সুকান্ত মুখোপাধ্যায়, পার্থপ্রতিম ঘোষ, কলকাতা : মধ্য রাতে এলাকা তলিয়ে গেল অন্ধকারে।  গার্ডেনরিচে ( Garden Reach Bulding Collapse ) হঠাৎ বিকট আওয়াজ। সঙ্গে যেন দুলে উঠল চারিদিক। ঠিক যেন ভূমিকম্প । সঙ্গে সঙ্গে এলাকা হল বিদ্যুৎবিচ্ছিন্ন। সংকীর্ণ গলি। অন্ধকারে ঠাওর হয় না কিছুই। তারই মধ্যে নির্মীয়মাণ বহুতল ভেঙে বিপর্যয়। রবিবার রাত ১২টা নাগাদ ঘটনাটি ঘটে কলকাতা পুরসভার ১৩৪ নম্বর ওয়ার্ডের ফতেপুরে। নির্মীয়মান বহুতল ভেঙে পড়ে আজহার মোল্লা বাগান এলাকার একাধিক ঝুপড়ি বাড়ির উপর।


গার্ডেনরিচে নির্মীয়মাণ বহুতলের একাংশ ভেঙে ( Kolkata Building Collapse ) ইতিমধ্যেই ২ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গিয়েছে। তাঁদের নাম সামা বেগম, বয়স ৪৭, হাসিনা খাতুন, বয়স ৫৫।  ঘটনায় আহত হয়েছেন বহু মানুষ। স্থানীয় নার্সিংহোমে ভর্তি করা হয়েছে ১০ জনকে। এসএসকেএমে আরও ৫ জন ভর্তি। তাঁদের কয়েকজনের অবস্থা আশঙ্কাজমক। ধ্বংসস্তূপে আটকে আরও কয়েকজন। 


বাড়িটি ছিল নির্মীয়মান। তাই ওই বাড়িতে কেউ না থাকলেও পাশেই ছিল ঝুপড়ি। যেখানে বহু মানুষেরই বাস। তাঁরা তখন কেউ গভীর ঘুমে, কেউ রাতের খাওয়া সারছেন। হঠাৎই বিরাট বিরাট চাঁইয়ের নিচে চাপা পড়ে গেলেন তাঁরা।


বড় বড় সিমেন্টের চাঁই ভেঙে পড়ে সংলগ্ন ইট দিয়ে তৈরি ছোটো ছোটো ঝুপড়ি বাড়ির উপর। বিশাল অংশ জুড়ে ভেঙে পড়া বাড়ির ধ্বংসস্তুপ ছড়িয়ে পড়ে।  সঙ্গে সঙ্গে এলাকার মানুষজন উদ্ধার কাজে নেমে পড়েন। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে আসে দমকল ও বিপর্ষয় মোকাবিলা বাহিনী। চলে আসেন কলকাতার পুলিশ কমিশনার বিনীত গোয়েল-সহ একাধিক উচ্চপদস্থ আধিকারিকরা। চেষ্টা হয় ক্রেন এনে সিমেন্টের চাঙড় সরানোর। কিন্তু দীর্ঘ সংকীর্ণ গলিপথের শেষে ঘটনাস্থলে যন্ত্রপাতি নিয়ে পৌঁছোনো যায়নি প্রায় ভোর রাত পর্ষন্ত।


স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশের দাবি, বেশ কয়েক মাস ধরে অবৈধভাবে বহুতলটি নির্মাণ করা হচ্ছিল। ব্যবহার হচ্ছিল নিম্নমানের সামগ্রী।  ধ্বংসস্তূপের নীচে আরও ৭ জন  চাপা পড়ে আছেন বলে জানাচ্ছেন এবিপি আনন্দর প্রতিনিধিরা। তাঁদের সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করা হচ্ছে বলে জানা গিয়েছে।  

এই ঘটনায় ইতিমধ্যেই সামনে এসেছে বেআইনি নির্মাণের অভিযোগ। ৩ ফুট রাস্তার ওপর কীভাবে তৈরি হচ্ছিল ৬ তলা বহুতল? প্রশ্ন তুলছেন স্থানীয়রা। অনেকেরই অভিযোগ, পুকুর বুজিয়ে গত একবছর ধরে তৈরি হচ্ছিল এই বহুতল। সংকীর্ণ গলির মধ্যে এল-শেপের ৫-৬ তলা বাড়ি উঠেছিল লম্বালম্বিভাবে। স্থানীয়দের দাবি, বেআইনি নির্মাণের বিরুদ্ধে সরব হলেও গ্রাহ্যই করেননি প্রোমোটার। পুলিশ-প্রশাসনকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে কীভাবে নির্মাণে ছাড়পত্র মিলল প্রশ্ন তুলছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।


আরও পড়ুন : কলকাতায় বাড়ি ভেঙে বিরাট দুর্ঘটনা, চোখ রাখুন লাইভ আপডেটে।