কলকাতা : এসএসকেএম-বিতর্কে (SSKM Controversy) আরও বেলাগাম মদন মিত্র (Madan Mitra)। রোগী ভর্তি নিয়ে সংঘাতের আবহেই দলকেও চ্যালেঞ্জ কামারহাটির তৃণমূল বিধায়কের (Kamarhati TMC MLA)। পদত্যাগ করতে বললে পদত্যাগও করব বলে হুঙ্কার মদনের। এরই মধ্যে চাঁচাছোলা ভাষায় মদন জানিয়ে দেন, 'আমি কামারহাটি থেকে নির্বাচিত, আমাকে তৃণমূল নির্বাচিত করেনি। আমি কৃতজ্ঞ, আমাকে প্রতীক দিয়েছে তৃণমূল, কিন্তু জিতিয়েছে জনগণ। কেউ যদি বলে, এটা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ব্যক্তিগত দল, তাহলে রাষ্ট্রবিজ্ঞান ও সংবিধান পড়ে আসুন। তৃণমূল কংগ্রেস কারও ব্যক্তিগত নয়। 


বৃহস্পতিবার রাতে বাইক দুর্ঘটনায় আহত হন ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজের ল্যাব টেকনিশিয়ান বছর ২৪-এর শুভদীপ পাল। পরিবারের অভিযোগ, গতকাল SSKM-এর ট্রমা কেয়ার সেন্টারে নিয়ে যাওয়া হলে, গুরুতর জখম শুভদীপের কোনও চিকিৎসাই করেননি কর্তব্যরত চিকিৎসকরা। ভর্তি করতেও অস্বীকার করেন তাঁরা। রাত ২টো নাগাদ হাসপাতালেও গিয়েও আহত যুবককে ভর্তি করতে ব্যর্থ হন মদন মিত্র। শেষপর্যন্ত তাঁর চেষ্টায় ওই যুবককে বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। বাইক দুর্ঘটনায় আহত যুবককে SSKM-এ ভর্তি করাতে না পেরে বিস্ফোরক মদন মিত্র। মাঝরাতে স্বাস্থ্য সচিব, চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য, অরূপ বিশ্বাসকে ফোন করে ভর্তির অনুরোধ জানিয়েও খালি হাতে ফিরতে হল কামারহাটির তৃণমূল বিধায়ককে।


আর সেই ইস্যুতেই, সুর চড়িয়ে একের পর এক বিস্ফোরণ ঘটালেন তিনি ! তৈরি হল নজিরবিহীন সংঘাতের পরিস্থিতি ! কখনও সরাসরি, কখনও ঘুরিয়ে কার্যত চ্যালেঞ্জ ছুড়লেন খোদ মমতা বন্দ্য়োপাধ্য়ায়কে ! বিদ্রোহের সুরে তৃণমূল এবং দলীয় বিধায়কের পদ ছাড়ার হুঁশিয়ারি পর্যন্ত দিলেন মদন মিত্র।


হুঙ্কার দিয়ে বলেন, "পদত্যাগ করতে বললে পদত্যাগ করব। অনুরোধ একটাই. একমাসের মধ্যে ভোট করবেন। কী দিয়েছেন ? গেলে একটা বিধায়ক পদ যাবে। আমি যদি বই লিখি, সেই বই বেস্ট সেলার হবে। বই লিখলে ২৩ মাসের ঘটনা লিখব। লিখব, ২৩ মাসে কী হয়েছিল। ডেলোতে মমতার সঙ্গে সুদীপ্ত, গৌতম কুণ্ডুর মিটিংয়ে কী কথা হয়েছিল, বলতে পারিনি, সিবিআইকে বলতে না পারায় ২৩ মাস আটকে রাখা হয়েছিল। বইমেলার থিম যাই করুন না কেন, আমার বই-ই বেস্ট সেলার হবে।"


প্রসঙ্গত , দীর্ঘদিন ধরে মমতা বন্দ্য়োপাধ্য়ায়ের ছায়াসঙ্গী ছিলেন মদন মিত্র। এক সময় তিনি ছিলেন তৃণমূল নেত্রীর কিচেন ক্য়াবিনেটের সদস্য় ! তিনি গ্রেফতার হওয়ার পর পথে নেমেছিলেন খোদ নেত্রী। কিন্তু সেই মদন মিত্র আজ নিছকই একজন বিধায়ক...মন্ত্রীত্ব গেছে বহুদিন। কিন্তু সেই তিনিই প্রথমবার সরাসরি মমতা বন্দ্য়োপাধ্য়ায়কে নিশানা করলেন ! ঘুরিয়ে যা ইঙ্গিত করলেন তা ভয়ঙ্কর!