ঋত্বিক প্রধান, পূর্ব মেদিনীপুর: চার দেওয়ালের গণ্ডি ছাড়িয়ে ভোটের ময়দানে ননদ-বৌদি। কাঁথি পুরসভার ২০ নম্বর ওয়ার্ডের এই লড়াই এখন আলোচনার কেন্দ্রে। তৃণমূল ও বিজেপির টিকিটে লড়ছেন দুই নারী। দুপক্ষই জয়ের ব্যাপারে আশাবদী। কিন্তু কাকে ভোট দেবেন, তা নিয়ে ধন্দে পড়েছেন পরিবার পরিজন থেকে এলাকার বাসিন্দারা।
টিভিতে যেমন হয়, বাস্তবে তেমনটা সব সময় নয়। সংসারে কোনও তু তু ম্যায় ম্যায় নেই তাঁদের মধ্যে। কিন্তু ভোটের ময়দানে- বিনা যুদ্ধে নাহি দিব সুচ্যগ্র মেদিনী- মনোভাব। সম্পর্কে বৌদি ও ননদ। ভোটের ময়দানে দুই প্রতিদ্বন্দ্বী। পূর্ব মেদিনীপুরের কাঁথির ২০ নম্বর ওয়ার্ডে সম্মুখ সমরে একই পরিবারের দুই নারী।
তৃণমূল প্রার্থী করেছে শ্রাবণী জানা পালকে। ওই ওয়ার্ডে বিজেপির টিকিটে লড়ছেন শ্রাবণীর ননদ, অর্পণা বেরা। তবে ভোটের লড়াইয়ের ছাপ ফেলেনি ব্যক্তিগত সম্পর্কে। কাঁথি পুরসভার ২০ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল প্রার্থী শ্রাবণী জানা পাল বলেন, "বরাবরই ননদ কিংবা তার বাড়ির সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক মধুর। দলনেত্রী আমাকে বিশ্বাস করে প্রার্থী করেছেন। তাই কর্মীদের সঙ্গে নিয়ে ওয়ার্ডে উন্নয়নের রথ কে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য বদ্ধপরিকর। সে ক্ষেত্রে পারিবারিক সম্পর্ক পরিবারের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকুক।"
কাঁথি পুরসভার ২০ নম্বর ওয়ার্ডের বিজেপি প্রার্থী অর্পণা বেরা বলেন, "আমি জানতামই না বৌদি তৃণমূলের প্রার্থী হচ্ছেন। মনোনয়ন জমা দিতে এসে কথা হয়েছে বৌদির সঙ্গে। যেহেতু গতবার আমাদের দলের ব্যবধান অনেক বেশি ছিল সেই ব্যবধান এর থেকেও এবার আমি বেশি ব্যবধানে জয়ী হতে পারব বলে আশাবাদী। রাজনীতির লড়াইতে বৌদিকে হারাতে পারলে আমি খুশী হবো"
একই পাড়ার বাসিন্দা দুই পরিবার। পারিবারিক সমর্ক যেমন মধুর, তেমনি প্রতিবেশীদের সঙ্গেও সম্পর্ক ভাল। আর তাতেই বেধেছে সমস্যা।
তৃণমূল না বিজেপি - কাকে ভোট দেবেন? শ্যাম রাখি না কুল রাখি অবস্থা সবার। বিজেপি প্রার্থীর মা ও তৃণমূল প্রার্থীর শাশুড়ি গৌরী পাল বলেন, "মেয়ে আর বৌমা দুজনেই লটারি কেটেছে। কার ভাগ্যে পুরস্কার সেটা আমরা কেউই জানিনা।"
এক বাসিন্দা বলেন, যেই জিতুক এবার আমাদের ঘর থেকেই কাউন্সিলর হচ্ছে। আমরা দুজন কে সন্তুষ্ট রাখব। কথায় বলে, ননদিনী রায়বাঘিনী। এক সংসারে থাকলে সেই ননদের সঙ্গে বৌদির ঠোকাঠুকি বা মন কষাকষি নতুন কিছু নয়। সংসার আলাদা হলেও যে সম্পর্ক মধুর হয়, তাও সব সময় জোর দিয়ে বলা যায় না। কিন্তু সব ক্ষেত্রেই থাকে কিছু ব্যতিক্রম। তেমনই এক ব্যতিক্রম কাঁথির ২০ নম্বর ওয়ার্ড।