রাজীব চৌধুরী, মুর্শিদাবাদ: কাজের খোঁজে ভিন রাজ্যে গিয়ে ফের মৃত্যু পরিযায়ী শ্রমিকের (Migrant Laborer Death)। মৃতের নাম মনিরুল সেখ। বয়স ৩০ বছর। তিনি মুর্শিদাবাদ জেলার লালগোলা থানার সাগিয়া নতুন পাড়ার বাসিন্দা। চেন্নাইয়ে কাজ করতেন তিনি।

  


কী হল? 
মনিরুল চেন্নাইয়ে রাজমিস্ত্রির কাজ করতেন। এখনও পর্যন্ত যা জানা গিয়েছে, তাতে গত ২৭ ডিসেম্বর বিকেল ৪টে নাগাদ কাজ করার সময় ইলেকট্রিক শক লেগে মারা যান তিনি। পুলিশের প্রাথমিক ধারণা, দুর্ঘটনাবশতই এই মর্মান্তিক ঘটনা ঘটেছে। খবর বাড়ি পৌঁছতেই পরিবারে শোকের ছায়া নেমে আসে। সেই ঘটনার প্রায় ৪ দিন পর মনিরুলের দেহ বাড়ি এসে পৌঁছেছে। ঠিক কী কারণে তাঁর দেহ, চেন্নাই থেকে মুর্শিদাবাদ আসতে ৪ দিন সময় লেগে গেল, এই নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন শোকার্ত পরিজনেরা। ভিন রাজ্যে কাজে গিয়ে বাংলার পরিযায়ী শ্রমিকের মৃত্যু সম্পূর্ণ অচেনা নয়। গত অক্টোবরেই যেমন, গুজরাতে কাজ করতে গিয়ে বাংলার ২ পরিযায়ী শ্রমিকের মৃত্যুর ঘটনায় হইচই বেধে যায়। অভিযোগ ছিল, গণপিটুনি দিয়ে মেরে ফেলা হয়েছে তাঁদের।  রাজকোটে গয়নার দোকানে কাজ করতে গিয়ে মারা যান কালনার ওই ২ শ্রমিক। পরিবার অবশ্য অভিযোগ করে, ৪ মাসের বকেয়া মাইনে চাওয়ায় পিটিয়ে খুন করা হয়েছে তাঁদের।
তার আগে, গত অগাস্ট মাসে মিজোরামে নির্মীয়মাণ রেলসেতু ভেঙে মালদার ২৩ পরিযায়ী শ্রমিকের মৃত্যুর ঘটনায় তরজা শুরু হয়েছিল। তৃণমূলের বিরুদ্ধে সুর চড়িয়েছিল বিরোধীরা। পাল্টা উত্তর দিয়েছিল শাসকদল। মিজোরামে নির্মীয়মাণ রেল সেতু ভেঙে মৃত্যু হয়েছিল মালদার ২৩ জন পরিযায়ী শ্রমিকের। আর তারপর থেকেই প্রশ্ন উঠতে শুরু হয়েছিল, কী কারণে ভিনরাজ্যে কাজের খোঁজে যেতে হয় বাংলার শ্রমিকদের? তাহলে কি বাংলায় কাজের খোঁজ নেই? আর এইসব প্রশ্নকে সামনে রেখেই রাজ্যের তৃণমূল সরকারকে কাঠগড়ায় তোলে বিরোধীরা। 
কিন্তু আলোচনা-সমালোচনা-বিতর্ক-প্রশ্ন সত্ত্বেও ছবিটা যে খুব একটা বদলায়নি, সেটা স্পষ্ট হয়ে যায় নভেম্বরেও। সে বার অসমে কাজ করতে গিয়ে মারা যান সঞ্জয় মাইতি নামে সাগরের কোম্পানি ছাড় এলাকার এক বাসিন্দা। সূত্রের খবর,  অসমের করিমগঞ্জে পানীয় জলের জন্য পাইপ লাইন বসানোর কাজে যান বছর চল্লিশের সঞ্জয়। তিনিই ছিলেন চারজনের সংসারে একমাত্র রোজগেরে। ঘটনার দিন কাজ সেরে অস্থায়ী তাঁবুতে বিশ্রাম নিচ্ছিলেন সঞ্জয়। সেই সময় সিমেন্ট বোঝাই ট্রাক নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে তাঁবুর ভিতর ঢুকে পড়ে। পরিযায়ী শ্রমিককে পিষে দেয়। গুরুতর জখম অবস্থায় হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা মৃত বলে ঘোষণা করেন।


 


আরও পড়ুন:বিকল্প রাজনীতির পক্ষে সওয়াল? কৌস্তভের সোশ্যাল পোস্ট ঘিরে জল্পনা