রাজা চট্টোপাধ্যায়, নান্টু পাল, জলপাইগুড়ি ও বীরভূম: পুরভোটে ইভিএম ভাঙচুরের অভিযোগে বীরভূমের রামপুরহাট পুরসভার ১৭ নম্বর ওয়ার্ডের সিপিএম প্রার্থী সহ ৪ বাম কর্মীকে গ্রেফতার করল পুলিশ। ধৃতদের নিঃশর্ত মুক্তির দাবিতে মহকুমাশাসকের অফিসের সামনে বিক্ষোভ দেখালেন বামেরা। পুরভোটে সন্ত্রাসের অভিযোগ নিয়ে বামেদের ডেপুটেশন কর্মসূচি ঘিরে ধুন্ধুমার বাঁধল জলপাইগুড়ি শহরে।
পুরভোটে সন্ত্রাসের অভিযোগে, সোমবার বাংলা বনধের ডাক দিয়েছিল বিজেপি। একই ইস্যুতে এদিন পথে নামল বামেরাও। রবিবার ১০৮ পুরসভার ভোটে সন্ত্রাস, পুলিশি নিষ্ক্রিয়তা ও ভোট লুঠের অভিযোগ তুলে সোমবার দুপুরে জলপাইগুড়ির মহকুমাশাসকের দফতরে ডেপুশন জমা দেওয়ার কর্মসূচি নেয় বামেরা। মহকুমাশাসকের অফিসের মূল গেট সরিয়ে ভিতরে ঢুকে পড়েন বিক্ষোভকারীরা।পরের গেটটিতে তালা লাগিয়ে দেয় পুলিশ। বাম বিক্ষোভকারীরা সেখানে পৌঁছে তালা ভাঙার চেষ্টা করে বলে অভিযোগ। শুরু হয় পুলিশের সঙ্গে ধস্তাধস্তি। শেষ পর্যন্ত লাঠিচার্জ করে পুলিশ। পুলিশের মারে একাধিক বাম নেতা ও কর্মী জখম হন।সিপিএমের জলপাইগুড়ি জেলা সম্পাদক সলিল আচার্যর মাথায় জল ঢালতে দেখা যায় দলীয় কর্মী সমর্থকদের।
জলপাইগুড়ির ডিওয়াইএফআই নেতা নীলাঞ্জন নিয়োগী বলেছেন, পুরভোটে ব্যাপক সন্ত্রাস হয়েছে। তার বিরুদ্ধেই আমরা বামপন্থীরা বলতে এসেছিলাম। কীভাবে মারল পুলিশ!
পুলিশ সূত্রে পাল্টা দাবি, বামেদের বিক্ষোভ কর্মসূচির কোনও অনুমতি ছিল না। তা সত্ত্বেও দু’জন প্রতিনিধিকে ভিতরে গিয়ে ডেপুটেশন দিতে বলা হয়। সেই নির্দেশ অমান্য করে সবাই বলপূর্বক সরকারি অফিস চত্বরে ঢুকে পড়েন। গণ্ডগোলে একাধিক পুলিশকর্মী আহত হন।
বীরভূমের রামপুরহাটেও মহকুমাশাসকের অফিসের সামনে বিক্ষোভ দেখায় বামেরা।রবিবার রামপুরহাটের ১৩৭ নম্বর বুথে ইভিএম ভাঙার অভিযোগে ১৭ নম্বর ওয়ার্ডের সিপিএম প্রার্থী সঞ্জীব মল্লিককে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। সেই সঙ্গে আরও তিনজন বাম কর্মীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাঁদের নিঃশর্ত মুক্তির দাবিতে এদিন মহকুমাশাসকের অফিসের সামনে বিক্ষোভ দেখান বামেরা। বীরভূমের সিপিএম নেতা দীপঙ্কর চক্রবর্তী বলেন, আজ আমরা রাজ্য জুড়ে গণতন্ত্রের হত্যা দিবস পালন করছি। নিঃশর্ত জামিন দিতে হবে। যতক্ষণ না দেবে ততক্ষণ আন্দোলন চলবে।
অন্যদিকে, বীরভূম তৃণমূল কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক ত্রিদিব ভট্টাচার্য বলেছেন, কোথাও ছাপ্পা হয়নি। ১৭ নম্বর ওয়ার্ডের সিপিএম প্রার্থী নিজে হেরে যাচ্ছেন বুঝতে পেরে ইভিএম ভেঙেছেন। তাই আইন মোতাবেক গ্রেফতার করা হয়েছে।
ধৃত সিপিএম প্রার্থী সহ চারজনের ১৪ দিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছে রামপুরহাট মহকুমা আদালত।