অনির্বাণ বিশ্বাস, কলকাতা: পূর্ব কলকাতার জলাভূমি (East Kolkata Wetland) নিয়ে সামগ্রিক পরিকল্পনা তৈরির প্রস্তাব দিয়ে কেন্দ্রীয় পরিবেশমন্ত্রীকে চিঠি দিলেন কলকাতার মেয়র। তবে পরিবেশবিদদের দাবি, জলাভূমি বাঁচাতে আগে জবরদখলকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিক প্রশাসন।


কেন্দ্রীয় পরিবেশমন্ত্রীকে চিঠি: শহরের ফুসফুস। পূর্ব কলকাতার জলাভূমি। এই জলাভূমির বিভিন্ন এলাকায় জবরদখলের ভুরি ভুরি অভিযোগ উঠেছে। সেই জবরদখল রোখার জন্য এবার কেন্দ্রীয় পরিবেশমন্ত্রীকে চিঠি পাঠালেন কলকাতা পুরসভার মেয়র। সূত্রের খবর, চিঠিতে পূর্ব কলকাতার জলাভূমি নিয়ে সামগ্রিক পরিকল্পনা তৈরি করার কথা বলা হয়েছে। পাশাপাশি, ওই জলাভূমিকে কীভাবে বাণিজ্যিক উপায়ে ব্যবহার করা যায়, সেই পরামর্শও দেওয়া হয়েছে। বলা হয়েছে, ওই জায়গায় জঙ্গল তৈরি করা যেতে পারে। মত্‍স্যচাষের সম্ভাবনাও রয়েছে। হাউসবোটের ব্যবস্থা করার কথাও বলা হয়েছে। কলকাতা পুরসভার মেয়র ফিরহাদ হাকিম, “পরিবেশ মন্ত্রীকে চিঠি দিয়েছি। শহরের পিছনদিকে যে ওয়েট ল্যান্ড রয়েছে, সেখানে সাজেশন দিয়েছি সামগ্রিক পরিকল্পনা তৈরি করার জন্য। জমি পড়ে থাকলে কিন্তু জবরদখল হবে। আজকেই আমার নজরে পড়েছে সেটা আমি মুখ্য সচিবের নজরে এনে ভাঙাভাঙি করিয়েছি। কিন্তু সব করা যাবে না। তাই একটা কম্প্রিহেনশিপ প্ল্যান দরকার।’’


কিন্তু পরিবেশবিদদের বক্তব্য, জলাভূমিকে রক্ষা করতে আগে জবরদখল সরাতে ব্যবস্থা নিক প্রশাসন। সেইসঙ্গে জলাভূমিকে আন্তর্জাতিক কনভেনশন মেনে বাণিজ্যিক কাজে ব্যবহার করা যায় কি না, সেই প্রশ্নও তুলেছেন তাঁরা। পরিবেশ প্রযুক্তিবিদ মোহিত রায়ের কথায়, “পূর্ব কলকাতার জলাভূমি রামসার কনভেনশন-এর আওতায় পড়ে। যে প্রস্তাবই দেওয়া হোক, তা রামসার কনভেনশন অনুযায়ী হতে হবে। রামসার সাইট থেকে আর্থিক লাভ পাওয়ার বিষয়টি খুব একটা গুরুত্ব পাবে না। ২০০০ সাল থেকে কয়েক হাজার এফআইআর হয়েছে, কিন্তু তারপরও কিছু হচ্ছে না। আমার মনে হয় এটা প্রশাসনিক ব্যর্থতা।’’ পরিবেশবিদ নব দত্তের কথায়, “আমি জানি না মেয়র সাহেবকে কারা কী বোঝাচ্ছে। মেয়র সাহেবের আগে আইনটা পড়ে দেখা উচিত । পূর্ব কলকাতার জলাভূমি নিয়ে কিছু বলা বা করার আগে ওঁকে মাথায় রাখতে হবে যে উনি কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা বা  পরিবেশমন্ত্রক যাকেই চিঠি দিন, কারও কিছু করার নেই। কারণ এটা রামসার কনভেনশনের অধীন জায়গা। কলকাতা ওয়েট ল্যান্ড ম্যানেজমেন্ট অথরিটির ৫টি থানায় চারশোর বেশি যে  অভিযোগ জমা পড়েছে জবরদখলকারীদের বিরুদ্ধে, আগে তার ব্যবস্থা হোক।’’ প্রশাসন সূত্রে খবর, সম্প্রতি পূর্ব কলকাতা জলাভূমির ১০ একর জায়গা বেআইনি জবরদখলের হাত থেকে রক্ষা করেছে ইস্ট কলকাতা ওয়েট ল্যান্ড ম্যানেজমেন্ট অথরিটি, কলকাতা পুরসভা ও পুলিশ। কলকাতা পুরসভার ১০৮ নম্বর ওয়ার্ডের নুরতলা ভেড়ির একাংশ ভরাট করার চেষ্টা হচ্ছিল বলে অভিযোগ। তা বন্ধ হয় প্রশাসনের হস্তক্ষেপে।


আরও পড়ুন: Mamata Banerjee: মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে অভ্যর্থনা দার্জিলিঙে, GTA-র শপথ অনুষ্ঠান ঘিরে সাজো সাজো রব পাহাড়ে