রাজীব চৌধুরী ও আশিস বাগচী, মুর্শিদাবাদ: সম্প্রতি মুর্শিদাবাদের (Murshidabad) সাগরদিঘিতেই জেতা আসন বাম-কংগ্রেসের কাছে হেরেছে তৃণমূল। আর কদিন পরেই পঞ্চায়েত ভোট। সেই আবহেই মুর্শিদাবাদে প্রকাশ্যে এল তৃণমূলের অন্তর্দ্বন্দ্ব। বিষয়টা এতদূর গড়ায় যে দলের সাংবাদিক বৈঠক ছেড়েই বেরিয়ে গেলেন জেলা তৃণমূলের (TMC) চেয়ারম্যান।


বহরমপুর-মুর্শিদাবাদ সাংগঠনিক জেলার কমিটি ঘোষণার কথা বলে বুধবার সকালে সাংবাদিক বৈঠক ডেকেছিল তৃণমূল। তাতে হাজির ছিলেন জেলা তৃণমূলের সভানেত্রী শাওনি সিংহ রায়, জেলার চেয়ারম্যান ও মুর্শিদাবাদের সাংসদ আবু তাহের খান ও জেলার একাধিক বিধায়ক। তারপরেই মুর্শিদাবাদে নতুন জেলা কমিটি ঘোষণা করতে গিয়ে প্রকাশ্যে চলে এল জেলা সভানেত্রী শাওনি সিংহ রায় ও চেয়ারম্যান আবু তাহেরের বিরোধ। বহরমপুরে দলের সাংবাদিক বৈঠক ছেড়ে বেরিয়ে গেলেন আবু তাহের খান। তাঁর অভিযোগ, তাঁর সঙ্গে কোনওরকম আলোচনা না করেই তালিকা তৈরি করা হয়েছে। জেলা সভাপতির পাল্টা জবাব, রাজ্য কমিটির অনুমতি নিয়েই তালিকা তৈরি হয়েছে।


পরে তৃণমূল সাংসদ ও মুর্শিদাবাদ সাংগঠনিক জেলার চেয়ারম্যান আবু তাহের খান বলেন, 'আমি মনে করি, জেলার চেয়ারম্যান হিসেবে কে কোথায় দায়িত্ব পাচ্ছেন সেটা আমার জানার অধিকার আছে। শুধু তালিকা প্রকাশের জন্য আমি আসিনি। আজকেই আমার হাতে দেওয়া হয়েছে তালিকা। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে কথা বলেছি।' তৃণমূলের মুর্শিদাবাদ সাংগঠনিক জেলার সভানেত্রী শাওনি সিংহ রায় বলেছেন, 'কলকাতা থেকে পাঠিয়েছিল তালিকা। ওনার ৩৫ জনের নামও এই তালিকায় রয়েছে। উঠে গেলেন কেন? সেটা উনি বলতে পারবেন।' 


২০২১-এর ভোটের আগে মুর্শিদাবাদে জেলা তৃণমূল সভাপতি ছিলেন আবু তাহের খান। ওই বিধানসভা ভোটে জেলার ২২টি আসনের মধ্যে ২০টিতে জয়ী হয় তৃণমূল। পরে তাঁকে সরিয়ে মুর্শিদাবাদ সাংগঠনিক জেলার সভাপতি করা হয় শাওনি সিংহ রায়কে। চেয়ারম্যান পদে বসানো হয় আবু তাহেরকে। 


জঙ্গিপুরেও প্রকাশ্যে বিরোধ:
পঞ্চায়েত ভোটের আগে মুর্শিদাবাদে আরও একবার বাইরে এল তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব। সাংসদের বিরুদ্ধেই বিরোধীদের সঙ্গে আঁতাঁতের অভিযোগ বিধায়কের। জঙ্গিপুর সাংগঠনিক জেলার কমিটি নিয়ে ক্ষোভ এবং তার জেরে সাংসদ-বিধায়ক দ্বন্দ্বের ছবি সামনে এল। সুতির বিধায়ক ইমানি বিশ্বাসের নিশানায় জঙ্গিপুর সাংগঠনিক জেলার সভাপতি তথা জঙ্গিপুরের তৃণমূল সাংসদ খলিলুর রহমান। সাংসদের সঙ্গে বিরোধের জেরে মাঝপথে বৈঠকে ছেড়ে  বেরোলেন সুতির বিধায়ক। তাঁর দাবি, 'সিপিএম ও কংগ্রেসের হয়ে কাজ করছেন খলিলুর। যাঁরা দলের বিরোধিতা করেছিলেন, তাঁদেরই কমিটিতে রাখা হয়েছে।' ইমানি বিশ্বাসের অভিযোগ অস্বীকার খলিলুর রহমানের। মিথ্যা অভিযোগ, কালিমালিপ্ত করার চেষ্টা, পাল্টা আক্রমণ খলিলুর রহমানের।


আরও পড়ুন: 'লোকসভায় এখানে দেড় লক্ষ বেশি ভোট পাব', কাকে 'সাফ' করার চ্যালেঞ্জ শুভেন্দুর ?