অর্ণব মুখোপাধ্যায়, কলকাতা : করোনা পরিস্থিতির মধ্যে কলকাতায় বাড়ছে মশাবাহিত রোগের প্রকোপ। পুরসভা সূত্রে খবর, গত জানুয়ারি থেকে অগাস্টের মাঝামাঝি পর্যন্ত শহরে আড়াই হাজারের বেশি বাসিন্দা ম্যালেরিয়ায় আক্রান্ত হয়েছেন। এই পরিস্থিতিতে আশঙ্কা বাড়িয়ে দিল কলকাতা পুরসভার নতুন পর্যবেক্ষণ।
পুরসভা সূত্রে খবর, শহরে মিলেছে এডিস মশার নতুন প্রজাতি, যার নাম এডিস ভিট্টেটাস (Aedes Vittatus)। এডিস ভিট্টেটাসের কামড়ে মানব শরীরে ডেঙ্গি (Dengue) ও চিকুনগুনিয়ার ভাইরাস (Chikungunya) সংক্রমিত হতে পারে। এই মশা ইয়েলো ফিভার (yellow fever) এবং জিকা (Zika ) ভাইরাসেরও বাহক।
কলকাতা পুরসভা সূত্রে খবর, গত বছর শেষের দিকে এডিস ভিট্টেটাস প্রজাতির মশার লার্ভা মিলেছে দক্ষিণ কলকাতায়। কলকাতা পুরসভার পতঙ্গবিদ দেবাশিস বিশ্বাস জানালেন, 'এমন নয় যে এই মশা নতুন হল। হয়তো আগে থেকেই কলকাতায় ছিল ছিল। কিন্তু তা চিহ্নিত করার পরিকাঠামো ছিল না। কিন্তু এখন আমাদের ল্যাবে এই পরিকাঠামো আছে। এডিস ইজিপ্টাই, এডিস অ্যালবপ্টিকাস দেখে এসেছি এতদিন। ভিট্টেটাস ডেঙ্গি ও চিকুনগুনিয়া ছড়াতে পারে। জিকা ছড়াতেও সক্ষম।'
পতঙ্গ বিশারদরা বলছেন, এশিয়া, আফ্রিকা, মধ্যপ্রাচ্য, দক্ষিণ ইউরোপ, উত্তর ও দক্ষিণ আমেরিকা সহ বিশ্বেস বিভিন্ন জায়গায় ছড়িয়ে রয়েছে এডিস ভিট্টেটাস প্রজাতির মশা। এরা সারা বছরই প্রজনন করতে পারে এবং কঠিন আবহাওয়াতেও বংশবৃদ্ধি করতে পারে।
এই পরিস্থিতিতে মশাবাহিত রোগের প্রকোপ কমাতে পরিচ্ছন্নতার ওপর সবচেয়ে বেশি জোর দিচ্ছে কলকাতা পুরসভা। মশার আঁতুড়ঘর জমা জলের বিপদ সম্পর্কে সচেতন করা হচ্ছে নাগরিকদের। সেই সঙ্গে বাড়ানো হচ্ছে নজরদারি। পাশাপাশি, মশার নতুন প্রজাতি সম্পর্কে আরও বিস্তারিত তথ্য পেতে লার্ভা সংগ্রহে দেওয়া হচ্ছে জোর।
এ বিষয়ে জিজ্ঞাসা করা হলে, কলকাতা পুরসভার প্রশাসকমণ্ডলীর সদস্য অতীন ঘোষ বলেন, মশাবাহিত রোগ প্রতিরোধে পুরসভা সেই সংক্রান্ত প্রতিটি বিষয়ে নজর রাখছে। পরিস্থিতি বুঝে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তবে আপাতত অযথা আতঙ্কিত হওয়ার প্রয়োজন নেই।