বিজেন্দ্র সিংহ, নয়াদিল্লি: নারদ তদন্তে (Narada Scam) হাজিরার জন্য সিবিআই নোটিসের (CBI Notice) পাল্টা চিঠি ছিলেন ম্যাথ্যু স্যামুয়েল (Mathew Samuel)। স্বাস্থ্যের কারণ দেখিয়ে বাড়ির কাছাকাছি কোথাও হাজিরার জন্য আবেদন জানান তিনি। চিঠিতে লেখা, '৬দিন ট্রেন যাত্রা করে কলকাতায় এসে হাজিরা দেওয়া সম্ভব নয়।' খরচের পাশাপাশি স্বাস্থ্যের কারণ দেখিয়েও সিবিআইকে চিঠি দেন নারদ-কর্তা। সঙ্গে আশ্বাস, তদন্ত সহযোগিতা করা হবে। আগামী সোমবার সকাল ১০.৩০টায় নিজাম প্যালেসে ম্যাথ্যুকে হাজিরার নির্দেশ দিয়েছিল সিবিআই। তার প্রেক্ষিতেই চিঠি।
প্রেক্ষাপট...
গত পরশু, অর্থাৎ মঙ্গলবার নারদকাণ্ডে ম্যাথু স্যামুয়েলকে ফের নোটিস পাঠিয়েছিল সিবিআই। প্রসঙ্গত, ২০২১ সালের মে মাসে নারদ-কাণ্ডে চার্জশিট জমা দিয়েছিল কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। তার পর একাধিক গ্রেফতারিও হয়। কিন্তু সেই পর্বের এক বছর পেরিয়ে গেলেও আর কাউকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়নি। কেউ গ্রেফতারও হয়নি। তা হলে ঠিক লোকসভা ভোটের আগে, হঠাৎ ফের এহেন তলব কেন? সিবিআই সূত্রে খবর, ম্যাথু স্যামুয়েল যে মোবাইল ফোন দিয়ে স্টিং অপারেশন করেছিলেন, তা ফরেন্সিক বিশ্লেষণের জন্য জমা দেন। সেই মোবাইলটির ফরেন্সিক বিশ্লেষণের রিপোর্ট এসেছে। সূত্রের খবর, রিপোর্টে সম্পূর্ণ নতুন কিছু তথ্য পেয়েছেন সিবিআইয়ের তদন্তকারী আধিকারিকরা। বেশ কিছু প্রশ্নও উঠেছে সেখান থেকে। ওই তথ্য খতিয়ে দেখে সিবিআইয়ের বক্তব্য, ম্যাথু স্যামুয়েল তাঁদের সব তথ্য় জানাননি। তাই মোবাইলের ফরেন্সিক রিপোর্টে পাওয়া নতুন তথ্য ও তার থেকে তৈরি হওয়া প্রশ্নের ভিত্তিতে আরও একবার ম্যাথুকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে চান তদন্তকারী আধিকারিকরা। সেই জন্যই সিআরপিসি ১৬০ অর্থাৎ সাক্ষী হিসেবে তাঁকে নোটিস পাঠানো হয়েছে।
নারদ-কাণ্ড ফিরে দেখা...
২০১৬ সালের মার্চে, বিধানসভা ভোটের ঠিক আগে নারদ স্টিং অপারেশনে তোলপাড় পড়ে ছিল গোটা রাজ্যে। ২০১৭ সালের ১৭ মার্চ, নারদকাণ্ডে সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দেয় হাইকোর্ট। নারদ স্টিং অপারেশনে নেতা-মন্ত্রী থেকে প্রাক্তন আইপিএসের টাকা নেওয়ার ভিডিও প্রকাশ্য়ে আসায় তুমুল আলোড়ন শুরু হয়। তদন্ত শুরু করে সিবিআই আধিকারিকরা অন্তত তিন-চার বার জিজ্ঞাসাবাদ করেন ম্যাথুকে। তাঁর দাবি, তিনি সমস্ত তথ্য সিবিআইকে দিয়েছেন। কিন্তু মোবাইলের ফরেন্সিক রিপোর্টে নতুন তথ্য সামনে আসার কথা বলা হচ্ছে সিবিআই সূত্রে। সবটা মাথায় রেখেই ১৮ সেপ্টেম্বর নিজাম প্যালেসের অ্যান্টি করাপশন ব্রাঞ্চের অফিসে ডেকে পাঠানো হয়েছে তাঁকে। সিবিআইয়ের এই পদক্ষেপে অবশ্য খুব বেশি আশ্বস্ত নয় কংগ্রেস। বাংলায় দলের মুখপাত্র, সৌম্য আইচ রায় যেমন বলেন, 'সিবিআই, ইডি সারা বছর ঘুমোয়। নির্বাচন এলে জেগে ওঠে।... আমরা সব সময়ই বলেছি, সারদা-নারদ তদন্ত হচ্ছে না কেন? কেন আজ পর্যন্ত এথিকস কমিটির মিটিং হল না? ...নির্বাচন চলে যাবে ইডি-সিবিআই ঘুমিয়ে পড়বে।' সিপিএম আবার আগামী ৫ অক্টোবর সিবিআই দফতর ঘেরাও কর্মসূচি নিয়েছে।
আরও পড়ুন:আজ কৌশিকী অমাবস্যা, তারাপীঠে শুরু মা তারার বিশেষ পুজো