অমিতাভ রথ, ঝাড়গ্রাম: চারপাশে পাকা ধানের (paddy field) খেত। মাঝে সন্তান প্রসব (birth) করেছে হস্তিনী (mother elephant)। সকালে উঠেই এই ছবি দেখলেন গ্রামবাসীরা (villagers)। দৃশ্য় দেখতে ভিড় জমল এলাকায়। যদিও প্রমাদ গুনল বন দফতর। ঝাড়গ্রামের (jhargram) ঘটনা।


কী ঘটল?
ধানখেতের মধ্যে সন্তান প্রসব করেছে হস্তিনী। তাকে পাহারা দিচ্ছে দাঁতাল। আশপাশ ঘিরে রেখেছে হাতির দল। এই ছবি দেখতেই ভিড় বাড়ছিল এলাকায়। কিন্তু যত জন সমাগম বাড়ে, ততই বেশি দুর্ঘটনার আশঙ্কা করছিলেন বন দফতরের কর্মীরা। শেষমেশ অত্য়ুৎসাহী গ্রামবাসীদের উপর আস্থা না রেখে সদ্যোজাতকে সরানোয় ব্যস্ত হয়ে ওঠে দাঁতাল ও হস্তিনী নিজেই। শাবকটিকে শুঁড়ে করে জঙ্গলে নিয়ে যাওয়ার আপ্রাণ চেষ্টা করে তারা। তাতে অবশ্য উৎসাহে ভাটা পড়েনি গ্রামবাসীদের। স্বচক্ষে এমন দৃশ্য দেখে কৌতূহল ধরে রাখতে পারেননি তাঁরা। প্রসঙ্গত, হাতির আতঙ্কে রীতিমতো উদ্বেগে দিন কাটান ঝাড়গ্রামের মানুষ।


তছনছ গ্রাম...
গত জুলাই মাসে ঝাড়গ্রাম ব্লকের সাপধরা গ্রাম পঞ্চায়েতের বড় পিপড়ি এলাকায় তাণ্ডব চালায় হাতির দল। খাবারের সন্ধানে ঢুকে ১৩টি হাতির দল বড়পিপড়ি গ্রামের বাসিন্দা গুনা মাহাতোর বাড়ি ভেঙে দিয়েছিল। স্থানীয়রা হাতিগুলিকে তাড়া করলে সেগুলি পুকুরিয়া বিটের পাঁচামি গ্রামের দিকে চলে যায়। কিন্তু সেখানেও তাণ্ডব। অভিযোগ, পাঁচামি গ্রামের রাজু মুর্মুর বাড়ি ভেঙে  দেয় তারা। সেখান থেকে স্থানীয়দের তাড়া খেয়ে পুকুরিয়া বিটের মাসাংডিহির জঙ্গলের দিকে চলে যায় হাতির দল। কিন্তু আতঙ্ক কমেনি। ওই এলাকার বাসিন্দাদের কার্যত গৃহবন্দি অবস্থায় দিন কাটাতে হয়। এতেই শেষ নয়। ঝাড়গ্রাম ব্লকের বাঁদরভোলা এলাকাতেও চল্লিশটি হাতি দাপিয়ে বেড়াচ্ছে বলে একই সময়ে খবর মিলেছিল। যে কোনও সময়ে খাবারের সন্ধানে তারা জঙ্গল থেকে লোকালয়ে ঢুকে পড়ে তাণ্ডব চালাতে পারে বলে আশঙ্কায় সিঁটিয়ে ছিলেন এলাকার বাসিন্দারা। নয়াগ্রাম, বিনপুর, জামবনি, লালগড় থানা এলাকাতেও হাতির দল  বেপরোয়া ভাবে তাণ্ডব শুরু করে বলে খবর। সব মিলিয়ে আতঙ্কের ছবি। সকলকে সতর্ক থাকার নির্দেশ দেয় বন দফতর। জুন মাসেও হাতির হামলায় বেঘোরে প্রাণ হারান এক মহিলা। হাতিটি তাঁকে শুঁড়ে পাকিয়ে তুলে ধরে আছাড় মারে বলে জানা যায়। এটিও পুকুরিয়া বিটেরি অন্তর্গত সাপধরা গ্রামের ঘটনা।  গোটা ঘটনায় প্রশ্নের মুখে পড়ে যায় বন দফতরের ভূমিকা। 


আরও পড়ুন:'অস্ত্র-প্রশিক্ষণ' বিতর্কের পর এবার 'কোদাল-কাস্তে', খেলার ডাকে ফের বিতর্কে মদন মিত্র