মেদিনীপুর: স্বাধীনতা দিবসের প্রাক্কালে অষ্টম 'কন্যাশ্রী দিবস' উদযাপন করছে রাজ্য। মহা ধুমধাম করে হচ্ছে দিবস পালন। বাংলার মেয়েদের উদ্দেশে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এক ট্যুইটবার্তায় লেখেন, 'কন্যাশ্রী দিবসে বাংলার সব মেয়েদের সাফল্য আমি উদযাপন করছি। আমি তাদের কৃতিত্ব, উৎসাহ আর নিষ্ঠার জন্য গর্বিত।' "ঠিক এমনই একটা দিনে মেদিনীপুর শহরের এক ঘটনা চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিল, কন্যাসন্তান নিয়ে সমাজের একাংশের ভাবনা-চিন্তা এখনও কোথায় দাঁড়িয়ে। যদিও কন্যাসন্তানে অনীহা নাকি দারিদ্র্য, এই মর্মান্তিক ঘটনার পিছনে কারণটা ঠিক কী, তা নিয়ে প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে। 
অষ্টম কন্যাশ্রী দিবস যখন একদিকে  পালন করছে জেলা প্রশাসন, ঠিক সেই সময় সদ্যজাত কন্যা সন্তানকে বিক্রির অভিযোগ উঠল মেদিনীপুর শহরে। হাতেনাতে এলাকাবাসীরা বিক্রেতা মাকে ধরে তুলে দিল পুলিশের হাতে। ঘটনায় তীব্র চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে মেদিনীপুর শহরে। 
জানা গিয়েছে, মেদিনীপুর শহরের আবাস এলাকার এক মহিলা শুক্রবার জন্ম দেয় এক কন্যাসন্তানের। মাস পাঁচেক আগেই ওই মহিলার স্বামী মারা যায়। এরপর নতুন করে সন্তান জন্ম দেওয়ায় পরিবারের অন্যান্য সদস্যরা সদ্যোজাত কন্যা সন্তানসহ চার বাচ্চা ও মাকে বের করে দেয় বাড়ি থেকে। 
সম্ভবত এরপরই সন্তানকে বিক্রি করে বাকি সন্তানদের দেখভাল করার খরচ তুলতে চেয়েছিলেন মা। তাই মাত্র ৫ হাজার টাকার বিনিময়ে তিনি 'বিক্রি করে দেন' ৯ মাস গর্ভে লালন করা সন্তানকে। 
বিষয়টি জানাজানি হতেই প্রতিবেশীরা খবর দেয় মেদিনীপুর কোতোয়ালি থানায়। পুলিশ পৌঁছে তিন সন্তান ও মাকে  নিয়ে আসে থানায়। এখনও পর্যন্ত বিক্রি হয়ে যাওয়া সদ্যোজাতকে উদ্ধার করতে পারেনি পুলিশ। 
একদিকে যখন বাংলা জুড়ে কন্যাশ্রী প্রকল্পের জয়জয়কার, সেই বাংলাই ৭৫ তম স্বাধীনতা দিবসের প্রাক্কালে সাক্ষী থাকল এমন একটি ঘটনার। আজ মুখ্যমন্ত্রী ট্যুইটারে লেখেন, 'কন্যাশ্রী প্রকল্প লক্ষ লক্ষ কিশোরীর স্বপ্ন পূরণে সাহায্য করেছে। মহিলাদের ক্ষমতায়নের লক্ষ্যেই আমাদের সর্বদা কাজ করে যাওয়া উচিত। '
মুখ্যমন্ত্রী যখন বাংলার মেয়েদের জন্য এত বড় স্বপ্ন দেখছেন, সাফল্যের সঙ্গে ৮ বছর ধরে রাজ্যে চলছে এই প্রকল্প, ঠিক সেই রাজ্যেই এমন একটি ঘটনা নিঃসন্দেহে নাড়া দেওয়ার মতোই।