রাজীব চৌধুরী, মুর্শিদাবাদ (বহরমপুর): বহরমপুরে সিএমওএইচকে মার, ১৬ জন তৃণমূলকর্মী গ্রেফতার। তৃণমূল বিধায়ক-জেলা পরিষদের সভাধিপতির সামনেই হামলার ঘটনা ঘটে। হামলার অভিযোগে তৃণমূল বিধায়কের ১৬ জন অনুগামী গ্রেফতার। ‘তৃণমূল বিধায়ক, জেলা পরিষদের সভাধিপতির সামনে হামলা। তাহলে কেন এফআইআরে নাম নেই মূল অভিযুক্তদের?’ প্রশ্ন তুলে মুর্শিদাবাদ জেলা জুড়ে চিকিৎসক সংগঠনের বিক্ষোভ। পুলিশ সূত্রে পাল্টা দাবি অভিযোগের ভিত্তিতে ১৬ জন গ্রেফতার করা হয়েছে।


তৃণমূল বিধায়ক ও জেলা সভাধিপতির সামনেই মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিককে নিগ্রহ। ঘটনায় ১৬ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এরইমধ্যে বিস্ফোরক অভিযোগ তুলেছেন, IMA’র বহরমপুরের সম্পাদক। তাঁর অভিযোগ, চাপের মুখে FIR’এর বয়ান বদল করা হয়েছে। 


মুর্শিদাবাদের CMOH’কে নিগ্রহের ঘটনার প্রতিবাদ, জেলা জুড়ে প্রতিবাদ জানালেন চিকিত্‍সক, স্বাস্থ্য আধিকারিক কর্মীরা। কোথাও মিছিল, কোথাও আবার হাসপাতাল চত্বরে বিক্ষোভ। 
এরইমধ্যে এই ঘটনায় বিস্ফোরক অভিযোগ তুলেছেন এক চিকিত্‍সক। তাঁর দাবি, বৃহস্পতিবার রাতে, CMOH-এর দায়ের করা FIR’এ নাম ছিল, হরিহরপাড়ার তৃণমূল বিধায়ক নিয়ামত শেখ ও মুর্শিদাবাদের জেলা সভাধিপতি সামসুজ্জোহা বিশ্বাসের। কিন্তু, রাতে নাকি FIR থেকে উধাও হয়ে যায় সেই তৃণমূল বিধায়ক ও জেলা সভাধিপতির নাম।


 বহরমপুরের IMA সম্পাদক রঞ্জন ভট্টাচার্যের কথায়, বোঝাই যাচ্ছে উপর মহল থেকে চাপ এসেছে। আমরা ফেরন্সিকে একটা টার্ম ইউজ করি, আপনার ছুরিতে যদি রক্ত লেগে থাকে তাহলে বোঝাই যাচ্ছে খুন টা আপনিই করেছেন। এখানে ক্যামেরা বন্দি আছে কেউ পালিয়ে যাতে পারবেন না। বিধায়ক ও তার সাথে সভাধিপতি- তাদের প্ররোচনায় সমস্ত ঘটেছে। যদি আইনানুগ ব্যবস্থা না নেওয়া হয়, চিকিৎসকদের মনোবল বলে কিছু থাকবে না। 


অভিযোগ অস্বীকার করে পুলিশ সুপার জানিয়েছেন, একটিই অভিযোগপত্র পেয়েছি। তার ভিত্তিতেই তদন্ত হচ্ছে, অভিযুক্তদের গ্রেফতার করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার, হরিহরপাড়ার তৃণমূল বিধায়ক ও জেলা সভাধিপতির সামনেই, নিগ্রহের শিকার হন, মুর্শিদাবাদের CMOH সন্দীপ সান্যাল। শার্টের কলার ধরে টানাটানি, ধাক্কাধাক্কি, সজোরে ঘুষি, বিধায়কের বিরুদ্ধে প্রায় ১-দেড়শো লোক এনে CMOH’এর ওপর হামলার অভিযোগ! ঘটনায়, রাতেই, বহরমপুর থানায়, FIR দায়ের করেন CMOH। 


ঘটনায় ১৬ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। FIR থেকে অভিযুক্তদের নাম ‘লোপাট’। আক্রমণ বিজেপির। তৃণমূল বিধায়কের সামনেই CMOH’কে নিগ্রহ। তৃণমূলে ভিন্নমত। মুর্শিদাবাদ সাংগঠনিক জেলার তৃণমূল কংগ্রেসের সভানেত্রী শাওনি সিংহ রায় জানান, এটা দুর্ভাগ্যজনক। কখনই কাম্য নয়, আমরা দলের পক্ষ থেকে কখনই মান্যতা দিতে পারি না। প্রশাসন প্রশাসনের কাজ করছে, ইতিমধ্যেই কিছু মানুষকে গ্রেপ্তারও করেছে। দলগতভাবে আমরা বিষয়টা নিয়ে আলোচনা করছি। আগামী দিনে যাতে আর না হয় সেটা দেখছি।


লালগোলার তৃণমূল বিধায়ক মহম্মদ আলির কথায়, আমাদের দলের পক্ষ থেকে কেউ নেতৃত্ব দেননি এবং আমাদের দলের বিধায়ক কিংবা সভাধিপতি সিএমওএইচকে বাচানোর চেষ্টা করেছেন এখন ঘটনাক্রমে তাঁরা প্রভাবশালি হওয়ার কারনে এটাকে বিকৃত ভাবে উপস্থাপনা করা হচ্ছে।


CMOH’কে নিগ্রহের, ধৃত ১৬ জনকে ১৪ দিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছে আদালত। ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়েছে চিকিত্সকদের সংগঠন হেলথ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশন এবং ওয়েস্টবেঙ্গল ডক্টরস ফোরাম।