কলকাতা: উপ নির্বাচনের আগে বঙ্গসফরে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। সরকারি অনুষ্ঠানে যোগ দেওয়ার পাশাপাশি, এদিন সল্টলেকে বিজেপি-র সদস্য সংগ্রহ কর্মসূচিতেও যোগ দেন তিনি। ২০২৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনকে সামনে রেখে রাজ্যে ১ কোটি সদস্য সংগ্রহের লক্ষ্য রাখা হয়। এদিনের ওই কর্মসূচিতে উপস্থিত ছিলেন মিঠুন চক্রবর্তীও। সেখানে শাহের সামনে দাঁড়িয়েই ২০২৬ নিয়ে হুঁশিয়ারি দিতে শোনা যায় তাঁকে। (Mithun Chakraborty)


সম্প্রতি 'দাদাসাহেব ফালকে' পুরস্কারে মিঠুনকে সম্মানিত করে কেন্দ্রের নরেন্দ্র মোদি সরকার। এদিনের সভায় মিঠুনকে বিশেষ ভাবে অভিবাদনও জানানো হয়। এর পর বক্তৃতা শুরু করেন মিঠুন। তিনি বলেন, "অনেকে বলেন, আমি সামনে আসি। এর আগে মুড়ি-গুড় খেয়ে ৩৭ দিন প্রচার করেছি। কিন্তু ফলাফলে খুব দুঃখ পেয়েছি। সুকান্তদা বলছেন আর ৩ শতাংশ ভোট পেলেই জিতব আমরা। আপনাদের কাছে প্রতিশ্রুতি চাই। তাহলেই সামনে আসব আমি। আমরা কি ১ কোটি সদস্য করতে পারব? তাহলে আমিও কথা দিলাম, ২০২৬ সালে মসনদ আমাদের হবে, তার জন্য যা করতে হয়, সব করতে পারি।" (Amit Shah)


এদিনের ওই কর্মসূচিতে বিজেপি-র রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার, বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী, দলের সাংসদ অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়, দলের শীর্ষ নেতা সুনীল বনসলরা, রাহুল সিনহা, তথাগত রাও, অমিত মালব্যরা, শমীক ভট্টাচার্য, রুদ্রনীল ঘোষরাও উপস্থিত ছিলেন। তাঁদের সামনেই মিঠুন বলেন, "আমি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সামনেই বলছি, যা করতে হয়, সব করব। এই সবকিছুর মধ্যে অনেক অর্থ লুকিয়ে রয়েছে। আমাদের এখানকার এক নেতা বলেন, '৭০ শতাংশ মুসলিম, ৩০ শতাংশ হিন্দু। কেটে ভাগীরথীতে ভাসিয়ে দেব'। ভাবলাম মুখ্যমন্ত্রী কিছু বলবেন, এমন কথা না বলতে বলবেন। কিছু হল না। আমি মুখ্যমন্ত্রী নই। কিন্তু বলে রাখছি, ভাগীরথী নদা আমাদের মা। তাই ভাগীরথীতে কেটে ভাসিয়ে দেব না। কিন্তু তোমার মাটিতেই তোমাকে পুঁতে দেব।"


কোনও রাখঢাক না করেই মিঠুন বলেন, "বার বার বলছি, যা করতে হয়, সব। এমন সদস্য চাই, যাঁরা বুক চিতিয়ে বলবেন, 'মার, কত গুলি আছে দেখি'। এমন কর্মী চাই না, যাঁরা টাকা নিয়ে কাজ করেন। এমন করলে আপনারা তৃণমূলে চলে যান। আমি বলে যাচ্ছি, আপনারা আমাদের বাগানের একটা ফল যদি ছেঁড়েন, আমরা চারটে ছিঁডব। এটা সত্যি। নইলে জিততে পারব না। এরা আমাদের মারবে, হিন্দু ভোটারদের ভোট দিতে দেবে না। এভাবেই জিতবে। ওরা যদি হিন্দু ভোটারদের ভোট দিতে না দেয়, আমরাও প্রস্তুতি নেব যাতে ওদের ভোটাররাও ভোট দিতে না পারেন। এটা অভিনেতা মিঠুন চক্রবর্তী বলছে না, ১৯৬৮ সালের ২৮ বছর বয়সি মিঠুন বলছে। রাজনীতি করেছি, রক্তের রাজনীতি করেছি। সব জানি, কে, কোথা থেকে, কী করবে। আপনাদের পাশে চাই, সাহস চাই, বুক চিতিয়ে এগিয়ে আসতে হবে।"


মিঠুন জানিয়েছেন, নভেম্বর থেকে মাসের ২০ দিন দলের জন্য রাখবেন তিনি। ১০ দিন রাখবেন নিজের কাজের জন্য। মিঠুনের দাবি, কাজ না করলে খেতে পাবেন না তিনি। মার্চ থেকে রাজ্যের জেলায় জেলায়, গ্রামে গ্রামে ঘুরবেন বলেও জানিয়েছেন। তাঁর বক্তব্য, "১ কোটি সদস্য হলে, ২০২৬ সালে মসনদ আমাদের। আমরাই রাজত্ব করব।"