাজ্যে ঘটছে একের পর এক লজ্জাজনক ঘটনা। কোথায় গেলেন মোমবাতি মিছিল করা প্রতিবাদীরা?' প্রশ্ন তোলেন তিনি।অনুরাগ ঠাকুর আরও বলেন, 'মেদিনীপুর, ডেবরায় আদিবাসীদের উপর অত্যাচার হয়েছে। বাংলা-বিহার-রাজস্থানের মুখ্যমন্ত্রীরা দায় অস্বীকার করতে পারবেন না। ভয়ের বাতাবরণে বাঁচছেন বাংলার মহিলারা। কী করছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়?'
আরও পড়ুন, অভিষেক মন্তব্যের বিরোধিতায় হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়ে ধাক্কা খেল BJP
তবে এখানেই শেষ নয়, অনুরাগ ঠাকুর আরও বলেন, 'কংগ্রেস আমলে মণিপুরের অবস্থা আরও খারাপ ছিল। মণিপুর নিয়ে সংসদে আমরা আলোচনা চাইছি, কেন এতে ভয় পাচ্ছেন বিরোধীরা? একটি দলের কেউ সংসদে নেই বলে কি সংসদ চলতে দেওয়া হচ্ছে না? বাংলায় মমতা নির্মমতার প্রতীক।' যদিও গেরুয়া শিবিরকে জোর নিশানা রাজ্যের মন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়ের। তিনি বলেন, 'মণিপুর ঢাকতেই বাংলার তুলনা টানছে বিজেপি।' তোপ দেগেছেন একই সুরে সায়নী ঘোষও।