সমীরণ পাল, শুভেন্দু ভট্টাচার্য, উত্তর ২৪ পরগনা ও কোচবিহার: পুরভোটে (Municipal Election) উত্তর ২৪ পরগনায় (North 24 Paraganas) বাম-কংগ্রেস জোট (Left Parties-Congress Alliance) বা আসন সমঝোতা হচ্ছে না। জেলার ২৫ টি পুরসভার প্রায় সাড়ে ছশো আসনের মধ্যে সাড়ে পাঁচশোর বেশি আসনে একাই প্রার্থী ঘোষণা করেছে বামেরা। অন্যদিকে, কোচবিহারে (Cooch Behar) ১২ নম্বর ওয়ার্ড ঘিরে অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে বাম-কংগ্রেসের আসন সমঝোতা।


এবার কলকাতা পুরভোটে একা লড়েই মোটের ওপর নজর কেড়েছে বামেরা। প্রাপ্ত ভোটের হারে, বিজেপিকে টেক্কা দিয়েছে তারা। ভোট শতাংশের নিরিখে বিজেপিকে তৃতীয় স্থানে ফেলে বামেরা উঠে এসেছে দ্বিতীয় স্থানে।


এমন একটা আবহে রাজ্যের বাকি পুরসভার নির্বাচনে বাম-কংগ্রেস আসন সমঝোতা হবে কিনা, তা নিয়ে জল্পনা জারি রয়েছে। তবে সেই জল্পনায় ইতি পড়ে গিয়েছে উত্তর ২৪ পরগনা জেলায়। 


২৫টি পুরসভার ৬৪৬টি ওয়ার্ডের মধ্যে ৫৮৪টি আসনে একাই প্রার্থী তালিকা ঘোষণা করেছে বামেরা। বাম শিবির সূত্রে খবর, সিপিএম ৪৯৩টি, সিপিআই ৫০টি, ফরওয়ার্ড ব্লক ৩২টি এবং আরএসপি ৯টি আসনে প্রার্থী দিয়েছে।বাকি ৬২টি আসন ছেড়ে রেখেছে বামফ্রন্ট।  


উত্তর ২৪ পরগনা জেলা বামফ্রন্ট সূত্রে খবর, নির্দল হোক বা অন্য কোনও দল, যারা তৃণমূল-বিজেপির বিরুদ্ধে ভাল ফাইট দিতে পারবে, বাকি আসনগুলিতে তাঁদের সমর্থন করবে তারা। 


অন্যদিকে, কংগ্রেসের তরফেও জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, উত্তর ২৪ পরগনার সব কটি পুরসভার সব আসনে প্রার্থী দেবে তারা। উত্তর ২৪ পরগনা কংগ্রেস (শহরাঞ্চল) সভাপতি তাপস মজুমদার বলেছেন, আমরা সব আসনেই প্রার্থী দেব। জোটের কোনও ব্যাপার নেই। 


উত্তর ২৪ পরগনায় যখন এই ছবি, বাম-কংগ্রেস আসন সমঝোতা নিয়ে তখন জটিলতা তৈরি হয়েছে কোচবিহারেও। দুই শিবির সূত্রে খবর, জেলার ৬টি পুরসভাতেই আসন সমঝোতা নিয়ে আলোচনা চলছে তাঁদের মধ্যে। কিন্তু গোল বেঁধেছে কোচবিহার পুরসভার ১২ নম্বর ওয়ার্ড ঘিরে। সিপিএম সূত্রে খবর, তারা কোচবিহার পুরসভার ৮, ৯, ১১ ও ২০ নম্বর ওয়ার্ড কংগ্রেসকে ছাড়তে চায়। কিন্তু ১১ নম্বর ওয়ার্ডের বদলে ১২ নম্বর ওয়ার্ড চেয়ে সরব হয়েছে কংগ্রেস। বামেরাও তা ছাড়তে রাজি নয়। 


কোচবিহার জেলা সিপিএমের সম্পাদক অনন্ত রায় বলেছেন, আমাদের স্ট্র্যাটেজি কোনও জোট করছি না। কোচবিহার পুরসভায় ১৬টার মধ্যে ৪টে ছাড়ছি। কোনও মিটিং মিছিল এক সঙ্গে হবে না।


কোচবিহার কংগ্রেসের কার্যকরী সভাপতি রবীন রায় বলেছেন, আমরা বলেছি, ৮ ছেড়ে দিতে রাজি আছি। কিন্তু ১২ নম্বর ওয়ার্ড আমাদের লাগবেই।  ১২-তে আমাদের ভাল অবস্থা। যথেষ্ঠ কর্মী আছে। সিপিএম বলছে, রাজি নয়। সিপিএমের এই অনমনীয় মনোভাবের জন্য যদি জোট ভেস্তে যায়, তার দায় সিপিএমকেই নিতে হবে। আমরা দরকারে একাই লড়ব।


সব মিলিয়ে জোট নিয়ে জলঘোলা চলছেই।