কলকাতা: ভাঙড়ের চন্দনেশ্বরে দম্পতির রহস্যমৃত্যু। বাড়ি থেকে উদ্ধার হল জোড়া দেহ। রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার হয় স্বামীর দেহ। তাঁর শরীরে কোপানোর দাগ রয়েছে। শাড়ির ফাঁসে ঝুলছিল স্ত্রীর দেহ। বাড়ির সামনে রাস্তাতেও রক্তের দাগ দেখতে পাওয়া গিয়েছে। পরিবারের অভিযোগ দম্পতিকে খুন করা হয়েছে। ঘটনাস্থলে পৌঁছেছে লালবাজারের হোমিসাইড শাখা। (Bhangar Couple Death)


রবিবার সকালে ওই দম্পতির দেহ উদ্ধার হয়। বাড়িতে ঘরের ভিতর, খাটের উপর পড়ে ছিল স্বামীর দেহ। তাঁর ঘাড়ের কাছে, গলার কাছে ধারাল অস্ত্র দিয়ে কোপানোর দাগ রয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। পাশাপাশি, মাথাতেও ভারী বস্তু দিয়ে আঘাত করা হয়েছে বলে সন্দেহ। পুলিষ এসে পৌঁছলে প্রথমে স্বামীর দেহ উদ্ধার হয়। ঘরের মধ্যেই ঝুলন্ত অবস্থায় উদ্ধার হয় স্ত্রীর দেহ। (South 24 Parganas News)


পুলিশ সূত্রে খবর, ঘরের মধ্যে থেকে একটি কুড়ুল উদ্ধার হয়েছে। ওই কুড়ুলে রক্তের দাগও রয়েছে বলে খবর। স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে কি কোনও বিষয় নিয়ে অশান্তি বাধে? না কি এর নেপথ্যে তৃতীয় ব্যক্তির হাত রয়েছে? খতিয়ে দেখছে পুলিশ। তবে পরিবার এবং পরিজনদের দাবি, স্বামী-স্ত্রীকে খুন করা হয়েছে। এই ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে এলাকায়। 


যে বাড়িতে এই ঘটনা ঘটেছে, তার ঠিক উল্টো দিকে একটি দোকানে তিনটি সিসিটিভি লাগানো রয়েছে। সেই ক্যামেরার ফুটেজ পাওয়ার চেষ্টা করছে পুলিশ। পুলিশ সূত্রে খবর, স্বামী-স্ত্রীর দেহ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হচ্ছে। সেই রিপোর্ট হাতে পেলেই মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানা যাবে। তবে স্বামীকে খুন করা হয়েছে বলে ধারণা পুলিশের।


যে দম্পতির দেহ উদ্ধার হয়েছে, তাঁদের মধ্য়ে স্বামী ছিলেন পেশায় সবজি ব্যবসায়ী। ওই দম্পতির কিশোর ছেলে জানিয়েছেন, দরজার ছিটকিনি ভাঙা ছিল। সকালে ঘুম থেকে উঠে মা-বাবাকে ওই অবস্থায় দেখতে পান তিনি। পাড়া-পড়শিরা ছুটে আসেন ঘটনার কথা জেনে। খবর যায় চন্দনেশ্বর থানায়। 
চন্দনেশ্বর থানার পুলিশ গিয়েই জোড়া দেহ উদ্ধার করে। নিহতের মেয়ের দাবি, গতকাল রাতেও মা-বাবার সঙ্গে ভিডিও কলে কথা হয় তাঁর। মা-বাবাকে খুন করা হয়েছে বলে দাবি করেছেন তিনিও। ওই দম্পতির মেয়ে বলেন, "বাইরের লোক কেউ করে দিয়ে গিয়েছে। রাত ১০টার দিকে পাশাপাশি বসে আমার সঙ্গে ভিডিও কলে কথা বলে। ঝগড়া-ঝাঁটি কিছু ছিল না। ঘরে তালা দিয়ে শুতেন। তালা ভাঙা মানে বাইরের লোক এই ক্ষতি করে দিয়ে গিয়েছে।"


এই জোড়া মৃত্যুর কারণ নিয়ে ধোঁয়াশা দেখা দিয়েছে। দম্পতির মেয়ে জানিয়েছেন, কারও সঙ্গে শত্রুতা ছিল বলে জানা নেই তাঁর। গতকাল রাতে ঘটনাটি ঘটেছে, না কি রবিবার ভোরে, তা-ও ময়নাতদন্তের রিপোর্ট হাতে পেলেই বোঝা যাবে। ঘটনাস্থলে লালবাজারের হোমিসাইড শাখা পৌঁছেছে। জিজ্ঞাসাবাদের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।