রাজীব চৌধুরী, বহরমপুর: নবগ্রামের পর এবার বহরমপুরে (Beharampore) আরেক সন্তান-হারা মায়ের কান্না। ফের কাঠগড়ায় পুলিশ। মৃতের পরিবারের অভিযোগ, পাড়ার গন্ডগোলের ঘটনায় কলেজ ছাত্রকে আটক করে পুলিশের গাড়িতে তুলে মারধর, বাঁচার জন্য ভরা বর্ষার ভাগীরথী নদীতে মরণঝাঁপ ২১ বছরের অতনু ঘোষ। বহরমপুরে কলেজ ছাত্রের মৃত্যুর ঘটনায় পুলিশের বিরুদ্ধে এবার চাঞ্চল্যকর অভিযোগ করলেন তাঁরই বন্ধু।


কী অভিযোগ করলেন প্রত্যক্ষদর্শী?


প্রত্যক্ষদর্শী তরুণের দাবি, দিনকয়েক আগে চায়ের দোকানে গন্ডগোল হয়। ওই ঘটনায় বহরমপুর কলেজের পড়ুয়া অতনু-সহ কয়েকজনকে পুলিশ খুঁজছে বলে জানা যায়। অভিযোগ, শনিবার রাস্তা থেকে আটক করে গাড়িতে তুলে নিয়ে যাওয়ার সময়, ওই কলেজ পড়ুয়াকে মারধর করে পুলিশ। পুলিশের গাড়ির চালকও মারধর করেন বলে অভিযোগ। প্রত্যক্ষদর্শীর দাবি, পুুলিশের হাত থেকে বাঁচতে গাড়ি থেকে নেমে ভাগীরথীতে ঝাঁপ দেন ওই পড়ুয়া। ভরা বর্ষায় নদীর মাঝ বরাবর গিয়ে তলিয়ে যান তিনি। ওই তরুণ বলেন, "শনিবারের ২-৩ দিন আগে আমরা চায়ের দোকানে বসেছিলাম। ছোটখাটো বন্ধুদের মধ্যে ঝামেলা হয়েছে। আমরা বেরিয়ে যাওয়ার পর ওখানে পুলিশ ঢুকেছিল। শুনলাম নাকি, ওখানকার ছেলেপিলেদের মুখে যে ওঁরা খুঁজে বেরাচ্ছে আমাদেরকে।


পরিবারের অভিযোগ, শনিবার সকাল থেকে নিখোঁজ ছিল অতনু। প্রথমে সৈদাবাদ ফাঁড়িতে সাহায্যের জন্য যায় পরিবার। সেখানে সাহায্য না পেয়ে থানায় নিখোঁজ ডায়েরি করতে যান অতনুর বাবা। সন্ধে থেকে রাত ১২ টা পর্যন্ত বসিয়ে রাখা হয় থানাতেই। ৩-৪ বার নিখোঁজ ডায়েরির বয়ান বদল করায় পুলিশ মিসিং ডায়েরির বদলে নদীতে ঝাঁপ দেওয়ার কথা লেখার জন্য 'চাপ' দেওয়া হয়। মৃত যুবকের বাবার অভিযোগ, "প্রথমে আটক করে গাড়ির ভিতরে মারধর করেছিল। অলক বলে একজন ড্রাইভার সে শুদ্ধু মারধর করেছে। সেইদিন থেকে তাঁকে পাওয়া যাচ্ছে না। দেখা হোক সিসিটিভি যদি এলাকায় থাকে। সিসিটিভি ফুটেজ দেখা হোক। পুলিশ প্রমাণ করাক যে আমি আটক করিনি।''

৩০ ঘণ্টা পর, রবিবার ভাগীরথী থেকে দেহ উদ্ধার করেন অতনুর পরিজনরাই। ঘটনায় সিবিআই তদন্তের দাবি করা হয়েছে পরিবারের তরফে। অতনুর বাবা নির্মল ঘোষ বলেন, "আমি তো সিবিআই তদন্ত চেয়েছি। পুলিশি তদন্তে কেন আশ্বস্ত হব? পুলিশের বিরুদ্ধেই তো অভিযোগ।'' ছেলেকে খুঁজে না পেয়ে শেষমেশ নিজেরাই ভাগীরথীতে নৌকো নিয়ে খুঁজতে যায় পরিবার। এরপর রাধারঘাট ব্রিজের কাছে মেলে অতনুর নিথর দেহ। প্রত্যক্ষদর্শীদের দাবি, ঝাঁপ দেওয়ার পর সাঁতরে অনেকটাই পেরিয়ে এসেছিল অতনু। কিন্তু কিনারায় পৌঁছনোর আগেই মাঝ ভাগীরথীতে ডুবে যায় সে। ঘটনায়, বহরমপুরের নিয়াল্লিশপাড়া ঘাটে দফায় দফায় বিক্ষোভ দেখান স্থানীয়রা।


আপনার পছন্দের খবর আর আপডেট এখন পাবেন আপনার পছন্দের চ্যাটিং প্ল্যাটফর্ম টেলিগ্রামেও। যুক্ত হোন


https://t.me/abpanandaofficial


আরও পড়ুন:  Behala Accident: বন্ধুর জন্য মন খারাপ, কাঁদছেন শিক্ষকরাও, বড়িশা স্কুলে সৌরনীলের স্মরণসভা