সনৎ ঝা, শিলিগুড়ি : বিধানসভা ভোটে পরাজিত হওয়া সত্ত্বেও তাঁকে শিলিগুড়ি (Siliguri) পুরসভার প্রশাসক করেছিল তৃণমূল সরকার। প্রাক্তন মন্ত্রী গৌতম দেবের (Goutam Deb) কাছে এবারের পুরভোট যথার্থ অর্থেই যেন প্রেস্টিজ ফাইট। নিজেকে জিতে দেখাতে তো হবেই। সেই সঙ্গে শিলিগুড়ি পুরসভার ৪৭টি ওয়ার্ডে ঘাসফুল ফোটানোর গুরু দায়িত্ব তাঁর কাঁধে।


বাড়ির ছাদ বাগানে পায়চারি করতে করতে ফুল দেখতে দেখা গেল শিলিগুড়ি পুরসভার হেভিওয়েট তৃণমূল প্রার্থী গৌতম দেবকে। এক মনে দেখছিলেন, গোলাপ। যে গাছে ফুল আর কাঁটা জড়াজড়ি করে থাকে। শিলিগুড়ি পুরসভা নির্বাচনে গৌতম দেবের সামনে চ্যালেঞ্জও যেন ফুল আর কাঁটায় মেশানো!


বিধানসভা ভোটে তৃণমূলের রেকর্ড আসনে জয়। কলকাতা পুরভোটে ঘাসফুল শিবিরের নজিরবিহীন সাফল্য। এসব যদি হয় অ্যাডভান্টেজ, তাহলে কাঁটায় ভরা চ্যালেঞ্জ হল অতীতের দুটি রেকর্ড। এবার বিধানসভা ভোটে সবুজ সুনামির মধ্যেও ডাবগ্রাম-ফুলবাড়ি আসনে বিজেপির কাছে হারতে হয়েছে গৌতম দেবকে। আর দ্বিতীয় চিন্তা হল, ২০১১ সাল থেকে তৃণমূল রাজ্যে ক্ষমতায় থাকলেও, শিলিগুড়ি পুরসভায় এখনও ঘাসফুল ফোটানো সম্ভব হয়নি। 


এই পরিস্থিতিতে গৌতম দেবের কাছে জানতে চাওয়া হয়, ১১ বছর ধরে রাজ্যে ক্ষমতায়। শিলিগুড়ি পুরসভা দখলে বারবার ব্যর্থ কেন ? শিলিগুড়ি পুরসভার ৩৩ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল প্রার্থী গৌতম দেবের উত্তর, ২০০৯ সালে শিলিগুড়ি কাণ্ড হয়েছিল। আমার মেয়র হওয়া আটকাতে কংগ্রেসকে সাপোর্ট করেছিল বামেরা।


শিলিগুড়ি পুরসভার ৩৩ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল প্রার্থী হলেও, গৌতম দেবের কাঁধে দায়িত্ব এবার অনেক বেশি। বিধানসভা ভোটে হারের ধাক্কা সামলে পুরভোটে নিজেকে জেতানোর তাগিদ তো আছেই, সেই সঙ্গে শিলিগুড়ি পুরসভার বাকি ৪৬টি ওয়ার্ডেও দলের নির্বাচন পরিচালনার দায়িত্ব রয়েছে তাঁর কাঁধে।  


শিলিগুড়ির পুরসভার ৬ বারের কাউন্সিলর। উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন এবং পর্যটন বিভাগের প্রাক্তন মন্ত্রী, অভিজ্ঞতার ভাণ্ডারে যেন বিবিধ রতন। তবে যুদ্ধের জমি চেনা হলেও, জনসংযোগে খামতি রাখছেন না। বাড়ি বাড়ি চলছে প্রচার। 


এবার আপনিই তো মূল কাণ্ডারী ? এ প্রশ্ন করা হলে গৌতম দেবের বক্তব্য, প্রত্যেক জায়গায় যাচ্ছি। ভাল রেসপন্স। পুরো ব্যাপারটা ভাল এনজয় করছি। পুরসভার প্রচুর কাজ আছে। রাজ্য সরকারের সহযোগিতা ছাড়া সব কাজ সম্ভব নয়। তাই আশা করি, মানুষ উন্নয়নের স্বার্থে তৃণমূলকে ভোট দেবেন।


গৌতম দেব ও তৃণমূলের প্রতি শিলিগুড়িবাসী কতটা আস্থা রাখে ১২ ফেব্রুয়ারি তার পরীক্ষা।