বিশ্বজিৎ দাস, ডেবরা (পশ্চিম মেদিনীপুর): বিগত তিন দিনের বৃষ্টিতে এখনও জলমগ্ন পশ্চিম মেদিনীপুরের ডেবরার একাধিক এলাকা। 


গত তিন দিনের বৃষ্টিতে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার ডেবরা ব্লকের বিভিন্ন এলাকা জলমগ্ন অবস্থায় ছিল। গতকাল থেকে বৃষ্টি বন্ধ হলেও ডেবরার বিভিন্ন এলাকা এখনও জলমগ্ন অবস্থাতেই রয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দা সুন্দর সিটের বক্তব্য, তাঁরা ডেবরা থেকে একপ্রকার বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছেন। 'আমাদের এখানে বেনিয়া ও গোকুলপুর নিয়ে একটা বুথ। দু-তিন দিন ধরে আমরা কোথাও যোগাযোগ করতে পারছিনা। আমাদের খাবার, তেল, নুন, আলু, মশলা এগুলো কোনওটাই কিনতে পারছি না,' বলছেন তিনি।


স্থানীয় বাসিন্দারা জানাচ্ছেন, আজ অর্থাৎ শুক্রবার জল আগের থেকে খানিকটা কমেছে। কিন্তু এখনও ওই গ্রামের প্রায় ৫০ থেকে ৬০টি বাড়ি জলের নিচে রয়েছে। বর্ষা, দুর্যোগে অনেক বাড়ির ছাউনি ভেঙে পড়েছে, এছাড়াও প্রচুর ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। ব্লক ও পঞ্চায়েত সমিতির মারফত চাল, ডাল, চিড়ে, বিস্কুট ও কিছু ত্রিপল পাঠানো হয়েছিল। তবে এলাকাবাসীর আবেদন এছাড়াও সরকারিভাবে কোনও সুযোগ সুবিধা পেলে ভাল হত। 


অপর এক স্থানীয় বাসিন্দা অম্বু আদক জানান, গোকুলপুরের প্রায় নব্বই ভাগ এবং বেনিয়া গ্রামের প্রায় ষাট ভাগ জলমগ্ন অবস্থায় আছে। তাঁর দাবি এখনও ৭০ থেকে ৮০টা বাড়ি জলের তলায় রয়েছে। সেখানে রান্না করার মতো অবস্থাও নেই। যাঁরা অপেক্ষাকৃত সচ্ছ্বল, তাঁদের বাড়িতে বসবাস করেই দিন কাটছে দুর্গতদের। পঞ্চায়েতের তরফ থেকে কিছু সাহায্য পাওয়া গিয়েছিল বলে জানান তিনি। চাল ও ত্রিপল কিছু দেওয়া হয়। তিনি আরও জানান, পুকুরের মাছও শেষ, চাষের ফসলও শেষ। জলের স্রোত সেখানকার দোকানগুলিকে একেবারে ভেঙে দিয়েছে। তাঁর আবেদন, 'সরকারিভাবে আমরা কিছু যদি সাহায্য পাই মুখ্যমন্ত্রীর কাছে সেই আবেদন জানাচ্ছি।'


স্থানীয় এক মহিলা কৃষ্ণা নায়েক বলেন, 'আমাদের ঘর একেবারেই ডুবে গেছে। এখনও ঘরের মধ্যে প্রায় গলা পর্যন্ত জল আছে। আমরা এখন লোকের বাড়িতে দিন কাটাচ্ছি। এখানে থাকলে কিছুই খেতে পাচ্ছিনা। তাই লোকের বাড়িতে আছি। এবারের ভারী বৃষ্টিতেই বাড়ি ডুবেছে।' 


ভারী বর্ষায় বিপাকে ডেবরার একাধিক গ্রামের বাসিন্দারা। পঞ্চায়েতের তরফে সাহায্য পেলেও, অবস্থা এতটাই শোচনীয় যে সকলেই চাইছেন যাতে সরকারিভাবে আরও খানিক সাহায্য পাওয়া যায়।


আরও পড়ুন: North 24 Parganas: লাগাতার বৃষ্টিতে আরও ভগ্নপ্রায় অবস্থা জলমগ্ন বিশ্বনাথপুর হাসপাতালের, আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন রোগীরা